সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হরমোনের এই ভারসাম্যহীনতা অনেক স্বাস্থ্য সমস্যার দিকে নিয়ে যায়। জেনে নিন হরমোনের ভারসাম্যহীনতার লক্ষণগুলো কী কী।হরমোন হলো আমাদের শরীরে বিভিন্ন গ্রন্থি। এখান থেকে তৈরি হওয়া কিছু কেমিক্যাল, যেগুলো বিভিন্ন গ্ল্যান্ড থেকে তৈরি হয়ে রক্তের মাধ্যমে শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। হরমোনের মাধ্যমে শরীরের সব ধরণের কার্যক্রম, গ্রোথ ডেভেলপমেন্ট হয়।
হরমোনের ধরণ ও কাজ:
ঘুম থেকে জেগে ওঠার ক্ষেত্রে একটি হরমোন রয়েছে। ইংরেজিতে যাকে বলা হয় কেমিক্যাল ম্যাসেঞ্জার। এগুলো গ্রন্থি থেকে তৈরি হয়ে একজন আরেকজনকে মেসেজ পাঠায় যে, তোমাকে এই কাজটি করতে হবে।
হরমোনগুলো আবার অনেকগুলো নিয়ম-শৃঙ্খলায় আবদ্ধ। প্রথম হরমোন তৈরি হয়, ব্রেন থেকে। ব্রেনের হাইপোথেলামাস নামক অংশ আছে। সেখান থেকে হরমোন তৈরি হয়।
এন্টিনোকট্রিকো সামনের অংশ থেকে ছয়টা হরমোন তৈরি হয়। পেছনের অংশ থেকে দুইটি গুরুত্বপূর্ণ হরমোন তৈরি হয়। পিটুইটার সামনের অংশ থেকে যে হরমোন তৈরি হয়, তারা সরাসরি কাজ করে বা অন্যান্য গ্রন্থিকে বার্তা পাঠায়।
সুপার অ্যানাল গ্রেন্ডের আবার দুটি অংশ। কটেক্স, আরেকটা হচ্ছে প্রিনোটার। এগুলো আমাদের রক্তের ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করে। লবণের ওপর কাজ করে এবং সেক্স হরমোন তৈরি করে।
সেক্স হরমোনের সাথে ছেলে বা মেয়েদের বিষয়টি জড়িত। সেক্স হরমোনের শুরুটা প্রিটোটারি হরমোন থেকে আসে। প্রিটোটারি এইচএফএস এবং এলএস হরমোন। দু’টি হরমোনই মেয়েদের ক্ষেত্রে ওভারির উপর কাজ করে।
পুরুষদের ক্ষেত্রে অন্ডকোষের ওপর এসে কাজ করে। শুক্রাণু তৈরি করে। অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি থেকে কিছু পরিমাণ সেক্স হরমোন তৈরি করে।
থাইরয়েড স্টিমুলেটিং হরমোন। এসএইচ হরমোনটা এসে কাজ করে থাইরয়েডের উপর। থাইরয়েড থাকে আমাদের গলার সামনের দিকে। এগুলো প্রত্যেকটি কোষে কাজ করে।
হরমোনজনিত সমস্যায় হতে পারে বন্ধ্যাত্ব:
হরমোন সমস্যায় বন্ধ্যাত্ব গুরুত্বপূর্ণ একটি রোগ। বাবা হওয়ার জন্য টেস্টেস্টেরন এবং শুক্রাণু দু’টোই প্রয়োজন।
হাইপোথাইরয়েডিজম মানে হচ্ছে থাইরয়েডের কম কাজ করা। আর হাইপার থাইরয়েডিজম মানে থাইরয়েড গ্ল্যান্ড বেশি কাজ করে। হাইপোথাইরয়েডে সাধারণত টিএসএইচ বেড়ে যায়। হাইপার থাইরয়েডের সাধারণত টিএইচএস হরমোন কমে যায়।
থাইরয়েড হরমোন বন্ধ্যাত্বের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে। মেয়েদের ক্ষেত্রে ডিম্বাণু আর পুরুষদের ক্ষেত্রে শুক্রাণুর ওপর প্রভাব ফেলে।
কোন কারণে যদি এ হরমোন বেড়ে গেলে অবিবাহিত মেয়েদের অথবা যে মেয়েরা গর্ভধারণ করেনি অথবা বৃদ্ধ বয়সেও দুধ নিঃসরণ হতে পারে। এটাকে বলে হাইফা প্রলাক্টিন এনিমা।
প্রলাক্টিন হরমোনের গন্ডগোল। এটাও বন্ধ্যাত্বের সাথে জড়িত। প্রোল্যাকটিন হরমোন বেড়ে গেলে মেয়েদের ঠিকমত ডিম ফোটে না।
হরমোন শরীরের সকল কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু ব্যস্ত জীবনে মানসিক সমস্যার জেরে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়। এ ছাড়া পরিস্থিতি ও পরিবেশও হরমোনকে প্রভাবিত করে, যার ফলে মেজাজ পরিবর্তনের মতো সমস্যা হয়। জেনে নিন হরমোনের ভারসাম্যহীনতার লক্ষণগুলো কী কী।
