Spread the love

পিরিয়ডের সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম মেনে চলুন – Follow Some Important Rules During Period

আজকের মেয়েরা অনেকদূর এগিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু প্রকাশ্যে পিরিয়ডের নিয়ে কথা বলাটা হয়ে ওঠেনা। মেয়েরা ওই ক’টাদিন এখনও লোকচক্ষুর আড়ালে কাটাতে পারলেই সবচেয়ে স্বস্তি পান, কিন্তু তা তো আর সব সময় সম্ভব হয় না – বিশেষ করে এখন স্কুল-কলেজ-অফিস সর্বত্র মেয়েদের অবাধ যাতায়াত এবং মাসের ওই চার-পাঁচটি দিনেও তার ব্যাঘাত ঘটে না। কিছু নির্দিষ্ট কয়েকটি নিয়ম মেনে না চললে নানা সমস্যা ও অসুখ-বিসুখও হতে পারে, তা জানেন তো?



পিরিয়ডের সময় যা করতে হবে


প্রতি চার ঘণ্টা অন্তর স্যানিটারি ন্যাপকিন বদলান

আপনার অত্যাধুনিক স্যানিটারি প্যাড সমস্ত ঋতুস্রাব শুষে নেয় বলে নিশ্চিন্তে ঘণ্টার পর ঘণ্টা তা পরে থাকবেন না, তাতে সমস্যা বাড়বে।



IMG_20220829_210915-1661787571466 পিরিয়ডের সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম মেনে চলুন - Follow Some Important Rules During Period

পিরিয়ডের সময় এক ন্যাপকিন বেশিক্ষণ না! ভ্যাজাইনাল সংক্রমণ এড়াতে মেনে চলুন এই নিয়মগুলি


ন্যাপকিন যেখানে-সেখানে ফেলছেন না তো?

চেষ্টা করুন ডিসপোজ়েবল ব্যাগ বা র‍্যাপারে মুড়ে ন্যাপকিন ফেলার। কোনও বিন বা ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গায় ন্যাপকিন ফেলার উচিত।


কখনওই দু’টি ন্যাপকিন একসঙ্গে ব্যবহার করবেন না

অনেকেই বাড়তি ফ্লো সামলানোর জন্য একসঙ্গে একাধিক ন্যাপকিন ব্যবহার করেন বটে, তবে তাতে খুব একটা কাজ হয় না। আপনার ফ্লো খুব হেভি হলে সামাল দেওয়ার জন্য বিশেষ প্যাড কিনুন। দরকারে বারবার বদলে ফেলুন।


র‍্যাশ এড়াতে যথাসময়ে প্যাড পরিবর্তন করা এবং যোনিপথের আশপাশের জায়গা শুকনা রাখা জরুরি।


ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন এড়াতে প্রতিদিন স্নান করুন। পরিষ্কার অন্তর্বাস ব্যবহার করুন।


ব্যবহৃত কাপড় ও অন্তর্বাস পরিষ্কার করে ভালোভাবে রোদে শুকিয়ে নিন।


যোনিপথের আশপাশে সুগন্ধী বা অ্যালকোহলযুক্ত পণ্য ব্যবহার করবেন না।


ভারী কাজ, ব্যায়াম, সাঁতার বা সাইকেল চালানো থেকে বিরত থাকুন।


পিরিয়ডের সময় এগিয়ে এলেই কি আপনার নানা ধরনের শারীরিক ও মানসিক সমস্যা হয়


হরমোনের প্রভাবে এ সময় মানসিক ও শারীরিক বেশ কিছু পরিবর্তন ঘটে। তাই মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তামুক্ত থাকার চেষ্টা করুন।


এ সময় বাইরের খাবার এড়িয়ে পুষ্টিকর খাবার খান। প্রচুর জল পান করুন।


জটিলতা এড়াতে নিয়মিত জরায়ুমুখ ও স্তন ক্যানসার স্ক্রিনিং করা জরুরি।


অনিয়মিত পিরিয়ড


যেকোনো বয়সী নারীর অনিয়মিত ঋতুস্রাব হতে পারে। ২৮ দিনের জায়গায় ২১ থেকে ৩৫ দিন পরপর হলেও তা যদি নিয়মিত ব্যবধানে হয়, তাকেও স্বাভাবিক হিসেবে ধরা হয়।

অনিয়মিত পিরিয়ডের কারণ হলো—


• পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম (পিসিওএস)।


• শরীরের ওজন হঠাৎ বেড়ে যাওয়া।


• হঠাৎ ওজন কমিয়ে ফেলা।


• অতিরিক্ত মানসিক চাপ।


• জরায়ুর টিউমার।


• থাইরয়েডের সমস্যা।

ভ্যাজাইনা ও সংলগ্ন অংশ পরিষ্কার রাখুন

ভ্যাজাইনা ও তার আশপাশ সব সময়েই পরিষ্কার রাখা উচিত, পিরিয়ডের সময় তো বিশেষ খেয়াল রাখাটা মাস্ট! ঈষদুষ্ণ জল আর লিকুইড সাবান দিয়ে জায়গাটা পরিষ্কার করুন নিয়মিত।


