প্রজনন ক্ষমতা হল সন্তান উৎপাদনের প্রাকৃতিক ক্ষমতা। একটি পরিমাপ হিসাবে, প্রজনন হার হল প্রতি সঙ্গমের জোড়, ব্যক্তি বা জনসংখ্যা অনুসারে জন্ম নেওয়া মানুষের সংখ্যা। মানুষের প্রজনন ক্ষমতা অন্যান্য জীবের প্রজনন ক্ষমতার চেয়ে ভিন্ন হয়ে থাকে। মানব প্রজনন পুষ্টি, যৌন আচরণ, সঙ্গতি, সংস্কৃতি, প্রবৃত্তি, এন্ডোক্রিনোলজি, জীবনযাপন এবং আবেগের কারণগুলির উপর নির্ভর করে।
প্রজনন অক্ষমতা কিংবা বন্ধ্যাত্ব একটি মাল্টি ফ্যাক্টোরিয়াল বিষয়। খাদ্যাভ্যাস তার মধ্যে অন্যতম। বিষয়টা এমন নয় যে, কোনো নির্দিষ্ট খাবার খেলেই গর্ভধারণ নিশ্চিত ও নির্বিঘ্ন হবে। কিংবা কোনো বিশেষ খাবার খেলে আপনি গর্ভধারণে অক্ষম হয়ে পড়বেন।
অস্বাস্থ্যকর খাবার, বিভিন্ন ধরনের জাংক ফুড, ফাস্ট ফুড থেকে স্থূলতা দেখা দেয়। এই অতিরিক্ত ওজন প্রজনন স্বাস্থ্যকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলে। আবার প্রজনন ব্যবস্থায় হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখা খুবই জরুরী। কিছু বিশেষ ভিটামিন ও মিনারেল এই কাজটি সুন্দরভাবে সম্পন্ন করে।
রোগ, মাদক সেবন, জীবনযাত্রার বিভিন্ন বদভ্যাস, কিছু রাসায়নিক উপাদানের ক্ষতিকর প্রভাব ইত্যাদি নানান কারণে এমনটা ঘটে।জীবনযাত্রার যে ভুল অভ্যাসগুলোর কারণে পরিণত বয়সে বন্ধ্যাত্ব দেখা দিতে পারে, তরুণ বয়সে সেগুলো নিয়ে মানুষের সচেতন থাকে না।
এমন কিছু অভ্যাস যে কারণে বন্ধ্যাত্ব কিংবা গর্ভধারণে ব্যর্থতা দেখা দিতে পারে –
ধূমপান: ধূমপানের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে ধূমপায়ী-অধূমপায়ী সবাই অবগত। অন্যান্য ক্ষতির পাশাপাশি নারী-পুরুষ দুইয়ের প্রজনন ক্ষমতাকে মারাত্মক হারে ক্ষতিগ্রস্ত করে এই অভ্যাস।
তবে বিশেষজ্ঞদের দাবি, কালেভদ্রে ধূমপান করা, এমনকি ধূমপায়ীর আশপাশে থাকার কারণে পরোক্ষ ধূমপানও প্রজনন ক্ষমতার ক্ষতি করে। ধূমপানের কারণে নারীদের রজঃবন্ধ হয়ে যায় সময়ের আগেই। আর পুরুষের বীর্জের মান কমে যায়।
গৃহস্থালীর রাসায়নিক উপাদানের ব্যবহার: বাতাসের বিভিন্ন দূষিত উপাদান, কীটনাষক, রাসায়নিক পরিষ্কারক ইত্যাদিতে থাকা ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান প্রজনন ক্ষমতা কমাতে উল্লেখযোগ্য ভুমিকা রাখে। রাসায়নিক উপাদানের প্রভাবে গর্ভধারণের ক্ষমতা নষ্ট হওয়া সম্ভবনা হতে পারে ২৯ শতাংশ পর্যন্ত।
মানসিক চাপ: মানসিক চাপ নিয়ে নানান কথা বলা হলেও খুব কম মানুষই তা সামাল দিতে পারেন কিংবা চেষ্টা করেন। আধুনিক জীবনযাত্রার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ যেন এই ‘মেন্টাল স্ট্রেস’। গর্ভধারণের পথেও এটি একটি উল্লেখযোগ্য বাধা।
যৌনসঙ্গম সংক্রান্ত সমস্যা: অনিরাপদ যৌনসঙ্গমের কারণে ‘সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিজিজ’য়ের আশঙ্কা বাড়ে। এই সংক্রামক রোগগুলো নিজের জীবনের জন্য যেমন ক্ষতিকর তেমনি পৃথিবীতে নতুন জীবন নিয়ে আসার জন্যও ক্ষতিকর।
অতিরিক্ত কফি: চা কফি আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। তবে দিনে তিন থেকে চার কাপের বেশি কফি পানের অভ্যাস থাকলে তা এখনই কমাতে হবে।
কারণ অতিরিক্ত ‘ক্যাফেইন’ শরীরে প্রবেশ করলে তা শুক্রাণু উৎপাদনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। গর্ভধারণের চেষ্টা করার সময় প্রোটিন, প্রয়োজনীয় চর্বি, খনিজ এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার অবশ্যই থাকা উচিত।
