প্রথমেই জানতে হবে ইউরিক এসিড কি এবং কেন এর মাত্রা বেড়ে যায়? আমাদের দেহে পটাশিয়াম, সোডিয়াম, বাইকার্বনেট বা এলকালাইন অর্থাৎ ইলেকট্রোলাইটস এর ব্যালেন্স রক্ষায় ইউরিক এসিড এর ভুমিকা আছে। সবার রক্তে এটি খুব অল্প পরিমানে থাকে যা মূলত দেহের ডেড সেল এবং খাদ্যের উপাদান পিউরিন থেকে উৎপন্ন হয়।
আমরা যা খাই তার যতটুকু পুষ্টি উপাদান দেহের প্রয়োজন, শোষন ও বিপাক এর মাধ্যমে তার চাহিদা পূরণের পর বাকিটা দেহ থেকে বর্জ্য হিসাবে মল,মূত্র, ঘাম, শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে শরীর থেকে বের হয়ে যায়। ইউরিক এসিড ও এমন একটি উপাদান যা দেহের নির্দিষ্ট পরিমানের বেশি হলে দেহ থেকে অপসারণের মাধ্যমে আমাদের দেহে সামঞ্জস্যতা থাকে।
স্বাভাবিকভাবে ইউরিক এসিড, পিউরিন সমৃদ্ধ গৃহীত খাদ্য থেকে আমাদের দেহের যকৃতে উৎপন্ন হয়ে রক্তে মিশে যায় এবং রক্তের মাধ্যমে বাহিত হয়ে কিডনিতে পৌছায়। কিডনি একে দেহ থেকে বের করে দেয়।
মাত্রাতিরিক্ত ইউরিক এসিড আমাদের দেহে কি কি ক্ষতি করে?
ইউরিক এসিড বেড়ে গেলে দেহের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন অংগ বিশেষ করে কিডনির উপরে দীর্ঘদিন জমলে রেনাল স্টোন হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। ফলে কিডনি ঠিক মত কাজ করে না এবং মুত্রের মাধ্যমে ইউরিক এসিড ও অন্যান্য বর্জ্য শরীর থেকে বের হতে পারে না। কিডনির কার্যক্ষমতা নষ্ট হয় এবং কিডনি ড্যামেজ ও হয়।
বর্তমানে বহুমানুষ যারা ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের মনে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন যে এটাকে কিভাবে কমানো যায়। দেহের অন্তরে ভাঙন সৃষ্টি হওয়ার কারণে ইউরিক অ্যাসিড তৈরি হয় । তাই শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ কমানোর জন্য রোগীক তার পিউরিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া কমাতে হবে।
বিভিন্ন ধরনের খাদ্য, পানীয় যার মধ্যে পিউরিন পাওয়া যায় এবং অনেক সময় শরীরেও পিউরিন উৎপাদিত হতে পারে ।
যদি ইউরিক এসিড স্বাভাবিকভাবে নির্মূল হয় না যার ফলে বাত দেখা যায়, এবং যেটি রক্ত প্রবাহের সাথে মিশে জয়েন্ট পেইন এবং ব্যথা সৃষ্টি করে।
যদি কোন ব্যক্তির বেশি পরিমাণে ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা থাকে তাহলে তাকে সঠিক খাদ্য তালিকা অনুসরন করতে হবে।
ইউরিক অ্যাসিডে কি কি খাবার এবং পানীয় গ্রহণ করা যাবে তার একটি তালিকা নিম্নে দেওয়া হল –
জল
জল শরীর থেকে অতিরিক্ত ইউরিক এসিড সহ টক্সিন বের করে দেয় । তাই একজন ব্যক্তির প্রতিদিন অন্তত ১০ থেকে ১২ গ্লাস জল পান করতে হবে ।
বেরি
বেরি বিশেষ করে স্ট্রবেরি, এবং ব্লুবেরির মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা রয়েছে যা শরীরকে জয়েন্টের ব্যথা থেকে আরাম দেয়।
আপেল
আপেল হল ম্যালিক অ্যাসিডের সমৃদ্ধ যা ইউরিক এসিড নিষ্ক্রাষণে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন একটি করে আপেল খাওয়ার চেষ্টা করুন।
বিনসের রস
বাতের ব্যথা থেকে আরাম পাওয়ার জন্য আরেকটি কার্যকরী ঘরোয়া উপায় হল বিন্সের রস।
পিন্টো বিন
ফোলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ এই খাদ্যটি প্রাকৃতিকভাবে ইউরিক এসিড কমাতে সাহায্য করে। ফলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ পিন্টো বিন্স, সূর্যমুখী বীজ এবং ডাল আপনার খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা উচিৎ যা আপনার ইউরিক অ্যাসিড কমাতে সাহায্য করবে।
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার
