খাওয়ার পর ক্লান্ত লাগার কারণ – Causes Tiredness After Eating
পেট ভরে খাওয়ার পর মানুষের তো ভাল লাগার কথা,
কিন্তু অনেককেই উল্টোটা বলে। কারন অনেকের কথা খাওয়ার পরপরই ক্লান্ত লাগে তাদের। কিন্তু কেন এমন হয়? কিছু জানেন কি! অনেকেরই দুপুরে খাওয়ার পর আবারো কাজে মনোযোগ দিতে গেলে শুধুই ঘুম পায়। চোখ দু’টোকে তখন যেন আর কিছুতেই খোলা রাখা যায় না। শরীর শুধু বিছানা চায় তখন যারা চাকরি করেন, তাদের অনেকেই এই অনুভূতির সঙ্গে বেশ পরিচিত।
খাওয়ার পর ক্লান্ত লাগে কেন
খাওয়ার পর সেই খাবারকে বিভক্ত করে লিভারের কাছে পৌঁছে দিতে অন্ত্রের অনেক বেশি রক্তের প্রয়োজন হয়, যে কারণে রক্তের ওপর বেশি চাপ পড়ে। ফলে তখন রক্তচাপ কমে গিয়ে শরীর ক্লান্ত বোধ করে এবং ঘুম পায়। তাছাড়া মানুষের দিনে ও রাতে- দু’বার বিশ্রামের প্রয়োজন হয়। যাদের দুপুরে ঘুমানোর সুযোগ আছে, তাদের ঘুমিয়ে নেয়াটাই শ্রেয়।
খাবারের ধরন
কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার খেলে শরীরে ট্রিপটোফ্যান (tryptophan) তৈরি হয়। যা আসলে এটি অ্যামাইনো অ্য়াসিড (amino acid)। শরীরে এটিকে ব্যবহার করে সেরোটোনিন (serotonin) তৈরি করে। এই হরমোনটিই ঘুম নিয়ন্ত্রণ করে।
কী ধরনের খাবারে ট্রিপটোফ্যান রয়েছে?
পোলট্রি, মাছ, দুধ, ডিম। এর সঙ্গে প্রসেসড ফুড, পেস্ট্রি, শর্করা সমৃদ্ধ খাবার, আলু খেলেও শরীরে এটি তৈরি হয়।
খাবারের পরিমাণ
বেশি পরিমাণ খাবার খেলে ঘুম পেতে পারে। তথ্য বলছে বড় পরিমাণ খাবারের বদলে অল্প পরিমাণে খাবার খেলে ঘুম পাওয়ার সমস্যা কমে।
এড়ানো যাবে কীভাবে?
খাওয়ার পর কিছুক্ষণ হাঁটার অভ্যাস থাকলে সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে।
একেবারে বেশি পরিমাণে খাওয়ার পর, অল্প অল্প করে খেলে সুরাহা হতে পারে।
যে কোনো খাবার খাওয়ার পরেই রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণের জন্য আপনার প্যানক্রিয়াস ইনসুলিন তৈরি করতে থাকে। বেশি খেলে প্যানক্রিয়াস বেশি ইনসুলিন উৎপন্ন করে। ইনসুলিন বেশি উৎপন্ন হলে দুটো বিষয় ঘটে। শরীরে ঘুমের হরমোন তৈরি হয়।
পাশাপাশি উচ্চ কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার খেলে (যেমন ভাত ) একে হজম করতে অনেক শক্তি খরচ হয়। খুব ভারী খাবার খেলে একে হজম করতে শরীরের ৬০ থেকে ৭৫ ভাগ শক্তি ব্যবহৃত হয়। এই শক্তি ক্ষয়ের জন্য আমাদের ঘুম পায়।
এই ঘুম কীভাবে এড়াবেন ?
বেশি প্রোটিন ও বেশি চর্বিজাতীয় খাবার খাওয়া আপনাকে ভোগাবে। অতিরিক্ত খেলে এটি ভাঙতে শরীরের বেশি শক্তি ব্যয় হবে। তাই দুপুরে খুব বেশি খেতে যাবেন না।
দুপুরের ঘুমের ফলে কী হয় :
যারা চাকরি করেন, তারা ঘুম কাটাতে কয়েক মিনিট মুক্ত বাতাসে হাঁটতে পারেন। এতে ক্লান্তি যেমন দূর হবে, তেমনি তরতাজা ভাবও বেড়ে যাবে কয়েকগুণ। দুপুরে অবশ্যই খেতে হবে, কিন্তু তাই বলে ভারি মাংস বা চর্বিযুক্ত খাবার একেবারেই নয়! দুপুরের খাবারের তালিকায় বরং প্রচুর সালাদ, সবজি এবং স্যুপের মতো হালকা খাবার রাখবেন।
এছাড়াও দুপুরের ঘুমের ফলে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকে। রাতের ঘুমের থেকে দুপুরের ঘুম হয় অনেক শান্তিতে। অর্থাৎ দুপুরে আপনি তখনই ঘুমোতে পারেন, যখন আপনার হাতে কিছুটা সময় থাকে।
দুপুরের ঘুম বাড়ায় আপনার মনে রাখার ক্ষমতা। যারা দুপুরে অন্তত আধঘণ্টা ঘুমান, তাদের মস্তিষ্ক অন্যদের থেকে বেশি ক্ষুরধার হয়, এমনই উঠে এসেছে বেশ কিছু গবেষণায়।
অনেক সময়ই রাতের ঘুম পরিপূর্ণ হয় না। তার জন্য বিশেষভাবে দুপুরের ঘুম প্রয়োজন। এতে ক্লান্তি কেটে যায়। কোনো সুক্ষ্ণ কাজ করতে সেই পরিমাণ সতর্ক থাকতে হয়, তাও বৃদ্ধি পায় দুপুরের ঘুমে। তাই প্রয়োজনমতো, যখনই সময় পাবেন, নিশ্চিন্তে ঘুমান দুপুরবেলায়।
Tags – Causes Tiredness After Eating Life Style