বর্তমানে মুড সুইং প্রচলিত একটি শব্দ। অনেকে কটূক্তি করেও বলে থাকেন, ’ তবে কেন হয় এই মুড সুইং অথবা মুড সুইং কী, এ ব্যাপারে অনেকেই সঠিক ধারণা রাখেন না
মহিলাদের মানসিক চাপের মধ্যে থাকার দুটি কারণ রয়েছে, একটি মানসিক কারণ যা তারা পিরিয়ড এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত অস্বস্তি সম্পর্কে অনেক বেশি চিন্তা করে এবং অন্যটি প্রিম্যানস্ট্রুয়াল সিনড্রোম অর্থাৎ পিএমএস এর কারণে ঘটে।
আগে জেনে নেই মুড সুইং কী?
নারীদের একটি উচ্চসংখ্যা মুড সুইংয়ে আক্রান্ত। ধরুন, একজন নারী হাসিমুখে কথা বলতে বলতে হঠাৎ মুড খারাপ হয়ে গেল, পরক্ষণেই আবার ঠিক হয়ে গেল, এটাকেই সংক্ষেপে মুড সুইং বলে। পিরিয়ড শুরু হওয়ার কিছুদিন আগে থেকে অনেক মেয়ের ক্ষেত্রেই কিছু মানসিক পরিবর্তন দেখা যায়, যা খুব দ্রুত বদলাতে থাকে।
মুড সুইং কেন হয়?
পিএমএস বা মুড সুইংয়ের কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা স্ত্রী হরমোনকেই দায়ী করে থাকেন। নারীদের পিরিয়ড সাইকেলকে কার্যক্রম অনুসারে তিনটি পর্যায়ে ভাগ করা যায়। যার মধ্যে শেষ পর্যায়টিতে নারী পিএমএসে আক্রান্ত হন। এরপর শুরু হয় পিরিয়ড, অর্থাৎ নতুন সাইকেল বা চক্র। ইস্ট্রোজেনের এই উত্থান-পতনই মেয়েদের মানসিক অবস্থায় প্রভাব ফেলে এবং পিএমএসজনিত সমস্যা সৃষ্টি করে।
নারীবিশেষ হরমোনগুলো কিছু ব্রেইন কেমিক্যালকে কমিয়ে মুডের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, যার মধ্যে অন্যতম হলো সেরেটোনিন। এ ছাড়া পিরিয়ড শুরু হওয়ার আগে স্বাভাবিকভাবেই একেকজনের ক্ষেত্রে একেক রকম শারীরিক বা মানসিক লক্ষণ দেখা যায়। অনেকের ক্ষেত্রেই পেটের পেশিতে টান, খেতে অনিচ্ছা, শরীরে অস্বস্তি বা মাথাধরা ইত্যাদি জানান দেয়, এবার পিরিয়ড শুরু হবে। এ জন্যও অনেকের মুড সুইং হতে পারে।
কীভাবে বুঝবেন আপনার পিএমএস বা মুড সুইং হচ্ছে?
হঠাৎ রেগে যাওয়া
ছোট ছোট ব্যাপারেই হঠাৎ রেগে যাওয়া, স্বাভাবিক একটা ব্যাপার মেনে নিতে না পেরে উত্তেজিত হয়ে যাওয়া মুড সুইংয়ের অন্যতম একটি লক্ষণ।
ডিপ্রেশন বা অবসাদ
মাসের নির্দিষ্ট একটি সময়ে আপনার মন ভার হয়ে থাকলে, বিগত নানা ধরনের দুশ্চিন্তা থেকে মনের অজান্তেই আপনার হতাশা সৃষ্টি হলে বুঝবেন আপনার মুড সুইং হচ্ছে। শুধু ইস্ট্রোজেন, প্রোজেস্টেরন নয়, সেরোটোনিন হরমোনের মাত্রাও এই সময় কমে যায় বলেই, মন খারাপের এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়।
কান্নাকাটি
পিএমএসের সময় এটি আরেকটি অতি সাধারণ ঘটনা। খুবই সামান্য কারণে মন খারাপ করে তা থেকে কান্না এলে এটি মুড সুইংয়ের একটি কারণ হিসেবে ধরে নেওয়া যায়।
অবসাদগ্রস্ততা
অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে পড়া, কাজে অনীহা ইত্যাদিও মুড সুইংয়ের জন্য দায়ী।
ঋতুস্রাব নারীদের পিরিয়ড হওয়া একটি স্বাভাবিক রূপ। পিরিয়ডের সময় মহিলাদের শরীরে হরমোনের পরিবর্তনের কারণে নানা সমস্যা শুরু হয়। পিরিয়ডের সময় মহিলারা প্রায়ষই মানসিক চাপে থাকেন।
জেনে রাখা ভাল যে, প্রি-মেনস্ট্রুয়াল সিনড্রোমকে টেনশন পিএমটিও বলা হয়। এই লক্ষণগুলি বেশিরভাগ মহিলাদের মধ্যে পিরিয়ডের সময় দেখা যায়। এ সময় মহিলাদের স্তনে ফুলে যাওয়া, মাথাব্যথা, কোমরে ব্যথা, পেট ফাঁপা ছাড়াও বিশেষ কোনও খাবার খাওয়ার ইচ্ছা ইত্যাদি ঘটে।
শুধু তাই নয়, ব্রণ, উত্তেজনা, ক্লান্তি, অনিদ্রা, শক্তির অভাব, বিষণ্নতা এবং মেজাজ পরিবর্তনের লক্ষণও দেখা দিতে পারে।