হরমোনের সমস্যা
কিশোর অবস্থায় শরীরে হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে মুখে ব্রণ দেখা দেয়। এটি এই সমস্যার প্রথম লক্ষণ। এর সঙ্গে বিরক্তি, খারাপ মেজাজ, মনোযোগ দিতে অক্ষমতা এবং ক্লান্তির মতো লক্ষণগুলি দেখা যায়। হরমোনের ভারসাম্যহীনতা উপেক্ষা করলে মহিলাদের পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম ডিসঅর্ডার এবং অন্যান্য রোগ হতে পারে।
মেজাজের পরিবর্তন, ঘুমের ধরণে পরিবর্তন (অনিদ্রা), স্মৃতিশক্তির সমস্যা, সারাক্ষণ ক্লান্ত বোধ করা, মাথাব্যথা বা হজমের সমস্যা হরমোনের ত্রুটির লক্ষণ হতে পারে। এছাড়াও, পেশী সম্পর্কিত সমস্যাগুলিও হরমোনের ব্যাঘাতের লক্ষণ হতে পারে।
হরমোনজনিত সমস্যা উপেক্ষা করা একটি বড় ভুল। এটি আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয় এবং শরীরে কর্টিসলের মাত্রা বাড়াতে কাজ করে। অত্যধিক চাপ, দুর্বল ঘুম, প্রক্রিয়াজাত বা চিনিযুক্ত খাবার এই প্রদাহকে বাড়াতে পারে।
সজাগ থাকা প্রয়োজন
হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে ক্রমবর্ধমান প্রদাহ রোধ করতে, প্রাকৃতিক খাবার, পর্যাপ্ত ঘুম এবং খাওয়া এবং নিয়মিত ব্যায়ামের জন্য একটি সময়সূচী নির্ধারণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মানসিক চাপমুক্ত থাকতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে মেডিটেশন করুন। এছাড়াও, শরীরকে হাইড্রেট রাখতে প্রচুর জল খেতে থাকুন
শরীরে হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে প্রতিটি মানুষকে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এই ভারসাম্যহীনতা শরীরের বিপাক প্রক্রিয়াকেও প্রভাবিত করতে পারে এবং হাইপোথাইরয়েডিজম হতে পারে। এ ছাড়া ডায়াবেটিসও হতে পারে।
এই লক্ষণগুলি কারোর হলে শুরুতেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে এই সমস্যা অনেকাংশে নিরাময় করা যায়। এছাড়াও, সুগন্ধি থেরাপি, স্নান থেরাপি, গান গাওয়া, সঙ্গীত শোনা, আকাশের দিকে তাকানো, সমুদ্র বা নদীর ধারে বসাও হরমোনের ভারসাম্যহীনতার সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে। বেশি করে সবুজ শাকসবজি ও ফলমূল খেতে হবে।
TAGS:
HORMONAL IMBALANCE
HORMONAL IMBALANCE SYMPTOMS
HORMONAL IMBALANCE SYMPTOMS FOR MEN
HORMONAL IMBALANCE SYMPTOMS FOR WOMEN
আজকাল কতো কিছু প্রোডাক্ট ইউজ করেও চুল পড়া বন্ধ করা যাচ্ছে না....চুলের সঠিক যত্ন ও…
Healthy Skin Tips For Face: সারা বছর ফেসিয়াল না করলেও পুজোর আগে সকলে আমরা ফেসিয়াল…
আজকাল মেকাপে মেতেছে সারা দুনিয়ার মানুষ,, বাচ্চা থেকে বয়স্ক সকলের মধ্যেই একটি ক্রেজ লক্ষ্য করা…
Bengali Durga Puja saree look: দেখতে দেখতে বছর গড়িয়ে চলে এলো দুর্গাপুজো….. সেপ্টেম্বরের মাঝ থেকেই…
মেয়েদের কাছে চুল হলো অমুল্য রত্ন ,, কিনতু আজকাল দূষণের কারনে, শারীরিক প্রবলেমের জন্য সকলের…
এই ভ্যাপসা গরমে ত্বকের উজ্জ্বলতা হারিয়ে ফিকে পড়ে যায়…. কিনতু সামনেই তো পুজো এখন থেকেই…
Leave a Comment