আমাদের শরীরে কোষের মধ্যে ডিএনএ আছে। ডিএনএ-র মধ্যে আবার পিউরিন নিউক্লিওটাইড থাকে। আবার যে খাদ্যদ্রব্য আমরা খাই, তার থেকেও পিউরিন পাওয়া যায়। এই কোষের মধ্যে থাকা পিউরিনের ভাঙনের ফলে শেষ উৎপাদন বা এন্ড প্রোডাক্ট হিসেবে ইউরিক অ্যাসিড তৈরি হয়।
ইউরিক অ্যাসিড থেকে শরীরে কী কী সমস্যা তৈরি হয়
আমাদের প্রত্যেকের শরীরেই ইউরিক অ্যাসিড থাকে, তবে সেটা একটা স্বাভাবিক পরিমাণে। অস্বাভাবিক ব্যাপার তখন হয়, যদি কিডনি থেকে অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড বেরতে না পারে অথবা দেহে বেশি পরিমাণে ইউরিক অ্যাসিড তৈরি শুরু হয়।
ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারন
শৈশব ও কৈশোরে রক্তে ইউরিক অ্যাসিড বেশি তৈরি হলে, কিডনি থেকে সেটা সম্পূর্ণ নিষ্কাশিত হয় না। আবার থায়াজাইডের মতো কিছু কিছু ওষুধ প্রয়োগের ফলেও কিডনি থেকে ইউরিক অ্যাসিড বের হওয়াটা আটকে যায়।
খাদ্য থেকেও কি বাড়তে পারে শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা
সচরাচর কিছু সবজি, ডাল খেলে ইউরিক অ্যাসিড বাড়ে এমন বলা হলেও জেনে রাখা দরকার বেশ কিছু প্রাণিজ খাদ্য থেকে কিন্তু অনেক বেশি মাত্রায় ইউরিক অ্যাসিড শরীরে জমা হতে পারে।
অন্য কারণেও কি হতে পারে ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধি
ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যাওয়াটাকে মেটাবলিক সিনড্রোমের অংশ বলা হয়। তাই উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চমাত্রায় কোলেস্টেরল-ট্রাইগ্লিসারাইড এবং ডায়াবেটিস থাকলে ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি।
আবার জীবন শৈলী সংক্রান্ত সমস্যা থেকে ইউরিক অ্যাসিডের আশঙ্কা থাকে। সে জন্য লিপিড প্রোফাইল হাই থাকলে ইউরিক অ্যাসিড টেস্ট করে বহু ক্ষেত্রে ইউরিক অ্যাসিডও বেশি পাওয়া যায়।
ইউরিক অ্যাসিড বেড়েছে কিনা জানতে কী কী পরীক্ষা করা হয়
রক্তে ইউরিক অ্যাসিড কতটা রয়েছে জানার জন্য রক্ত পরীক্ষা করা হয়। এর জন্য ১২ ঘণ্টা খালি পেটে পরীক্ষা হয়। আবার স্টোন থাকলেও ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ রক্তে সেই পরিমাণে বেশি না থাকলে, ২৪ ঘণ্টা ইউরিনে ইউরিক অ্যাসিড কতটা বেরচ্ছে সেটা পরীক্ষা করা হয়।
আবার প্রস্রাব আটকে যাওয়া, প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত বের হওয়া বা জ্বালা অনুভূত হওয়া জাতীয় উপসর্গ হলে ইউটিআই বা প্রস্রাবে সংক্রমণ হয়েছে কিনা, দেখা হয়। তাছাড়া রোগীর আগে কিডনি স্টোন ছিল কিনা জেনে নেওয়া হয় এবং দেখা হয় রোগীর ব্লাডারে বা ইউরেটারে স্টোন হয়েছে কিনা। সেই মতো এক্স রে, আলট্রাসোনোগ্রাম বা সিটি স্ক্যান করে সেগুলো দেখে নেওয়া হয়।
ইউরিক অ্যাসিড থেকে কী কী সমস্যা হতে পারে
১. ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধির ফলে অ্যাকিউট ইউরিক অ্যাসিড আরথারাইটিস হতে পারে। যাকে গাউট বলা হয়। এতে বুড়ো আঙুলের গোড়া লাল হয়ে ফুলে যায়, প্রচণ্ড যন্ত্রণা হয়।
২. এছাড়াও ইউরেট নেফ্রোপ্যাথি হতে পারে। এতে ইউরিক অ্যাসিড ক্রিস্টালের মতো হয়ে কিডনিতে জমে গিয়ে ইউরিয়া-ক্রিয়েটিনিন বাড়িয়ে দেয়। এর আবার দুটি ধরন। ক্রনিক ইউরেট নেফ্রোপ্যাথি এবং অ্যাকিউট ইউরেট নেফ্রোপ্যাথি।