পৃথিবীতে এমন অসংখ্য দম্পতি রয়েছে যারা প্রজনন অক্ষমতার জন্য নিঃসন্তান জীবন যাপন করেন। পুরুষ ও নারীর প্রজনন অক্ষমতা অনেকগুলি বিষয়ের উপর নির্ভর করে। খাদ্যাভ্যাস ও খাদ্যে উপস্থিত গুণাগুণ তার মধ্যে একটি। আসুন প্রজননে সহায়ক খাদ্যগুণ রয়েছে এমন কিছু খাবারের কথা জেনে নেই –
আয়রন বা লৌহ সমৃদ্ধ খাবার
হিম (Heme) নামক লৌহঘটিত যৌগ থাকে এমন খাবার মহিলাদের ডিম্বাণু গঠনে সাহায্য করে। মুরগীর মাংস, রেড মিট অর্থাৎ গরু কিংবা খাসীর মাংসে এই উপাদান অধিক পরিমাণে পাওয়া যায়।
সবুজ শাকসবজি
পালং শাক, বাঁধাকপি, ফুলকপি, ব্রকলি ইত্যাদি সবুজ শাক সব্জিতে বিভিন্ন প্রজনন উপযোগী ভিটামিন ও মিনারেল থাকে। তাদের মধ্যে ভিটামিন বি৬ (B6) অন্যতম যা শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
সূর্যমুখী বীজ
সূর্যমুখী বীজে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই (Vitamin E)। পুরুষদের প্রজনন ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ভিটামিন ই খুবই জরুরি।
বাতাবি লেবু এবং কমলার রস
তাজা ফলের রসে নানা ধরনের পুষ্টিগুণ থাকে। তা তো আমরা সবাই জানি। এতে প্রচুর পরিমাণে পলি অ্যামাইন প্রুট্রেসিন থাকে যা সিমেনের গুণগত মান বজায় রাখতে সাহায্য করে।
এসব ফলের রসে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। ভিটামিন সি মহিলাদের শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখে।
প্রতিদিন অথবা দুইদিন পর পর খাদ্যতালিকায় বাতাবিলেবু অথবা কমলা অথবা অন্য যেকোনো লেবু জাতীয় সাইট্রাস ফল রাখার চেষ্টা করুন। ফলের রস খেতে পারেন, স্মুথি বানিয়ে খেতে পারেন, চাইলে সালাদে ব্যবহার করতে পারেন। কিংবা আস্ত ফলটাই খোসা ছাড়িয়ে খেয়ে নিতে পারেন।
টমেটো, টমেটো সস কিংবা টমেটো স্যুপ
প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এমন একটি উপাদানের নাম লাইকোপেন যা এক ধরনের এন্টি অক্সিডেন্ট। রান্না করা টমেটোতে এটি প্রচুর পরিমাণে থাকে।
লাইকোপেন মূলত পুরুষের প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। পুরুষের বন্ধ্যাত্ব বা প্রজনন অক্ষমতার সম্ভাব্য চিকিৎসার মধ্যে লাইকোপেন সাপ্লিমেন্টেশন অন্যতম।
ডাল এবং মটরশুঁটি
ডাল এবং মটরশুঁটিতে প্রজননে সহায়ক কিছু পুষ্টিগুণ রয়েছে। ডালে উচ্চমাত্রায় পলি অ্যামাইন স্পার্মিডিন থাকে যা শুক্রাণু দ্বারা ডিম্বাণু নিষিক্তকরণে সহায়তা করে। ডাল এবং মটরশুঁটিতে ফলিক এসিড থাকে।
Tags – Reduced For A Number Of Reasons Life Style Health Tips
Durga Puja 2024 Date Time: হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুসারে দুর্গাপূজা আশ্বিন মাসে পালন করা হয়। কখনও…
আজকাল কতো কিছু প্রোডাক্ট ইউজ করেও চুল পড়া বন্ধ করা যাচ্ছে না....চুলের সঠিক যত্ন ও…
Healthy Skin Tips For Face: সারা বছর ফেসিয়াল না করলেও পুজোর আগে সকলে আমরা ফেসিয়াল…
আজকাল মেকাপে মেতেছে সারা দুনিয়ার মানুষ,, বাচ্চা থেকে বয়স্ক সকলের মধ্যেই একটি ক্রেজ লক্ষ্য করা…
Bengali Durga Puja saree look: দেখতে দেখতে বছর গড়িয়ে চলে এলো দুর্গাপুজো….. সেপ্টেম্বরের মাঝ থেকেই…
মেয়েদের কাছে চুল হলো অমুল্য রত্ন ,, কিনতু আজকাল দূষণের কারনে, শারীরিক প্রবলেমের জন্য সকলের…
Leave a Comment