গরম খাবার প্লাস্টিকে ভরছেন জানেন কি কতো বড়ো ক্ষতি হচ্ছে – Do You Know How Much Damage Is Done By Filling Hot Food In Plastic
পাড়ার কচুরির দোকান থেকে রেস্টুরেন্ট এর মাংসের ঝোল। পার্সেল মানেই প্লাস্টিকের প্যাকেটই ভরসা। সহজলভ্য ও ব্যবহারিক সুবিধালাভে এই উপায়ে অভ্যস্ত হলে বিপদ মারাত্মক। প্লাস্টিকে উপস্থিত বিষাক্ত উপাদান গরম খাবারে মিশে শরীরের কতটা ক্ষতি করছে তা জানুন।
লাইফস্টাইলগরম খাবার প্লাস্টিকে ভরছেন? হতে পারে মারাত্মক বিপদ
ডাল, ভাত, তারকারি কিংবা মাছ-মাংসের ঝোল! সব কিছুই সহজে বহন করা যায় প্লাস্টিকের ক্যারি ব্যাগে। এদিকে প্ল্যাস্টিকের ব্যবহার কমাতে দোকানে প্লাস্টিক প্যাকেটের উপর অতিরিক্ত কর ধার্য করা হচ্ছে, বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য রাখার ক্ষেত্রে বা নানা কাজে অনেকেই প্লাস্টিকের পণ্য ব্যবহার করে থাকেন। তবে প্লাস্টিকের পাত্রে খাওয়া বা কোনো কিছু গরম করার কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে।
অধিকাংশ মানুষই সামান্য পরিমাণে প্লাস্টিক খেয়েই ফেলেন। এটি সবচেয়ে বেশি শরীরে প্রবেশ করে গরম পানীয়ের সঙ্গে বা গরম খাবারের সঙ্গে এমনকি ঠান্ডা পানীয়ের সঙ্গেও। প্লাস্টিক যে শরীরের পক্ষে কতটা ক্ষতিকারক তা সকলেই জানেন। তাহলে ভাবুন তো প্রতি সপ্তাহে কত পরিমাণ প্লাস্টিক আপনার শরীরে গিয়ে কত ক্ষতি করছে!
প্লাস্টিকের পাত্রে খাবার খেলে প্লাস্টিকের কণা শরীরে প্রবেশ করে একথা সকলেই জানেন। কিন্তু সম্প্রতি গবেষণায় উঠে এসেছে তার থেকেও এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। প্লাস্টিকের পাত্রে খাবার খেলে নষ্ট হতে পারে হরমোনের ভারসাম্য। প্লাস্টিকের কণা যে শুধুমাত্র শরীরে গিয়ে শরীরের স্বাভাবিক ক্রিয়া শ্লথ করে তাই নয়, এর আরও অনেক ক্ষতিকারক দিকও রয়েছে যা এতদিন সামনে আসেনি।
প্লাস্টিকের পাত্রে গরম খাবার রেখে খাচ্ছেন! কী বিপদ হতে পারে জানেন
‘‘গবেষণায় দেখা গিয়েছে, প্লাস্টিকের পাত্রে একটু বেশি গরম বা একটু বেশি ঠান্ডা খাবার রাখলেই, তাতে এমন কিছু রাসায়নিক মেশে, যা হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে দেয়’’অ্যালকোহল জাতীয় তরল বা নোনাজল প্লাস্টিকের পাত্রে রাখলেও এই একই ধরনের রাসায়নিক ক্রিয়া ঘটে। কিন্তু এগুলির ক্ষেত্রে খাবারের সাথে প্লাস্টিক মেশার আশঙ্কা থাকে সাধারণত ৭০ শতাংশ।
কিন্তু প্লাস্টিকের পাত্রে যেমন- প্লাস্টিকের থালা, গ্লাস, বাটি বা প্লাস্টিকের টিফিনবক্সে গরম খাবার রাখলে তার থেকে প্লাস্টিকের খাবারে মেশার হার প্রায় ৯০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়।
তাহলে এর থেকে বাঁচার উপায় কি? প্লাস্টিকের পাত্রে খাবার রেখে তা কখনোই মাইক্রোওয়েভে বা ফ্রিজে রাখা যাবেনা। অর্থাৎ শরীরকে সুস্থ রাখতে হলে এগুলি আপনাকে অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে।
