ঋতুস্রাব সম্পর্কে অনেক প্রশ্ন মেয়েদের মনে ঘুরে বেড়ায়। আজকের পোস্টে আমরা আলোচনা করব – পিরিয়ড বা ঋতুস্রাব কী, কেন মেয়েদের ঋতুস্রাব হয় –
মাসিক বা পিরিয়ড কী
ঋতুস্রাব বা পিরিয়ড সাধারণত একটি শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া যেখানে উচ্চ শ্রেণীর স্তন্যপায়ী প্রাণীরা [স্ত্রী লিঙ্গ] প্রজননের জন্য উপযুক্ত হয়। মাসিক বা ঋতুস্রাব প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘটে। যার কারণে একে ইংরেজিতে পিরিয়ড বলা হয়।
ঋতুস্রাবের পুরো প্রক্রিয়াটি এটির মতোই বলা যেতে পারে – মহিলার জরায়ু যে পরিবর্তনগুলি দিয়ে যায় এবং হরমোনের প্রভাবে প্রতি মাসে একজন মহিলার যোনি থেকে বেরিয়ে আসা রক্ত এবং স্রাবকে ঋতুস্রাব বা মাসিক বলা হয়।
ঋতুচক্র হলো প্রাপ্তবয়সী নারীদের দেহে ঘটে যাওয়া একটি চক্র যেটা নারীদের সন্তান উৎপাদনের ক্ষমতা প্রাপ্ত হবার পর থেকে প্রতিমাসে ঘটে থাকে। ঋতুস্রাব ঋতুচক্রের একটি অংশ এবং এবং এটি মেয়েদের শরীরকে গর্ভাবস্থার সম্ভাবনার জন্য প্রস্তুত হতে সাহায্য করে। এ ঋতুচক্রের প্রথম দিনে রক্তপাত হয়ে থাকে।
মাসিক বা পিরিয়ড কেন হয়, এটি কীভাবে ঘটে
একজন মহিলা একটি বয়সে প্রাপ্ত বয়স্ক হন। পিরিয়ড শুরু হয় যখন সে প্রজননের উপযুক্ত হতে শুরু করে; প্রজননের উদ্দেশ্যে একজন মহিলার প্রজনন বয়সে তার দেহে বিশেষ পরিবর্তন হয়। প্রথম ডিম্বস্ফোটন একটি মহিলার ডিম্বাশয়ে হয়। এটি ডিম্বাশয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে- ভাঙা ঝিল্লি, পাশাপাশি শ্লেষ্মা এবং রক্তবাহী রক্ত থেকে উত্পাদিত রক্ত সহ একত্রিত হয়ে তরল অবস্থা তৈরি করে। এর পরে, নিষিক্ত এবং আধা-নিষিক্ত ডিমের সাথে এটি মিশ্রিত হয় এবং এটি ৩-৬ দিনের জন্য একটানা যোনি থেকে ঝরতে শুরু করে। এই স্রাবকে সাধারণত মাসিক বা ঋতুস্রাব বা পিরিয়ড বলা হয়। কখনও কখনও এটিকে গর্ভপাতও বলা হয়।
পিরিয়ড কখন শুরু হয়
যখন কোনও মেয়ে ১০-১২ বছর বয়সে পৌঁছায়, অর্থাৎ শৈশব থেকে কৈশোরে পৌঁছায় তখন কিছু শারীরিক পরিবর্তন সাধিত হয়। যেমন:
উচ্চতা বাড়ে
স্তন বড় হয়
বগল এবং যৌনাঙ্গে চুল গজায়
কোমর সরু
উরু এবং নিতম্ব ভারী হয়
পিরিয়ড / মাসিক কত দিন এবং মাসিক চক্র কত বছর স্থায়ী হয় –
পিরিয়ড একটি মেয়ের শরীরে একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া যা মেয়েরা সাধারণত ৯-১৩ বছর বয়সে ঋতুস্রাব শুরু করে এবং ৪৫-৫৫ বছর বয়স পর্যন্ত প্রতি মাসে চালিয়ে যায়। শারীরিক বৃদ্ধি এবং পরিবেশ ঋতুস্রাবের সূচনার জন্য মূলত দায়ী।
পিরিয়ডের লক্ষণগুলি
পিরিয়ডের আগে বেশ কয়েকটি লক্ষণ রয়েছে। ঋতুস্রাবের সময় মেয়েদের মধ্যে বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। যেমন:
মাথা ব্যথা
মাথা ঘোরা
খিদে পাচ্ছে না
বমি বমি ভাব
স্তন ফোলা
ঘুমের সমস্যা
কিছু মহিলার মধ্যে মুড স্যুইং এবং জ্বালা হয়
ঋতুচক্রের সময় কি ঘটে?
