দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে খেতে হবে যেসব খাবার – Foods To Eat To Increase Eyesight
আজকাল ইলকট্রনিক স্ক্রিনের দিকে ক্রমাগত একনাগাড়ে দীর্ঘসময় ধরে তাকিয়ে থাকার কারণে লোকের দৃষ্টিশক্তি সংক্রান্ত সমস্যা যেন বেড়েই চলেছে। চশমার মাধ্যমে এর সমাধান করা গেলেও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং জীবন-যাপনের মাধ্যমেও এর সমাধান করা যেতে পারে। এমন কিছু খাবার আছে যেগুলো খেলে আপনি দৃষ্টিশক্তির সব ধরনের সমস্যা থেকে রেহাই পাবেন।
চোখ আমাদের গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। দৃষ্টিশক্তি না থাকলে পৃথিবী অন্ধকার। আজকাল আমরা কমবেশি সবাই চোখের সমস্যায় ভুগি। শরীরের অন্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মতো চোখের যত্ন নেয়াটাও খুব জরুরি। বড়দের পাশাপাশি ছোটদেরও হয় চোখের সমস্যা। অল্পবয়সী ছেলে-মেয়েদেরও দেখা যায় মোটা লেন্সের চশমা পরতে। তবে আমরা যদি প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কিছুটা পরিবর্তন আনি তাহলে চোখের সমস্যা অনেকটাই এড়ানো যায়। চোখকে সুস্থ রাখতে আসলে নিয়মিতই কিছু খাবার দরকার।
চোখের যত্নে যা খাবেন
অপুষ্টির জন্যও চোখের জ্যোতির সমস্যা হয়ে থাকে। শরীরের ক্ষুদ্রান্তে ভিটামিন এ শোষিত হয় চর্বির সঙ্গেই। দেখা যায় নারী অপেক্ষা পুরুষের অন্ত্রে ভিটামিন এ শোষিত হয় তাড়াতাড়ি। এদিকে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন ডি, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস এবং জিঙ্কের সঙ্গে ভিটামিন এ–যুক্ত খাবার খেলে বেশি কার্যকর হয়।
চোখের যাবতীয় সমস্যা থেকে যুক্ত থাকার জন্য ভিটামিন এ প্রয়োজন। নবজাতকের যকৃতে এই ভিটামিন কতখানি সঞ্চিত থাকবে, তা নির্ভর করে মায়ের রক্তে কতটুকু ভিটামিন এ ছিল তার ওপর। ভিটামিন এ পাওয়া যাবে—গাজর, ভুট্টা, আপেল, টমেটো, পাকা আম, পাকা পেঁপে, রাঙা আলু, মিষ্টিকুমড়া, ক্যাপসিকাম সবুজ শাকসবজি যেমন পালংশাক, শজনেপাতা, লেটুসপাতা, বাঁধাকপি ইত্যাদি থেকে।
দৃষ্টিশক্তি বাড়ায় যেসব খাবার
ভিটামিন ডি পাওয়া যাবে ঘি, মাখন, ডিমের কুসুম, সামুদ্রিক মাছ ও মাছের তেল থেকে। এ ছাড়া সূর্যের আলো থেকে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। এটা সর্বজনস্বীকৃত। প্রতিদিন ভিটামিন সিযুক্ত খাবার খেলে চোখের ছানি পড়া আটকানো যায়। খাবারে ভিটামিন এর অভাব হলে ভিটামিন সি দ্রুত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চোখের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। ভিটামিন এ, সি, ই, সেলেনিয়াম ও বিটা ক্যারোটিন থেকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। অ্যামন্ড, আম ইত্যাদিতে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। অ্যামন্ড, আম, টমেটো, শসা, বাঁধাকপি ইত্যাদি থেকে পাওয়া যাবে ভিটামিন ই। সেলেনিয়াম আছে রসুন, কলিজা, পেঁয়াজ ও সবুজ শাকসবজিতে।
সবুজ পাতাবহুল শাক-সবজি আমাদের জীবনের সবার সেরা বন্ধু হলো সবুজ পাতাবহুল শাক-সবজি। এতে আছে লুটেইন এবং জিয়াক্স্যানথিন এর মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা মাংসপেশির ক্ষয় রোধ করে।
গাজর সেই ছোটবেলা থেকেই আমরা শুনে আসছি গাজর আমাদের চোখের জন্য বেশ উপকারী। আসলেও তাই। গাজরে আছে প্রচুর পরিমাণে বিটা-ক্যারোটিন যা চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখা এবং চোখের কার্যক্রম সচল রাখায় সহায়ক ভুমিকা পালন করে।
পূর্ণ শস্য পূর্ণ শস্যজাতীয় খাদ্যে গ্লিকেমিক ইনডেক্স কম থাকে। যা চোখের পেশির ক্ষয় এবং বার্ধক্যজনিত সমস্যা প্রতিরোধ করে। এই শস্য রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিসও প্রতিরোধ করে যা দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসার প্রধান কারণ।
সাইট্রাস ফল লেবু এবং কমলার মতো সাইট্রাস ফল ভিটামিন সি-তে পূর্ণ। যা খুবই শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এই ফল চোখের স্বাস্থ্য খুবই ভালো রাখে।
বাদাম বাদামে আছে ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড। যা চোখ সংক্রান্ত রোগ কমায়। এতে থাকা ভিটামিন ই চোখে ছানি পড়া এবং ক্ষয় প্রতিরোধ করে।
মাছ এবং মাছের তেলের ক্যাপসুল মাছেও আছে ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড যা চোখে রক্ত সরবরাহের শিরা-উপশিরাগুলোকে শক্তিশালী করে। এছাড়া এটি ব্রেন পাওয়ারও বাড়ায়। যার ফলে দৃষ্টিশক্তিও উন্নত হয়।
সূর্যমুখী ফুলের বীজ এতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই এবং জিঙ্ক যা আমাদের চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এবং রোগমুক্ত রাখতে সহায়ক। এসব বীজ থেকে পাওয়া তেলে আছে ক্যারোটিনয়েড যা ছানি পড়া রোধ করে।
টমেটো এতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং সি। প্রতিদিন টমেটো খেলে দৃষ্টিশক্তি উন্নত হয় এবং দৃষ্টিশক্তি হারায় না।
, চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে ডিমও বেশ কার্যকর। বিশেষ করে ডিমের কুসুমে আছে লিউটেইন, জিয়াক্সানথিন এবং জিঙ্ক যা রেটিনায় কোনো ধরনের ক্ষয় প্রতিরোধে বেশ কার্যকর।
Tags – Increase Eyesight