‘প্লাস্টিকের পাত্রে কিছু গরম করা এবং প্লাস্টিকের বোতলে জল পান করা ক্যানসার তৈরির কারণ হতে পারে। প্লাস্টিকের বোতলে থাকা রাসায়নিক পদার্থ খাবারের মধ্যে চলে যায়। এটি খাবার থেকে শরীরের ভেতর প্রবেশ করে।’
প্লাস্টিকের পাত্রে খাবার খাওয়া গর্ভের শিশুকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে। তাই গর্ভবতী নারীদের বোতলজাত খাবার, প্লাস্টিকের পাত্রে রাখা খাবার এড়িয়ে যেতে বলা হয়।
প্লাস্টিকের পাত্রে থাকে ক্ষতিকর পদার্থ বিসফানল-এ অথবা বিপিএ। যদি গর্ভবতী নারী গরম খাবার প্লাস্টিকের পাত্রে খায়, এটি শিশুর জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। এটি শিশুর শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলে। এমনকি স্নায়বিক সমস্যাও তৈরি করতে পারে। বিসফানল-এ হরমোনকে ভারসাম্যহীন করে তোলে। এ ছাড়া প্লাস্টিকের পাত্রে থাকা রাসায়নিক পদার্থ নারী ও পুরুষের বন্ধ্যত্বের কারণ হতে পারে।
প্লাস্টিক একটি বৃহৎ গঠন যা পলিমার অনুর সমন্বয়ে গঠিত। বিভিন্ন রকমের প্লাস্টিক যেমন পিভিসি, পলিপ্রোপাইলিন, পলিকার্বোনেট ইত্যাদি তৈরী হয় বিভিন্ন অনুপাতে মোনোমার অনুর সংযোজনে। কিন্তু দেখা গিয়েছে অনেক প্লাস্টিক বা পলিমার নিজেরা বিষাক্ত না হলেও সেগুলি যে মোনোমারের সংযোজনে তৈরি হয় তা খুবই বিষাক্ত হয়। প্লাস্টিক পুরনো হলে, শক্ত প্লাস্টিকের পাত্রে ঘষা লাগলে ও সস্তার প্লাস্টিক প্যাকেটে বা পাত্রে গরম খাদ্য দিলে এই বিষাক্ত
প্লাস্টিকের পাত্রে খাবার খাওয়া শরীরের জন্য ক্ষতিকারক। কারণ প্লাস্টিকের কণা খাবারের সঙ্গে শরীরে প্রবেশ করে। এ কথা বহু দিন ধরেই বিজ্ঞানীরা বলে আসছেন।
স্টাইরিন- রেস্টোরাঁয় যে ধরনের পাত্র পার্সেলের জন্য ব্যবহার করে, পলিএস্টারের ফোমের কাপে এই ধরনের মোনোমার থাকে। এই মোনোমার আমাদের স্নায়ুতন্ত্রের সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেমকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। যার মধ্যে প্রধান লক্ষণগুলি হল- মাথাব্যথা, কমজোরি, অবসন্নতা, অবসাদ, বধিরতা ও পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি ইত্যাদি।
ফ্যালেটস- প্লাস্টিককে নরম করার জন্য এই উপাদান মেশানো হয়। এটিও হরমোন ডিসরাপ্টার। ডায়াবেটিস, হার্ট এবং লিভারের অসুখের প্রবণতা বৃদ্ধি করে। অ্যালকোহল জাতীয় তরল এই প্লাস্টিকের পাত্রে রাখলে একই ধরনের রাসায়নিক তার মধ্যে মেশে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে ৭০ শতাংশ আশঙ্কা থাকে এগুলি মেশার। সেখানে গরম বা ঠান্ডা খাবার বা পানীয় রাখলে তার হার ৯০ শতাংশে পৌঁছে যায়।
Tags: Plastic Microwave Oven Food Hormone Filling Hot Food In Plastic