৩. অ্যাকিউট ইউরেট নেফ্রোপ্যাথি সাধারণত ব্লাড ক্যানসার রোগীদের চিকিৎসার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা যেতে পারে।
৪. ইউরিক অ্যাসিড থেকে এছাড়া কিডনিতে স্টোনও হতে পারে। এটা ইউরেটার বা ব্লাডারে নেমে এসে প্রস্রাবের গতিরোধ, রক্তক্ষরণ করতে পারে।
ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে উপসর্গ থাকবেই, এমনটা কি সবক্ষেত্রে হয়
না, আশ্চর্যজনক হলেও সব সময়ে যে উপসর্গ থাকবেই, এমনটা নয়। নিয়মিত চেক-আপে ইউরিক অ্যাসিড বেশি পাওয়া গেলেও এমনও হয় রোগীর জয়েন্টে ব্যথা, স্টোন নেই— অর্থাৎ কোনও উপসর্গ নেই। তখন একে অ্যাসিম্পটোম্যাটিক হাইপার ইউরিসিমিয়া বলা হয়।
যে কোনও মটর বা ডালের মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণ পিউরিন। যা আমাদের শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়
বর্তমানে ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশনের মত ইউরিক অ্যাসিডও জটিল সমস্যায় পরিণত হয়েছে। রোজকার জীবনযাত্রা, খারাপ খাদ্যাভ্যাস, শরীরের নানা সমস্যা থেকে আসে এই ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা। খাবার হজমের সময় শরীরে ইউরিক অ্যাসিড তৈরি হয়। যা মূত্রের স্বাভাবিক উপাদান। প্রোটিন জাতীয় খাবার বেশি খেলে সেখান থেকে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
আমরা যে পরিমাণ ডাল বা বা টমেটো খাই তাতে ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যায় না। যা করতে হবে, তা হল ২ কেজির বেশি মাছ বা মাংস খাবেন না। রেড মিট, অ্যালকোহল একেবারেই বাদ দিতে হবে তালিকা থেকে। এছাড়াও আরও যে সব খাবার বাদ রাখবেন তালিকা থেকে-
মটরশুঁটি- মটরশুঁটি ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। যে কারণে সিম, মটরশুঁটি এসব অবশ্যই বাদ দিন রোজকারের তালিকা থেকে। এতে শুধুই যে শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়ে তাই নয়, সেখান থেকে আসে প্রদাহ জনিত সমস্যাও।
মটর- যে কোনও মটর বা ডালের মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণ পিউরিন। যা আমাদের শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। যে কোনও শুকনো ডালের মধ্যে থাকে পিউরিন। এবার ডাল বেশি পরিমাণে খেলে সেখান থেকে একাধিক সমস্যা।
বেগুন- বেগুনের মধ্যেও পিউরিনের পরিমাণ বেশি। এতে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যায়। এতে শরীরে প্রদাহ দেখা দেয়। পাশাপাশি ফুসকুড়ি বা চুলকানির মত সমস্যাও হতে পারে। তাই যাঁদের কোনও রকম অ্যালার্জি রয়েছে তাঁদের প্রথম থেকেই সতর্ক থাকতে হবে।
Tags – Health Tips Health Care Uric Acid In The Blood
আজকাল কতো কিছু প্রোডাক্ট ইউজ করেও চুল পড়া বন্ধ করা যাচ্ছে না....চুলের সঠিক যত্ন ও…
Healthy Skin Tips For Face: সারা বছর ফেসিয়াল না করলেও পুজোর আগে সকলে আমরা ফেসিয়াল…
আজকাল মেকাপে মেতেছে সারা দুনিয়ার মানুষ,, বাচ্চা থেকে বয়স্ক সকলের মধ্যেই একটি ক্রেজ লক্ষ্য করা…
Bengali Durga Puja saree look: দেখতে দেখতে বছর গড়িয়ে চলে এলো দুর্গাপুজো….. সেপ্টেম্বরের মাঝ থেকেই…
মেয়েদের কাছে চুল হলো অমুল্য রত্ন ,, কিনতু আজকাল দূষণের কারনে, শারীরিক প্রবলেমের জন্য সকলের…
এই ভ্যাপসা গরমে ত্বকের উজ্জ্বলতা হারিয়ে ফিকে পড়ে যায়…. কিনতু সামনেই তো পুজো এখন থেকেই…
Leave a Comment