শরীরে ইউরিক অ্যাসিড কমানোর জন্য প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার ও সাপ্লিমেন্ট অন্তর্ভুক্ত করুন । এটি ইউরিক অ্যাসিডকে সংহত করে এবং প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বের করে দেয় । ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল যেমন আম্লকি, পেয়ারা, কিউই, মিষ্টি লেবু, কমলা লেবু, ক্যাপসিকাম, লেবু, টমেটো এবং সবুজ শাকসবজি ইত্যাদি খাওয়া উচিৎ।
উচ্চমাত্রায় ফাইবার জাতীয় খাবার
মেরিল্যান্ড মেডিকেল সেন্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুযায়ী, খাদ্যতালিকায় ফাইবার সমৃদ্ধ খাদ্য শরীরেইউরিক অ্যাসিডের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং রক্তে এর পরিমাণ কমিয়ে দেয়।
খেতে পারেন কলাও ইউরিক অ্যাসিড কমাতে সাহায্য করে।
গ্রিন টি
নিয়মিত গ্রিন টি অর্থাৎ সবুজ চা খান যেটি আপনার ইউরিক এসিড এবং হাইপারইউরেক্সিমিয়াকে (উচ্চ ইউরিক এসিড মাত্রা) নিয়ন্ত্রণ করবে, এবং আপনাকে বাতের সমস্যা থেকে রেহাই দেবে।
সবজি
টমেটো, ব্রোকলি এবং শসা এমন কিছু খাবার যা আপনার ইউরিক অ্যাসিড কমানোর খাদ্য তালিকায় যুক্ত করা দরকার।যে সব সবজি ইউরিক অ্যাসিড কমাতে পারে, তাদের মধ্যে টমেটো অন্যতম । টাটকা টমেটোর মধ্যে প্রাকৃতিক ক্ষারীয় উপাদান রয়েছে এবং এটি রক্তের প্রবাহে মিশে এটি রক্তের মধ্যে অ্যালমালাইন বৃদ্ধি করে ।
এটা অত্যন্ত জরুরী যে আপনি পিউরিন সমৃদ্ধ খাদ্য এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন এতে আপনার শরীরে ইউরিক এসিডের স্তর বাড়বে এবং বাতের সমস্যা শুরু হতে পারে। ফ্রুক্টোজ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার বিষয়টিও সীমিত করা উচিত ।
আপনার যদি ইউরিকঅ্যাসিডের সমস্যা অত্যাধিক পরিমাণে থাকে তাহলে নিম্ন লিখিত খাবার গুলি ত্যাগ করুন –
অ্যালকোহল
অ্যালকোহল সেবন অবশ্যই কমিয়ে দিতে হবে যেহেতু তাতে পিউরিনের পরিমাণ খুব বেশি রয়েছে যা আপনার শরীরে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
চিনিযুক্ত খাবার
ফলের রস এবং চিনিযুক্ত সোডাও শরীরে বাত উৎপন্ন হওয়ার অন্যতম কারণ। মধু এবং চিনির সিরাপের মধ্যে ফ্রুক্টোজ রয়েছে যা রক্তে ইউরিকঅ্যাসিডের মাত্রাকে বাড়িয়ে দেয়।
মাংস, সামুদ্রিক খাবার
এসব খাবার গুলির মধ্যে প্রচুর মধ্যে প্রোটিন রয়েছে যা শরীরে ইউরিক এসিডের মাত্রাকে বাড়াতে সাহায্য করে।
ডাল
ডালে পিউরিনের পরিমাণ বেশি থাকে তাই এটিকে কম খাওয়া উচিৎ।
কার্বোহাইড্রেট
কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার যেমন পাউরুটি, কেক এবং কুকিজ আপনার ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়াতে পারে, সুতরাং এগুলি এড়িয়ে চলা উচিৎ।
ইউরিক এসিড বেশি হলে কি কি খাওয়া যাবে? সাধারণত প্রানীজ খাবারের মধ্যে সব ধরনের বড় ও ছোট মাছ, মুরগীর মাংস, ডিম, লো ফ্যাট দুধ ও দুধ জাতীয় খাবার এবং শস্যের মধ্যে জটিল কার্বোহাইড্রেট অর্থাৎ লালচাল, লাল গমের আটা, ওটস, সাগু, ভুট্টা, চিড়া ইত্যাদি শাক-সবজির মধ্যে লাউ, চালকুমড়া, মিষ্টি কুমড়া, আলু, মিষ্টি আলু, পটল, ঝিংগা, চিচিংগা, করলা, কাকরোল, ঢেড়শ।
Tags – Health Tips Health Care Should Be Done If Uric Acid
আজকাল কতো কিছু প্রোডাক্ট ইউজ করেও চুল পড়া বন্ধ করা যাচ্ছে না....চুলের সঠিক যত্ন ও…
Healthy Skin Tips For Face: সারা বছর ফেসিয়াল না করলেও পুজোর আগে সকলে আমরা ফেসিয়াল…
আজকাল মেকাপে মেতেছে সারা দুনিয়ার মানুষ,, বাচ্চা থেকে বয়স্ক সকলের মধ্যেই একটি ক্রেজ লক্ষ্য করা…
Bengali Durga Puja saree look: দেখতে দেখতে বছর গড়িয়ে চলে এলো দুর্গাপুজো….. সেপ্টেম্বরের মাঝ থেকেই…
মেয়েদের কাছে চুল হলো অমুল্য রত্ন ,, কিনতু আজকাল দূষণের কারনে, শারীরিক প্রবলেমের জন্য সকলের…
এই ভ্যাপসা গরমে ত্বকের উজ্জ্বলতা হারিয়ে ফিকে পড়ে যায়…. কিনতু সামনেই তো পুজো এখন থেকেই…
Leave a Comment