আসলে, পিরিয়ডের সময় মহিলাদের দ্বারা সৃষ্ট মানসিক চাপের কারণে, পিটুইটারি এবং ডিম্বাশয়ের মধ্যে সংযোগ বিঘ্নিত হয় মস্তিষ্কে। পিরিয়ডের সময় যে স্ট্রেস হয় শরীরে অনেক ধরনের নিউরোকেমিক্যালের পরিবর্তন হয়।
পিরিয়ড খুব অস্বস্তিকর, আজকাল হরমোন বিভিন্ন উপায়ে ওঠানামা করে। এই কারণেই আবেগ আপনাকে নানাভাবে আধিপত্য করে এবং যার কারণে আপনি বারবার রেগে যেতে শুরু করেন।
শরীরে কম এন্ডোরফিন এবং উচ্চ সেরোটোনিনের কারণে হতাশাগ্রস্ত হওয়া। এমন অবস্থায় হালকা হাঁটাহাঁটি করলে ভালো হয়। ব্যায়াম করলে আপনার পিরিয়ডের ব্যথা কমে যায় এবং মনও শান্তি পায়।
এই দিনগুলিতে আপনি নিজেকে নিয়ে চিন্তিত থাকেন। চিকিৎসার ভাষায় এটি প্রিম্যানস্ট্রুয়াল ডিসফোরিক ডিসঅর্ডার বা পিএমডিডি নামে পরিচিত। এটি প্রধানত ঘটে যখন আপনার মস্তিষ্কের রিসেপ্টরগুলি ওঠানামাকারী হরমোনের প্রতি অস্বাভাবিকভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায়।
মুড সুইংয়ের কোনো স্থায়ী সমাধান না থাকলেও নানাভাবে আপনি আপনার এই সমস্যাকে আয়ত্তে আনতে পারেন। যেমন:
ব্যায়াম
সকালে অথবা বিকেলে হাঁটতে বের হওয়া, বাড়িতে কিছু ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করলে এই মুড সুইং থেকে কিছুটা হলেও রক্ষা পেতে পারেন। এক্সারসাইজের সময় ব্রেইন থেকে এন্ডোরফিন নামের একটি কেমিক্যাল বের হয়, যেটি আমাদের মধ্যে একধরনের সুখানুভূতি তৈরি করে এবং পিএমএসের জন্য দায়ী ক্ষতিকর হরমোনগুলোকে প্রতিহত করে।
সঠিক খাদ্যাভ্যাস
এ সময় একটি হেলদি ফুডচার্ট মেইনটেইন করলে আপনি সুফল পেতে পারেন। এ ছাড়া এই সময়ে জাংক ফুড এবং ক্যাফেইন–জাতীয় খাবার কম খাওয়াই ভালো।
স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট: আপনার স্ট্রেসগুলোকে চিহ্নিত করে সেগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করলে মুড সুইংয়ের মাত্রা কম হতে পারে বলে ধারণা করা যায়।
পিরিয়ডের সময় আপনার সঙ্গিনী হয়ত আপনাকে রেগে গিয়ে কোনো কথা বললেন। তাহলে আপনি পালটা রেগে যাবেন না। বরং তাকে সামলান। তাকে বুঝুন। আপনার সঙ্গিনীকে হাসিখুশি রাখার চেষ্টা করুন। এসময় মেয়েদের খেতে ইচ্ছেই করে না। তাই আপনি চেষ্টা করুন তার পছন্দের খাবার এনে তাকে খাওয়াতে।
তিনি যা চাইছেন তা শোনার চেষ্টা করুন। আর পেট ব্যথা যদি করে তাহলে আপনার সঙ্গিনীর হাতের কাছে এগিয়ে দিন হট ওয়াটার ব্যাগ, না চাইতেই! দেখবেন তিনি হয়ত অবাকই হয়ে গেছেন। আর ভালো করে ম্যাসাজ করে দেওয়ারও কিন্তু কোনো বিকল্প নেই।
Tags – Women’s Mood Swings During Periods
Facial mask for glowing skin: গরমে ত্বকের যত্ন নেওয়ার সবচেয়ে বেস্ট উপায়গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো…
কিসমিস বলতে বাঙালি কিংবা আবাঙালি সকলের বেশ প্রিয়…..নানান জিভে জল আনা পদে কিসমিস ব্যবহার করা…
গরমে ত্বকের জেল্লা ও সৌন্দর্য ধরে রাখা বড়ো একটি চ্যালেঞ্জ এর ব্যাপার….. এর জন্যে নিয়মিত…
In this sun, the harmful ultraviolet rays of the sun seriously damage our skin, and…
শুরু হয়েছে কদিন ধরে গ্রীষ্মের তাপদাহ। কিন্তু এই গরমে কাজের জন্য বাইরে তো বেরোতে হবে।…
গরমের যা তীব্রতা এর মধ্যে বাচ্চা থেকে বুড়ো সকলে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে,, এতো গরমের কারণে…
Leave a Comment