বিয়ের আগে যেসব স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা অন্তত্য জরুরি! জেনে নিন সেগুলি কি কি – The Most Important Health Check Before Marriage! Find Out What They Are
একটি সুখী এবং স্বাস্থ্যকর বৈবাহিক সম্পর্কের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক রয়েছে তা হচ্ছে দম্পতির স্বাস্থ্য। আপনার জীবনের বাকি সময়টি কারও সাথে কাটানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আপনার নিজের এবং আপনার সঙ্গীর মেডিকেল অবস্থা সম্পর্কে সচেতন হওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
বিয়ের আগে যেসব স্বাস্থ্য পরীক্ষা জরুরি
বিয়ের আগে মেডিকেল টেস্ট কেন প্রয়োজন
বিয়ে মানবসমাজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এক অধ্যায়। কাজেই এ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে ভেবে চিন্তে নেয়াই শ্রেয়, বিশেষ করে স্বাস্থ্যগত দিক থেকে। বিভিন্ন দেশে বিয়ের আগেই পাত্রপাত্রীরা জেনে নেন তার হবু জীবন সঙ্গী কোনো ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত কি না।
বিয়ের মাধ্যমে দু’জনের মধ্যে আত্মার সম্পর্ক সৃষ্টি হয়। তবে দাম্পত্য বিভিন্ন কারণে সম্পর্কে ফাটল দেখা দেয়। শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা কিংবা রোগব্যাধির কারণে অনেক সময় বিয়ের পর দু’জনের মধ্যে ঝামেলার সৃষ্টি হয়।
বিয়ের আগে রক্তের যেসব পরীক্ষা জরুরি
সুস্থ সুন্দর বৈবাহিক জীবনের পূর্বশর্ত হচ্ছে স্বামী স্ত্রী উভয়ের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা। বিয়ের আগে অন্যান্য আলোচনার পাশাপাশি উভয়ের স্বাস্থ্য পরীক্ষার বিষয় নিয়েও আলোচনা হওয়া উচিত।
আসুন তাহলে বিয়ের আগে অবশ্যই করতে হবে এমন কিছু মেডিকেল টেস্ট সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক –
থ্যালাসেমিয়া
আনিকা এবং রাহাতের মত হাজারো দম্পতি আছেন যারা নিজের সন্তানের অসুস্থতা থেকে নিজেদের থ্যালাসেমিয়া স্ট্যাটাস সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত রোগীর রক্তের লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদন কমে যায়, ফলে হিমোগ্লোবিন কমে এনিমিয়া বা রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। নির্দিষ্ট সময় পর পর ব্লাড ট্রান্সফিউশন করে এনিমিয়া নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
স্বামী এবং স্ত্রী উভয়েই যদি থ্যালাসেমিয়া বাহক হয়, তাহলে তাদের সন্তানের ‘থ্যালাসেমিয়া মেজর’ হবার ঝুঁকি ২৫ শতাংশ। যদি স্বামী বা স্ত্রীর মধ্যে যেকোন একজন বাহক হয়, তবে সন্তানের থ্যালাসেমিয়া হবার কোনো সম্ভাবনা নেই
এইচআইভি
বিয়ের আগে হবু বর ও কনের এইচআইভি পরীক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি। এক্ষেত্রে রক্ত, শরীরের সিরাম নিয়ে পরীক্ষা করা হয়। এই পরীক্ষা করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধকারী ক্ষমতা রোধকারী ভাইরাসের উপস্থিতি জানা যায়।ওই ব্যক্তি যৌন সম্পর্ক করলে তা সঙ্গীর শরীরে এমনকি গর্ভের সন্তানেরও হতে পারে এইডস। যদি হবু বর বা কনের কারও এইচআইভি সংক্রমণ থাকলে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আরও কয়েকবার ভাবা উচিত।
নারীর ওভারি পরীক্ষা
বর্তমানে অনেক নারীই বেশি বয়সে বিয়ে করেন। আবার অনেক নারীদের জীবনযাত্রাতেও এসেছে পরিবর্তন। অনেকেই এখন ধূমপান, মদ্যপান বা অন্যান্য নেশায় আসক্ত। ওভারিতে সমস্যা থাকলে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ডিম্বাণু তৈরির পরিমাণ কমতে শুরু থাকে। তাই বিয়ের পর সন্তান ধারণে সমস্যা হতে পারে।
এসটিডি পরীক্ষা
নারী-পুরুষ উভয়েরই এসটিডি বা যৌন রোগের পরীক্ষা করা উচিত।
রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা
হবু বর ও কনের রক্ত পরীক্ষা করানো জরুরি। কারণ স্বামী-স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ একে অপরের সঙ্গে সামঞ্জস্য না থাকলে গর্ভাবস্থায় সমস্যা দেখা দেয়।
ব্লাড ডিসঅর্ডার পরীক্ষা
বিয়ের আগে নারীর ব্লাড ডিসঅর্ডার পরীক্ষা করানো উচিত। এই পরীক্ষা করালে জানা যাবে হবু কনে রক্তাল্পতায় ভুগছেন কি না।
মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা
একটি সুখী দাম্পত্য জীবন গড়তে দু’জনকে মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে। কেউ হয়তো অতিরিক্ত রাগ করেন, আবার কারও সন্দেহপ্রবণতা বেশি, হঠাৎ হতাশ হয়ে পড়া, অবসন্নতা ইত্যাদি সমস্যা মানসিক রোগের কারণ হতে পারে।তাই বিয়ের পর ঝামেলা এড়াতে আগেই সঙ্গীর মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানুন পরীক্ষার মাধ্যমে।
ব্লাড গ্রুপ কম্প্যাটিবিলিটি টেস্ট
আমরা সবাই জানি আমাদের রক্তের গ্রুপ বেশ কয়েক ধরণের হতে পারে, যেমন – A, B, O এবং AB। এইগুলি আবার পজিটিভ এবং নেগেটিভ হতে পারে।
আপনার ব্লাড গ্রুপ পজিটিভ হোক বা নেগেটিভ তাতে আপনার স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় কোনো ব্যাঘাত ঘটবে না। অর্থাৎ যে কোনো গ্রুপের রক্তের যে কেউ, অন্য যেকোন গ্রুপের ব্যক্তিকে বিয়ে করে সংসার বাঁধতে পারেন।
সিমেন পরীক্ষা
সন্তান না থাকলে ঘর খালি খালি লাগে। মেয়েদের যেমন হতে পারে বন্ধ্যাত্ব, পুরুষেরও এটি হতে পারে। হিসেবে প্রায় অর্ধেক অর্ধেক। তাই হবু স্বামীর সিমেন বা বীর্য পরীক্ষা করার পাশাপাশি দুজনেরই রক্তের হরমোন যেমন এফএসএইচ, টিএইচএস, টেস্টেটেরোন, ইস্ট্রোজেন, প্রোল্যাকটিন পরীক্ষা করতে পারেন।
Tags – Life Style