ঋতুচক্রের প্রথম অর্ধেকে নারীর দেহের ইস্ট্রোজেন হরমোন লেভেল বাড়তে থাকে আর এর প্রভাবে জরায়ুর আস্তরণ বৃদ্ধি পায় এবং পুরু হয়ে যায়। এদিকে পিটুইটারি থেকে নিঃসৃত ফলিকল-উত্তেজক (follicle-stimulating) এর প্রভাবে একটা ডিম (ডিম্বানু) যেকোনো একটা ডিম্বাশয়ে mature হতে শুরু করে।
ঋতুচক্রের দ্বিতীয় অর্ধেকে ডিম্বকটি ফ্যালোপিয়ান নল (fallopian tube) থেকে জরায়ুতে ভ্রমণ করে।
এ সময়ের মধ্যে যদি কোনো শুক্রানু (যৌন মিলনে পুরুষ থেকে যদি শুক্রানু নারীরে জরায়ুতে যায়) এসে ডিম্বানুকে নিষিক্ত করতে পারে এবং সেই নিষিক্ত ডিম যদি জরায়ুর আস্তরনের সাথে ভালোমত সংযুক্ত হতে পারে, তখনই গর্ভাবস্থা তৈরি হয়, অর্থাৎ সেই নারী তখন গর্ভবতী।
ঋতুচক্রের এই সময় জড়ায়ুর সেই পুরু আস্তরণটি অর্থাৎ টিস্যু এবং সাথে কিছু রক্ত যুক্ত হয়ে যোনিপথ (vaginal canal) দিয়ে বের হয়ে যায়। একটা নারীর পিরিয়ড প্রতিমাসে এরকম নাও হতে পারে, এমনকি অন্য কোনো নারীর সাথে নাও মিলতে পারে।
একটি প্রাপ্তবয়স্ক মেয়ের মাসিক শুরুর প্রথম কয়েক বছর মাসিক অনিয়মিত হতে পারে। আবার মেনোপজের (menopause) এর আগেও অনিয়মিত হতে পারে।
পিরিয়ডের সময়কালে করণীয়
মাসিক বা ঋতুস্রাবের সময় খাবারের দিকে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া উচিত। শুধু মাসিক নয় পুরো মানব জাতির বেঁচে থাকার একটি অপরিহার্য অংশ হচ্ছে খাদ্য। তাই এই সময়ে একটু অতিরিক্ত যত্ন নিতে হবে। ফলস্বরূপ, মেয়েরা বিভিন্ন রোগ এবং সমস্যা থেকে মুক্ত থাকতে সক্ষম হবে।
পিরিয়ডের সময় কী খাবেন
শাকসব্জীযুক্ত খাবার: ডাল, সবুজ শাকসবজি, দই, আলু ইত্যাদি
আমিষযুক্ত খাবার: দুধ, ডিম, বাদাম, মাছ, মাংস, লিভার ইত্যাদি
আয়রন জাতীয় খাবার: ডিম, মটরশুটি, শাক, আলু, কলা, আপেল, গুড়, খেজুর, ব্ল্যাকবেরি ইত্যাদি
ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার: বাদাম, সয়াবিন, সবুজ শাকসবজি।
টাটকা ফলের রস (বিশেষত ডালিম)।
প্রচুর জল পান করা।
এই সময়ে চা এবং কফি এড়িয়ে যাওয়া উচিত
ঋতুস্রাব না হওয়া-
১৬ বছর বয়সেও একজন মহিলার ঋতুস্রাব চক্র শুরু না হওয়া মানে তার প্রাথমিকভাবে অ্যামোনিয়ারিয়া থাকে। এটি পিটুইটারি গ্রন্থির ক’টি সমস্যা যা, মহিলা প্রজনন পদ্ধতির জন্য হয়।
পিএমএস সময় ব্যথা অনুভব করাটা স্বাভাবিক। সাধারণত এই ধরণের অসুবিধা হয় এক-দিনের মধ্যে কমে যায়। কিন্তু কিছু মহিলারা এত ব্যথা অনুভব করে যে তারা বিছানা থেকে উঠতে পারেন না। তার সাথে বমি ভাব, বমি, মাথাব্যাথা, বা ডায়রিয়াও হয়। ব্যায়াম ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে। এছাড়া প্যারাসিটামল বা অন্য কোন ব্যাথার ঔষধেও কাজ দেয়।
অস্বাভাবিক ঋতুস্রাব
সাধারণত দুই থেকে সাত দিন পর্যন্ত ঋতুস্রাব হয়, আসলে ঋতুস্রাব পাঁচ দিন পর্যন্ত হয়। অনিয়মিতঋতুস্রাব বয়ঃসন্ধিকালে এবং মেনোপজের আগেই হতে পারে। পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম (পিসিওএস) ও ঋতুস্রাব অনিয়মিত হবার একটি কারণ।
Tags – Period Or Menstruation
আজকাল কতো কিছু প্রোডাক্ট ইউজ করেও চুল পড়া বন্ধ করা যাচ্ছে না....চুলের সঠিক যত্ন ও…
Healthy Skin Tips For Face: সারা বছর ফেসিয়াল না করলেও পুজোর আগে সকলে আমরা ফেসিয়াল…
আজকাল মেকাপে মেতেছে সারা দুনিয়ার মানুষ,, বাচ্চা থেকে বয়স্ক সকলের মধ্যেই একটি ক্রেজ লক্ষ্য করা…
Bengali Durga Puja saree look: দেখতে দেখতে বছর গড়িয়ে চলে এলো দুর্গাপুজো….. সেপ্টেম্বরের মাঝ থেকেই…
মেয়েদের কাছে চুল হলো অমুল্য রত্ন ,, কিনতু আজকাল দূষণের কারনে, শারীরিক প্রবলেমের জন্য সকলের…
এই ভ্যাপসা গরমে ত্বকের উজ্জ্বলতা হারিয়ে ফিকে পড়ে যায়…. কিনতু সামনেই তো পুজো এখন থেকেই…
Leave a Comment