ঘন ঘন চা খান? কিন্তু জানেন কী ধরনের চা আমাদের খাওয়া উচিত – Drink Tea Often? But Do You Know What Kind Of Tea We Should Eat
চা হল এমন একটি পানীয়, যা ছাড়া অনেকের দিনের কাজ শুরু হয় না। এ কথা শুনে অনেকেই অবাক হবেন। কারণ দিনের কাজ সারতে সারতে কত বার যে তাঁরা চা খান, তার হয়তো কোনও হিসাবই থাকে না। কিন্তু তাতেই বাড়ে গোলমালের আশঙ্কা। তাই এই পানীয়ের প্রতি টান যতই থাকুক, সময়ের খেয়াল রাখতেই হয়।
কিন্তু রাতের দিকে যাঁদের চা খাওয়ার অভ্যাস, তাঁদের ঘুমের সমস্যা ঘটাতে পারে সেই ক্যাফিনই। ফলে ঘুমের আগে চা খাওয়া একেবারেই ভাল নয় বলে মনে করেন পুষ্টিবিদরা।
চা খেলে কি কি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে জানা আছে?
তাই বলে কি সকালের পর আর চা খাওয়াই চলে না?
তেমন কিন্তু একেবারেই নয়। বরং চায়ের আরও কিছু গুণ তো আছে। সে কথাও যে মাথায় রাখতে হবে। হজমশক্তিও বাড়াতে সক্ষম চা। তাই এই পানীয়টি খাওয়া যায় দিনের কোনও ভারী খাবারের পরেই।
চা সকলের অত্যন্ত পছন্দের, ঘুম থেকে উঠে খাওয়া থেকে সারাদিন কাজের মাঝে কম-বেশি সবাই চা খেয়ে থাকি, তবে চা শরীরের পক্ষে কতটা উপকারী? কোন কোন চা খাওয়া উচিত তা কী জানেন? বিশেষ করে গ্রিন টি বা লিকার চায়ে প্রক্রিয়াকরণ সবচেয়ে কম হয়। চায়ের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডান্ট মজুত থাকায় তা কমায় ফ্রি-র্যাডিকালসের বাড়বাড়ন্ত, ফলে ভিতর থেকে সুস্থ হয়ে উঠতে সক্ষম।
গবেষণায় প্রমাণিত, যারা নিয়মিত চা খান তাঁরা দীর্ঘ সময়ের জন্য সুস্থ থাকেন। চা স্বাস্থ্যের পক্ষে যথেষ্ট উপকারী। চায়ে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য পাওয়া যায়, কফির চেয়ে কম ক্যাফিন রয়েছে চায়ে যা ওজন হ্রাসেও সহায়তা করে। কোন কোন চায়ে কী কী গুণাগুণ তার বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
চায়ের গুণাগুণ সম্পর্কে আপনার পরিষ্কার ধারণা আছে কী
নিয়মিত আদা দিয়ে চা খাওয়া হার্টের পক্ষে ভাল,রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এই চা রক্ত জমাট বাঁধা নিয়ন্ত্রণ করে কোলেস্টেরল কম করে এবং রক্ত সঞ্চালন আগের থেকে বৃদ্ধি করে। সর্দি কাশির সময় সামান্য আদা দিয়ে তৈরি চা বাড়ির মা-ঠাকুমারা দিয়ে থাকে, স্বাদে গন্ধে এবং গুণের দিক থেকে আদা খানিকটা সমসাময়িক হলুদ এবং এলাচের।
গ্রিন টি স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। ওজন কমানোর জন্যে অনেকেই এই চা খেয়ে থাকে। ওজন হ্রাস থেকে রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ করতে, কোলেস্টেরল কমাতে ও হজমশক্তি উন্নতি করতে সক্ষম গ্রিন টি। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে দিনে এক কাপ থেকে দু কাপ গ্রিন টি পান করা স্বাস্থ্যকর। গ্রিন টি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর, নিয়মিত খেলে ত্বক, চুল সবই সুস্থ থাকে।
ক্যামোমাইল টি সম্পর্কে এখনও পর্যন্ত অনেকেরই জানা নেই, তবে বিদেশে এই চা খাওয়ার প্রচলন রয়েছে। একরকম ফুল থেকে তৈরি হয় এই চা। ভেষজ চা-এর মধ্যে অন্যতম হল এই ক্যামোমাইল টি। এই চায়ের মধ্যে কোনওরকম ক্ষতিকর ক্যাফেন থাকে না।এই চা খেলে ঘুম ভালো হয়। মূলত দুরকমের ক্যামোমাইল চা ব্যবহার করা হয়- রোমান ও জার্মান।