এমন অন্তর্বাস পরুন যা ত্বককে শ্বাস নিতে দেয়

পিরিয়ডের সময় স্যানিটারি ন্যাপকিনকে যথাস্থানে ধরে রাখার জন্য ভালো মানের টাইট ফিটিং আন্ডারওয়্যার পরাটা খুব জরুরি। এমন মেটিরিয়ালের অন্তর্বাস বাছুন যা আপনার ত্বককে শ্বাস নিতে দেবে।

পিরিয়ড এবং মুড সুইং :


পিরিয়ড হলে আসলে মেয়েদের শরীরে হরমোনের নানারকম পরিবর্তন হয়। মেয়েদের শরীরে একটা গুরুত্বপূর্ণ হরমোন হল ইস্ট্রোজেন।ইস্ট্রোজেন আমাদের মুডকে ঠিক রাখতেও সাহায্য করে। পিরিয়ড শুরু হলে শরীরে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা নেমে যায়। ফলে তখন মুড ঘন ঘন অফ হয়। মেজাজ ঠিক থাকে না। এছাড়া পেটে ব্যথা তো একটা সাধারণ সমস্যা। এসময় কোনো কাজও করতে ইচ্ছে করে না। অল্পেতেই মাথা গরম হয়ে যায়। হরমোনের ওঠানামার কারণে মস্তিষ্কে সেরাটোনিনের মাত্রাও কমে যায় যার ফলে ডিপ্রেশন, মন খারাপ ও ইমোশনাল নানারকম সমস্যা হতে পারে। এতে অসহিষ্ণু হবেন না।

বরং মেয়েটির প্রতি সহানুভূতিশীল হন। বোঝার চেষ্টা করুন যে সে কেন এরকম আচরণ করছে বা কোথায় তার কষ্ট হচ্ছে। আপনি পালটা রেগে যাবেন না। বরং তাকে সামলান।


এই খাবারগুলি মুড ভালো করতে সাহায্য করে-


১)ডার্ক চকোলেট :মুড ভালো করার সর্বোত্তম খাবার হল ডার্ক চকোলেট।এটি শরীরের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং মস্তিষ্কে সেরাটোনিন মাত্রা বাড়িয়ে মুড ভালো করে; এছাড়াও,


২)তৈলাক্ত সামুদ্রিক মাছ


৩)আয়রন সমৃদ্ধ শাক সবজি


৪)ফলমূল ইত্যাদি।


পিরিয়ড নিয়ে বহুল প্রচলিত কিছু ভ্রান্ত ধারণা :


পিরিয়ড নিয়ে নানা ভ্রান্ত ধারণা এবং কুসংস্কার চিরকাল ধরে সমাজে বিদ্যমান।লজ্জা আর কুসংস্কারে আমরা আমাদের শরীরের বড় ধরনের ক্ষতি করে ফেলি।দেখে নেওয়া যাক বহুল প্রচলিত কিছু কুসংস্কার ও তাদের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা-


১)চুল ধোয়া :


ঋতুস্রাব বা পিরিয়ড হলে বলা হয়, মেয়েদের দু’দিন চুল ধোয়া উচিত নয়। এটার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। বরং চিকিৎসকরা বলে থাকেন মাথায় জল দিলে পিরিয়ডের ব্যথা অনেকটা কমে এবং এতে আরাম পাওয়া যায়৷


২)পিরিয়ডের দিনে সাঁতার :


আগেরকার দিনে পুকুরে স্নান করতো অনেকেই। তাই হয়ত জল নোংরা হওয়ার ভয়ে এ নিয়ম চালু হয়েছিল, মাসিক হলে স্নান করা যাবে না। কিন্তু এখনকার দিনে সে ধরনের কোনো অসুবিধা নেই।

রান্নাঘরে ঢুকতে মানা :


অনেক হিন্দু পরিবারে মাসিক চলাকালীন মেয়েদের রান্না ঘরে ঢুকতে দেয়া হয় না। বিশেষ করে যুক্ত পরিবারে এ ধরনের কুসংস্কার লক্ষ্য করা যায়, তারা মনে করে এতে খাবার দূষিত হয়। এই ধারণা একেবারেই ভুল৷


অপবিত্র রক্ত :


অনেকেই বলে থাকেন, মাসিকের রক্ত অপবিত্র। তাদের ধারণা এই রক্ত দিয়ে জাদু, ঝাড়ফুকও করা যায়। আশ্চর্যের বিষয়, শুধুমাত্র অশিক্ষিত পরিবারে নয়, অনেক শিক্ষিত পরিবারেও এ ধারণা প্রচলিত আছে। অতএব, আমাদের আজকের যুগে এসব কুসংস্কার থেকে বেঁচে থাকা উচিত।


Tags – Some Important Rules During Period
Life Style Health Tips Health Care

By Bristy

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *