আসলে কোলেস্টেরল হলো রক্তে থাকা মোমজাতীয় এক পদার্থ। শরীরে ভালো ও খাবার দুটো কোলেস্টেরলই বিদ্যমান থাকে। শরীরে খারাপ কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়া এক গুরুতর অসুখ। অনেকেই হাই কোলেস্টেরলে ভোগেন।
মোমজাতীয় পদার্থ কোলেস্টেরল শরীরে বেশি থাকলে তা রক্তনালির ভেতরে জমা হয়। এক্ষেত্রে যেই রক্তনালিতে কোলেস্টেরল জমে সেখানে রক্ত চলাচলে বাঁধার সৃষ্টি হয়।
এমনকি এর থেকে ব্রেইন স্ট্রোকও হতে পারে। তাই প্রতিটি মানুষের উচিত কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করা। তবে অনিয়মিত জীবনযাপন ও ভুল খ্যাদ্যাভ্যাসের কারণে শরীরে খারাপ কোলেস্টেরল জমতে শুরু করে।
কোলেস্টেরল জিনিসটা কী?
কোলেস্টেরল এক ধরনের চর্বি। এটি কয়েক ধরনের হয়ে থাকে ট্রাইগ্লিসারাইড, এলডিএল, এইচডিএল এবং টোটাল কোলেস্টরল। এর মধ্যে একটা হলো উপকারী। আর তিনটি শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
এই কোলেস্টেরল জমা হয় রক্তনালিতে। জমা হতে হতে রক্তনালির স্বাভাবিক যে রক্তস্রোত তা বাধাগ্রস্ত হয়। এর ফলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
কোলেস্টেরল বাড়লে ত্বকে যে সব লক্ষণ দেখা যায়
রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইড আর কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়লে সেখান থেকে একাধিক শারীরিক সমস্যা আসে। রোজকার জীবনযাত্রা, খাদ্যাভ্যাস, স্ট্রেস এসবই কিন্তু কোলেস্টেরল বৃদ্ধির জন্য দায়ী। সেই সঙ্গে অনেকেই মনে করেন স্ট্রেস কাটাতে সেরা দাওয়াই হল ধূমপান। আর তাই মাত্রাহীন ভাবেই চলতে থাকে ধূমপান-মদ্যপান। এতেই কিন্তু শরীরের বেশি ক্ষতি হয়।
রোজ যদি রুটিন ছাড়া ভাবে তেল-মশলাদার খাবার, মদ্যপান চলতে থাকে তাহলে রক্তনালীতে কোলেস্টেরল জমতে শুরু করে। ফলে স্ট্রোক বা হৃদরোগের সম্ভাবনা বেড়ে যায় অনেকখানি।
অনেকের চোখের উপরে আর নীচে হলুদ রঙের চর্বি জমা হয়। খানিকটা মোমের মত। চোখের চামড়াতেও একটা হলদেটে আস্তরণ পড়ে। এছাড়াও পায়ের ত্বকে আর পায়ের পিছনের দিকেও এই হলুদ রঙের মোমর আস্তরণ পড়ে।
কোলেস্টেরল বাড়ার অন্যতম লক্ষণ হল ত্বকের রং পরিবর্তন। কোলেস্টেরল ত্বকের নীচে জমতে শুরু করলে রক্তপ্রবাহ কমে যায়। রক্তপ্রবাহ কমতে শুরু করলে ত্বক যথাযথ পুষ্টি পায় না।
অত্যধিক লাল মাংস খেলেও শরীরে কোলেস্টেরল বেড়ে গিয়ে রক্তনালিতে জমতে পারে। কারণ মাংসে থাকে অনেক চর্বি।
>> বর্তমানে ছোট-বড় সবার মধ্যেই ফাস্টফুড খাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। ফাস্টফুডের মতো বাইরের খাবার খেলে শরীরে অনেক সমস্যাই দেখা দিতে পারে।
সেক্ষেত্রে এই খাবারে লবণ, তেল, মসলা সবই থাকে বেশি। আর এই সব খাবার শরীর খারাপ করতে পারে। তাই প্রতিটি মানুষকে বিষয়টি নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
>> চিজ বা মাখনেও থাকে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট। যা রক্তনালিতে কোলেস্টেরল জমায়।
এই কয়েকটি খাবার থেকে দূরে থাকতে পারলেই সমস্যা অনেকটা কমানো সম্ভব। এর পাশাপাশি বছরে একবার হলেও কোলেস্টেরলের মাত্রা পরিমাপ করুন। দিনে ৪৫ মিনিট সময় বের করে শরীরচর্চা করুন। তাহলেই সুস্থ থাকবেন।
অ্যালোভেরা- প্রতিদিন খালি পেটে ৫০ গ্রাম অ্যালোভেরা খেলে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
ধনে- সারারাত ধরে জলে ধনেকে ভিজিয়ে রাখুন, সকালে উঠে তা পান করুন।
অঙ্কুরিত শস্য- অঙ্কুরিত শস্য হৃদয়ের জন্য ভালো এটা বলা ভুল হবে না। প্রতিদিন অঙ্কুরিত শস্য গ্রহন করলে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতে পারে।
আপনি প্রতিদিন যেকোনো স্যুপ, সালাদ কিংবা সব্জির সাথে কমপক্ষে অর্ধেক কাপ রাজমা, মুং, সোয়া বিন কিংবা বিউলির ডাল নিতে পারেন।
ওটস- এক স্বাস্থ্যকর দিনের শুরু করুন প্রাতঃরাশে ওটস খেয়ে। ৬ সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন সকালে ওটস খেলে, এলডিএল ৫.৩% কমে।
গ্রিন ট্রি- কফির তুলনায় গ্রিন ট্রির মধ্যে ক্যাফিনের পরিমাণ কম থাকে। এর মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় এটি শরীরকে সুস্থ রাখে।
প্রতিদিন গ্রিন ট্রি পান করলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায় এবং খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যায়।
মাছ- যারা মাছ খায় তাদের পক্ষে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানো সহজ হয়। আসলে আমাদের শরীরে ফ্যাটি অ্যাসিড এবং এমিনো অ্যাসিডের প্রয়োজন থাকে।
শুকনো ফল-আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের মতে, শুকনো ফল আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এতে প্রচুর প্রোটিন ফাইবার এবং ভিটামিন-ই রয়েছে।
যে ব্যক্তি কোলেস্টেরলের সময় ভুগছেন তাদের সপ্তাহে পাঁচ দিন যোগব্যায়াম করা উচিৎ। জগিং, সাঁতার কাটা, সাইকেল চালানো এবংঅ্যারোবিক্স করতে পারেন।
আর কিছু না হলে রোজ অন্তত আধ ঘণ্টা হাঁটুন।
স্বাস্থ্যকর খাদ্য খান- কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখার জন্য ফ্যাট জাতীয় খাবার খাবেন না। যেসব খাবার থেকে পুষ্টি পাওয়া যায় সেই সব খাবার খেতে পারেন।
চেষ্টা করুন ডিমের হলুদ অংশ, তৈলাক্ত খাবার, চিস জাতীয় খাবার, ক্রিমযুক্ত দুধ এবং রেড মিট ইত্যাদি ত্যাগ করতে।
প্রত্যেকটি মানুষের উচিত নিয়ম করে বছরে অন্তত দুবার কোলেস্টেরল পরীক্ষা করানো। কেলেস্টেরল বাড়তে থাকলে চুপিসাড়ে শরীপের একাধিক ক্ষতি হয়। হার্ট অ্যার্টাকের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন না করে প্রথম থেকেই নজর রাখুন জীবনযাত্রায়।
Tags – Health Tips Health Care Cholesterol
মেয়েদের কাছে চুল হলো অমুল্য রত্ন ,, কিনতু আজকাল দূষণের কারনে, শারীরিক প্রবলেমের জন্য সকলের…
এই ভ্যাপসা গরমে ত্বকের উজ্জ্বলতা হারিয়ে ফিকে পড়ে যায়…. কিনতু সামনেই তো পুজো এখন থেকেই…
ভিটামিন ই ত্বক ও চুলের যত্নে দারুণ কাজে আসে। শরীরের নানা উপকার করে। হাড়ের যত্ন…
Stomach Care : শরীর সুস্থ্য রাখতে চাইলে পেট অবশ্যই পরিষ্কার রাখা খুব প্রয়োজন…. এটি শরীর…
আজকাল বাচ্চা থেকে বয়স্ক সকলেরই ফুসকুড়ির সমস্যা হয়ে থাকে…. গরম থেকে হওয়া ফুসকুড়ি- ব্যথা ও…
এই গরমে রোদে কাজের জন্যে বেরোতেই হয়…. আর এর জন্য মুখ তৈলাক্ত হয়ে যায় ভীষণ…
Leave a Comment