পুদিনা পাতার মূল, পাতা, কান্ড-সহ সমগ্রই গুণে পরিপূর্ণ। পুদিনা পাতা সুগন্ধি হিসাবে রান্নায় ব্যবহার করা হয়। কাবাব, চাটনি, মশলায় ব্যবহার করা হয় পুদিনা পাতা। তেল তৈরিতেও পুদিনা পাতার ব্যবহার হয়ে থাকে।
জবা ফুলের চা অসাধারণ পুষ্টিকর। এটি উচ্চ রক্তচাপ এবং উচ্চ কোলেস্টেরলের সমস্যা কমায়। একই সঙ্গে হজমের সমস্যাও দূর করে। লিভারের রোগ সারাতেও জবা ফুলের গুণ অনস্বীকার্য, পাশাপাশি ক্যানসারের প্রবণতাকেও কমায় এই চা। জবা ফুলের চায়ে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন C, মিনারেল, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকায় উদ্বেগ ও উদ্দীপনা কমাতেও প্রভাব থাকে। এই তা খেতে খানিক টক হওয়ার কারণে অনেকেই একে টক চা বলে থাকে।
লবঙ্গ চা যেভাবে বানাবেন
প্রথমে পরিমাণ মতো লবঙ্গ নিয়ে বেঁটে নিন। তারপর সেই লবঙ্গের গুঁড়া এক কাপ জলে মিশিয়ে কম করে ১০ মিনিট ফুটিয়ে নিন। যখন দেখবেন জলে ফুটতে শুরু করেছে, তখন তাতে হাফ চামচ চা পাতা দিন। আর কিছু সময় অপেক্ষা করে জলটা ছেঁকে নিলেই হয়ে গেলো লবঙ্গ চা।
চিকিৎসা বিজ্ঞান নিয়ে যারা চর্চা করেন তাদের মতে, প্রতিদিন দুবার করে লবঙ্গ চা খেলে শরীরে প্রবেশ করে ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন কে, ফাইবার, আয়রন, ক্যালসিয়াম সহ আরও একাধিক উপকারী উপাদান। যা নানাভাবে আমদের শরীরের উপকারে লেগে থাকে।
ক্যান্সার দূরে থাকে
লবঙ্গের ভেতরে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টি-ক্যান্সার এজেন্ট। তাই প্রতিদিনের ডায়েটে লবঙ্গ চা জায়গা করে নিলে স্বাভাবিকভাবেই শরীরের ভেতরে ক্যান্সার নিরোধক উপাদানের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ফলে দেহে ক্যান্সার সেল জন্ম নেয়ার আশঙ্কা কমে যায়।
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে
সরকারি এবং বেসরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত এক দশকে আমাদের দেশে যে হারে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বেড়েছে, তাতে আমাদের দেশ সারা বিশ্বের মধ্যে ডায়াবেটিস ক্যাপিটালে পরিণত হয়েছে। এই প্রাকৃতিক উপাদানসমৃদ্ধ চায়ের ভেতরে উপস্থিত নিগেরিয়াসিন, যা শরীরে প্রবেশ করার পর ইনসুলিনের কর্মক্ষমতাকে এতটাই বাড়িয়ে দেয় যে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার সুযোগই পায় না।
স্ট্রেস লেভেল নিমেষে কমে যায়
ডায়াবেটিসের পর যে সমস্যাটা গত কয়েক বছরে বেশ মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে তা হল স্ট্রেস। পরিসংখ্যান বলছে, আমাদের দেশের যুব সমাজের সিংহভাগই স্ট্রেসের শিকার। আর ভয়ের বিষয় হচ্ছে- যে কয়টা মারণ রোগ এখন পৃথিবীতে দাপাদাপি করছে, তার প্রায় সবগুলোর সঙ্গেই স্ট্রেসের সরাসরি যোগ রয়েছে।
আসুন, দেখে নিই সেই সঠিক সময় টা কোনটা।
১)সকালে ঘুম থেকে উঠেই চা পান করবেন না,অন্তত অন্য কিছু খেয়ে নিন। কথা হচ্ছে, খালি পেটে চা পান করা একদম উচিত নয়।
২)কোনো খাবার খাওয়ার সাথে সাথে ই চা পান করবেন না, অন্তত আধ ঘন্টা সময় পরে পান করুন।
৩)সবসময় দুধ এবং চিনি পরিহার করে চা পান করার চেষ্টা করুন,বিকেল বেলা চা পান করতে পারেন।
৪)রাতে গ্রীন টি পান করতে পারেন।
Tags: Tea Time Food Habits Drink Tea