গরমে শরীর ক্লান্ত কেনো হয়! কারন জেনে নিন – Why Is The Body Tired In The Heat! Find Out Why
একদিকে বাইরে প্রচন্ড গরম অন্যদিকে গুমোট থেকে অস্বস্তি, প্যাচপ্যাচে ঘামে ক্লান্তি চেপে বসছে৷ জানেন কি ক্লান্তি কেন কোনও কোনও দিন বেশি আসে? কারণ গরমে হিট স্ট্রেসের সমস্যায় ভুগি আমরা৷ যার থেকে হয় ক্লান্তি৷
গরমে শরীর ক্লান্ত, ঝিমুনি ভাব ? জেনে নিন কোন কোন কারণে হয় হিট স্ট্রেস
শরীরে তাপমাত্রার তারতম্যের কারণেই কেবল মানুষ জাগতিক কাজকর্ম করে থাকে।কিন্তু সূর্যের তাপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মূল তাপমাত্রা নির্দিষ্ট একটি মাত্রায় ঠাণ্ডা রাখার জন্য শরীরকে বাড়তি কাজ করতে হয়।
এর ফলে ত্বকের কাছাকাছি রক্তবাহী ধমনীগুলো তীব্র তাপ চারপাশে ছড়িয়ে দিতে বেশি করে কাজ করতে শুরু করে, আর তখনই ঘাম হতে শুরু করে।
শরীরের সবখানে রক্ত পৌঁছে দিতে হৃদপিণ্ডকে তখন দ্রুত পাম্প করতে হয়।এর ফলে শরীরে হালকা র্যাশ বা দানা দেখা দিতে পারে, মানে ছোট ফুসকুড়ি মতন যা চুলকাতে পারে।
অথবা কারো পা ফুলে যেতে পারে গরমে।কিন্তু রক্তচাপ বেশি কমে গেলে হার্ট অ্যাটাক পর্যন্ত হতে পারে।সেই বেশি ঘামের কারণে শরীর জল শূন্য হয়ে পড়তে পারে।
সাথে দেখা দিতে পারে কিছু উপসর্গ—মাথাঘোরা, অজ্ঞান হয়ে পড়া, বমি ভাব, মাংসপেশিতে খিচ ধরা, মাথাব্যথা, ক্লান্তি, অবসাদ এবং মনে দ্বিধার ভাব হওয়া।
গরমে কেন হয় হিট স্ট্রোক? কীভাবেই বা মোকাবিলা করবেন? জানুন…
কাউকে তীব্র গরমে অসুস্থ হয়ে পড়তে দেখলে কী করা উচিত?
অতিরিক্ত গরমে কাউকে অসুস্থ হয়ে পড়তে দেখলে শুরুতেই তাকে আধা ঘণ্টা ঠাণ্ডায় রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। ঐ ব্যক্তিকে যত দ্রুত সম্ভব ঠাণ্ডা জায়গায় নিয়ে যেতে হবে শুইয়ে দিতে হবে, এবং তার পা কিছুটা ওপরে তুলে দিতে হবে ।প্রচুর পানীয় খাওয়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে, আক্রান্ত ব্যক্তির ত্বক ঠান্ডা করার ব্যবস্থা করতে হবে।
আমাদের শরীরের তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড পর্যন্ত থাকলে আমরা সুস্থ থাকি৷ তার বেশি তাপমাত্রায় শরীর নিজেই ঘামের মাধ্যমে নিজেকে সুস্থ রাখে৷ অতিরিক্ত ঘেমে শরীর ডিহাইড্রেটেড হয়ে পড়লে হিট স্ট্রেস হতে পারে৷
অতিরিক্ত গরম, বদ্ধ জায়গায় বসে সারাদিন কাজ করলে হিট স্ট্রেস হতে পারে৷ গরমে তাই এমন জায়গায় থাকুন যেখানে ভেন্টিলেশন হয়৷
প্রচন্ড গরমের দিনে সকাল ১১টা থেকে দুপুর ৩টের মধ্যে বাড়ির বাইরে না বেরনোই ভাল৷ এই সময় অতিরিক্ত সূর্যের তাপে হিট স্ট্রেস হতে পারে৷
ক্লান্ত হওয়ার একটা বড় কারণ হল অস্বাস্থ্যকর ডায়েট। শরীর সুস্থ রাখতে প্রত্যেকদিন সঠিক ডায়েট মেনে খাবার খাওয়া খুবই দরকার। যাতে সঠিক পরিমাণে ক্যালোরি থাকবে।
যদি আপনি অ্যানিমিয়ার সমস্যায় ভুগে থাকেন, তাহলে আপনার সারাক্ষণ ক্লান্ত লাগবে।
ক্লান্তির প্রতিকার
যখনই মনে হবে শরীরের শক্তি কমে যাচ্ছে, তখন ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় খাওয়া উচিত নয়। শুধু ক্লান্তি বা শক্তির জন্য কার্বোহাইড্রেট খাবেন না, তবে কিছু স্বাস্থ্যকর খাবারের সংমিশ্রণ বেছে নেওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া আপনার খাদ্যতালিকায় ভরপুর পুষ্টি উপাদান অন্তর্ভুক্ত করুন।বেশি করে জল পান করুন।
কলা–
শরীরে ইন্সট্য়ান্স এনার্জি বাড়াতে কলার বিকল্প নেই। পুষ্টিবিদদের মতে, একটি কলায় প্রায় ৫০০ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম থাকে। আর মানবদেহে প্রতিদিন ১৬০০ মিলিগ্রাম পটাশিয়ামের যোগান দেয়া গেলেই স্ট্রোকের হাত থেকে বছরে বেঁচে যেতে পারে ১০ লক্ষ মানুষ।
পালং শাক-
শাকের মধ্যে পালং শাকে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ এবং সি থাকে। এই শাক ত্বকের বলিরেখা দূর করতে সহায়তা করে। পালং শাক বায়ু দূষণের কারণে শরীরে যে ক্ষতি হয় তা নিরাময় করতেও সহায়ক। পালং শাকে আছে উচ্চ মাত্রার ম্যাগনেসিয়াম, যা রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড-
এনার্জি বর্দ্ধক খাদ্য হিসেবে প্রথম রাশিতেই রাখা হয় ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাদ্যকে। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ম্যাগনেসিয়াম ত্বকের রক্ত সঞ্চালন পক্রিয়াকে উন্নত করে। যার কারণে স্বাস্থ্যকর এবং উজ্জ্বল ত্বক মেলে সহজেই। বেশি পরিমাণে জল খেলে ত্বক সর্বদা হাইড্রেটেড থাকে।
গ্রিন টি-
গ্রিন টিতে পলিফেনল থাকে। এগুলি ত্বকের কোষগুলিকে পুনরায় সক্রিয় করে। গ্রিন টি ব্যবহার করে আপনি তারুণ্যে ভরা সৌন্দর্য ফিরে পেতে পারেন।
তাপদাহের সময় কী করা উচিত?
করণীয় একেবারে সাদামাটা—ঠাণ্ডা থাকুন আর শরীরকে জল শূন্য হতে দেবেন না। গরমে রোদের মধ্যে কাজ না করা এবং বেশি পরিশ্রমের কাজ করা থেকে বিরত থাকা ভালো।ঘরে দিনের বেলাতে পর্দা টেনে দিন। প্রচুর জল এবং দুধ পান করুন।
সাধারণত দিনের বেলাতেই গরমে বেশি হয়। কিন্তু রাতের অতি গরমও শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
Tags – Body Tired In The Heat! Life Style