কথায় আছে, পাকস্থলী ভালো তো শরীর ভালো। সুস্থ থাকতে হলে পাকস্থলী ভালো রাখা ভীষণ জরুরি। পাকস্থলী যদি সুস্থ না থাকে তবেই দেখা দেয় নানাবিধ পেটের সমস্যা। কোষ্ঠ্যকাঠন্যের সমস্যা, গ্যাস দেখা দেওয়া, বদহজমের সমস্যাগুলোই বেশি দেখা দেয়। আপনি যদি পাকস্থলী কে সুস্থ না রাখেন তাহলে দেখা দিবে পাকস্থলীর ক্যান্সার এর মত ও সমস্যা।
পাকস্থলীর ক্যান্সার
ক্যান্সার বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। আর পাকস্থলীর ক্যান্সার তার মধ্যে অন্যতম। পাকস্থলীর ক্যান্সার খুবই মারাত্মক। তবে আশার কথা হলো প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিলে জটিলতা এড়ানো যায়। এর মানে হল যে ক্যান্সার সম্পূর্ণরূপে প্রতিরোধ করা না গেলেও, আমরা যদি ঝুঁকির কারণগুলি জানি তবে আমরা সচেতন হতে সক্ষম হব।
পাকস্থলী ক্যান্সার কেন হয় ?
পাকস্থলীর ক্যান্সারের অনেক কারণ রয়েছে। তবে এর মধ্যে অন্যতম হলো খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রায় অনিয়ম, রাসায়নিকমুক্ত তাজা ফল ও শাকসবজি কম খাওয়া, প্রক্রিয়াজাত খাবার , লবণযুক্ত খাবার, ধূমপান করা মাংস বা আচারযুক্ত খাবার বেশি খাওয়া।
কারো যদি হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি ইনফেকশন, নাইট্রাইডস বা ফ্যামিলিয়াল পলিপসিস বা লিঞ্চ সিনড্রোম থাকে, তবে তাদের পাকস্থলীর ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।
সাধারণত পেটের সমস্যায় আঁশযুক্ত খাদ্য গ্রহণের উপর জোর দেওয়া হয়। তবে পেটের সমস্যা যেন দেখা না দেয় তার জন্য প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার সবচেয়ে বেশি উপকারী। প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবারের মাইক্রোবিয়াম শুধু পাকস্থলী নয়, পুরো স্বাস্থ্যের উপরেই ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
দই প্রোবায়োটিক খাবারের মাঝে প্রধান একটি খাদ্য উপাদান। অনেকেই প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার হিসেবে দইকে এক নামেই চেনেন। দই ব্যতীত অন্য যে সকল খাবার থেকেও প্রোবায়োটিক পাওয়া যাবে সেটাই জেনে রাখুন।
ঠাণ্ডা আলু
রান্না করে ঠাণ্ডা হওয়া আলু হলো রেসিস্ট্যান্ট স্টার্চের অন্যতম উৎকৃষ্ট একটি উপাদান। এই রেসিস্ট্যান্ট স্টার্চটি হলো প্রোবায়োটিক। যা অপরিপাকযোগ্য শর্করাকে পরিপাক করতে কাজ করে।
তবে যাদের ডায়বেটিসের প্রাদুর্ভাব ও সমস্যাটি রয়েছে, ঠাণ্ডা আলু গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকাই সবচেয়ে ভালো হবে। কারণ আলু রক্তে ইন্স্যুলিনের মাত্রা বৃদ্ধি করে দেয় এবং ক্ষেত্র বিশেষে ওজনও বাড়িয়ে দেয়।
কাঁচা কলা
সবজির মাঝে কাঁচা কলা খেতে পছন্দ করেন না অনেকেই। ফলে উপকারী এই খাদ্য উপাদানটি এড়িয়ে যান। অথচ প্রাকৃতিক এই খাদ্য উপাদানটিতে পাওয়া যাবে পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রোবায়োটিক। এছাড়াও এতে রয়েছে দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় আঁশ, ভিটামিন ও মিনারেল সমূহ।
কাঁচা কলা খাওয়ার ক্ষেত্রে অল্প পানিতে সিদ্ধ করে খেতে হবে। সিদ্ধ না করে খেলে পেটের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
রসুন
যদিও ভীষণ উগ্র গন্ধ রয়েছে প্রাকৃতিক এই উপাদানটিতে, রসুনকে বলা হয় পাকস্থলীর ব্যাকটেরিয়া বুস্টিং উপাদান। আমাদের দেশে খাবারের স্বাদ ও গন্ধ বৃদ্ধিতে রসুন ব্যবহার করা হলেও, পাশ্চাত্যে খাবার ফ্লেভারফুল করার পাশপাশি প্রোবায়োটিক খাবার হিসেবেও গ্রহণ করা হয়।
অন্যদিকে আর একটি গবেষণা বলছে, গ্রিন টি লিভার ভালো রাখার জন্য খুবই কার্যকরী। দিনে পাঁচ-দশ কাপ চা আপনাকে সতেজ ও কর্মক্ষম রাখতে উপকারী। তবে এর চেয়ে বেশি চা পান করলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
জাম্বুরা
টক জাতীয় ফলের মধ্যে জাম্বুয়া খুবই জনপ্রিয়। গ্রাম-শহর সবখানেই এই ফলটি উল্লেখযোগ্য হারে দেখা যায়। এতে থাকা নারিনজিনিন নামে একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লিভারের জন্য দুর্দান্ত কাজ করে। এটি লিভারের চারপাশে জমা চর্বি কমায় ও সংক্রামক টিস্যু বৃদ্ধি করে।
ব্লুবেরিস এবং ক্র্যানবেরিস
এই দুটি ফলে অ্যান্টোকাইনিনস নামে একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। শীতের মৌসুমে এর ব্যাপক ফলন হয়। যা লিভার সুস্থ রাখতে দারুণ কাজ করে। তিন থেকে চার সপ্তাহ প্রতিদিন ফলটি খেলে বিভিন্ন ক্ষত, দেহের টিস্যু ও লিভার সুরক্ষায় আশানুরূপ ফল দেয়।
আঙুর
বাইরের বিভিন্ন দেশ থেকে আসলেও বাংলাদেশে আঙুর একটি সুপরিচিত ফল। এর রসালো স্বাদ সব বয়সীদেরই আকৃষ্ট করে। আঙুর দেহের প্রদাহ কমায় ও নানা রকম ক্ষতি থেকে লিভারকে রক্ষা করে। নিয়মিত আঙুর খেলে লিভার ক্যানসারের ঝুঁকিও কমে।
অম্বল কমাতে নাশপাতি নিয়মিত খেলে উপকার পাওয়া যায়।খরমুজ বা ফুটিও পাকস্থলীর গ্যাস, অম্বল কমাতে সাহায্য করে। তাই পেট ভরে খরমুজ খাওয়া উচিৎ।
কলা খেলেও গ্যাস্টিকের সমস্যা কমে যায়।
অনেকে আপেল খেতে চান না পেটে গ্যাস হওয়ার কারণে। আসলে এ ধারণা ভুল। গ্যাস কমাতে সাহায্য করে এই ফল।
পাকস্থলীর ক্যান্সার কি নিরাময়যোগ্য?
দুর্ভাগ্যবশত, যেহেতু পাকস্থলীর ক্যান্সার প্রায়ই পূর্ববর্তী পর্যায়ে ধরা পড়ে না, তাই পাকস্থলীর ক্যান্সারের অনেক ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নিরাময় করা যায় না।
সমস্ত ম্যালিগন্যান্সির মতো, পাকস্থলীর ক্যান্সার সাধারণত সবচেয়ে বেশি চিকিত্সাযোগ্য হয় যখন এটি প্রাথমিকভাবে পাওয়া যায়, ক্যান্সার ফুসফুস, লিভার এবং হাড়ের মতো অন্যান্য অঙ্গে ছড়িয়ে পড়ার আগে।
পাকস্থলী ভালো রাখার উপায় – পাকস্থলীর ক্যান্সার থেকে বাচতে যা খাবেন? –
স্মোকড ফুড, খুব বেশি নুন যুক্ত মাছ, আচার বেশি খাওয়ার অভ্যাস ডেকে আনে পাকস্থলীর ক্যানসার। নোংরা খাবার, দীর্ঘক্ষণ খোলা থাকা খাবার, বাসি খাবারে মিশে থাকে নাইট্রেট ও নাইট্রাইট জাতীয় উপাদান। এই উপাদান শরীরে গেলে যে রাসায়নিক পরিবর্তন হয় তা কোষের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর ও ক্যানসারের জন্য দায়ী। রেড মিট কম খাওয়া ও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত জরুরি। পাকস্থলীর ভাল রাখতে টাটকা খাবার, সবুজ শাকসবজি, কম তেল-মশলা জাতীয় খাবার, কম নুন যুক্ত স্বাভাবিক খাবার খাওয়ার বিকল্প নেই।
Tags – Health Tips Health Care Foods That Keep Your Stomach Healthy
আজকাল কতো কিছু প্রোডাক্ট ইউজ করেও চুল পড়া বন্ধ করা যাচ্ছে না....চুলের সঠিক যত্ন ও…
Healthy Skin Tips For Face: সারা বছর ফেসিয়াল না করলেও পুজোর আগে সকলে আমরা ফেসিয়াল…
আজকাল মেকাপে মেতেছে সারা দুনিয়ার মানুষ,, বাচ্চা থেকে বয়স্ক সকলের মধ্যেই একটি ক্রেজ লক্ষ্য করা…
Bengali Durga Puja saree look: দেখতে দেখতে বছর গড়িয়ে চলে এলো দুর্গাপুজো….. সেপ্টেম্বরের মাঝ থেকেই…
মেয়েদের কাছে চুল হলো অমুল্য রত্ন ,, কিনতু আজকাল দূষণের কারনে, শারীরিক প্রবলেমের জন্য সকলের…
এই ভ্যাপসা গরমে ত্বকের উজ্জ্বলতা হারিয়ে ফিকে পড়ে যায়…. কিনতু সামনেই তো পুজো এখন থেকেই…
Leave a Comment