শিখে রাখুন নিজেকে চনমনে রাখার কৌশল – Learn Techniques To Keep Yourself Calm
লকডাউন এ সামাজিক দূরত্বজনিত হতাশা, বাড়ি থেকে বেরোতে না পারার একঘেয়েমি আর সেই সঙ্গে অবশ্যই চাকরিক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা। দীর্ঘদিন এই পরিস্থিতি চলায় সব মিলিয়ে এক আশ্চর্য বিশাদ আর নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে শুরু করেছেন অনেকে, কেউ কেউ খিটখিটে হয়ে যাচ্ছেন, কেউ আবার অতিরিক্ত সন্দেহপ্রবণতায় ভুগছেন। খাওয়া-ঘুমও লাটে উঠেছে অনেকের।
নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবেন না, শিখে নিন নিজেকে চনমনে রাখার কৌশল
সকাল থেকেই ভালো থাকার শুরুদিনের শুরু হওয়া চাই স্নিগ্ধ, সুন্দর ও ঝলমলে সকাল দিয়ে। সারা দিন উজ্জীবিত থাকতে চাইলে অবশ্যই সকালে ওঠা উচিত। সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠতে পারলে দিনটি অনেক বড় হয়ে যায়। ভোরে ঘুম থেকে উঠলে একটু বেশি সময় নিয়ে সারা দিনের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করা যায়। শরীর ভালো থাকলেই মন ফুরফুরে থাকে। মন ফুরফুরে রাখতে সকালে ঘুম থেকে উঠে হাঁটুন। হাঁটলে স্বাস্থ্য ও শরীর ভালো থাকে। সকালে নিয়মিত হেঁটেই নিজেকে ফুরফুরে রাখতে পারবেন।
সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে জল পান উপকারী। যদি শুধু জল পান করতে ভালো না লাগে, তবে জলে এক টুকরো তাজা লেবু চিপে নিয়ে পান করুন। সারা দিনের জন্য আপনার শরীর তরতাজা হয়ে উঠবে। শারীরিক ও মানসিকভাবে কাজের প্রস্তুতি নিতে সারা দিনের একটি ছক তৈরি করুন মনে মনে।
কাজে বের হওয়ার আগে স্নান করা উচিত। স্নান না করে তাড়াহুড়া করে বের হওয়া উচিত নয়। সকালে স্নান করার অভ্যাস মনকে সতেজ করে। তারপর সকালের খাবার সেরে নিন। ভালো খাবার খেলে মনও ফুরফুরে থাকে। ব্রেকফাস্ট এর সঙ্গে রাখতে পারেন এক কাপ গরম গ্রিন টি। শরীরকে ঝরঝরে ও চাঙা রাখতে এটির কোনো বিকল্প নেই।
কীভাবে নিজেকে ফুরফুরে রাখবেন
কর্মক্ষেত্রে
অফিসে ফুরফুরে মেজাজে থাকা সবচেয়ে কঠিন কাজ। পরিবারের সবাই মোটামুটি বুঝে গেছে আপনাকে। কিন্তু সমস্যায় পড়তে হয় অফিসে। অফিসে সব সময় মনের মতো পাবেন না। অফিসে আপনাকে অনেক ধরনের মানুষের সঙ্গে কাজ করতে হয়। সবারই আলাদা চরিত্র থাকে। তাই অফিসে সব সময়ই নিজেকে একটু মানিয়ে চলতে হবে। এ জন্য অনেক কিছু ভালো না লাগলেও ছাড় দিতে হবে। যদি মেজাজ খারাপ হয়েই যায়, বেশিক্ষণ তার সামনে না থেকে কাজ থেকে একটু অবসর নিয়ে হাঁটাহাঁটি করুন।
অফিসে একনাগাড়ে কাজ করে ক্লান্ত হয়ে গেলে নিজের আসনে একটু আয়েশ করে মৃদু শব্দে পছন্দের কোনো গান বা কবিতা শুনুন।
গান এমন একটি জিনিস, যা যেকোনো পরিস্থিতিতে আমাদের মন ভালো করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে।
অফিসে যাওয়ার সময় বা অফিস থেকে বাসায় ফেরার সময় নিজের পছন্দের গান শুনতে পারেন। মন বেশ ফুরফুরে থাকবে। এবং দেখবেন, অফিসে যাওয়ার আসার সময়টুকু ভালো কাটবে। শরীরকে ভালো রাখতে, প্রফুল্ল রাখতে যোগব্যায়াম করতে পারেন। যোগব্যায়াম শেষে দেখবেন, আপনার শরীর ও মন আগের চেয়ে অনেক বেশি ফুরফুরে।
দিনের শেষে
কাজ শেষে বাড়িতে ফেরার পর শরীর আর মন দুটোতেই ক্লান্তি ভর করে। শরীর ও মনকে ফুরফুরে রাখতে বাড়ি ফিরেই ভালো করে স্নান করা উচিত৷ এতে আপনার ক্লান্তি দূর হবে। সিনেমা দেখতে পারেন। হাতে সময় থাকলে সৃজনশীল কিছু করতে পারেন। সারা দিনের ব্যস্ততার কারণে কাছের মানুষদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় না। রাতে বাসায় ফিরে আত্মীয়স্বজন বা বন্ধুর সঙ্গে কথা বলতে পারেন। মাঝেমধ্যে প্রিয়জনের সঙ্গে অফিসের পর কফিশপে আড্ডা দিতে পারেন৷
এরকম সমস্যা হলে প্রাথমিকভাবে বিষয়টা সম্পর্কে সচেতন হতে হবে নিজেকেই। খুব ভালো করে ভেবে দেখুন তো কেন আপনার আচরণ বদলে যাচ্ছে? যদি মনে হয় সাম্প্রতিক পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণেই আপনার এই সমস্যা শুরু হয়েছে, তা হলে নিজেকে কিছু জিনিস বোঝাতে হবে।
নিজেকে বোঝান কোনও কিছুই চিরস্থায়ী নয়
এই পরিস্থিতি একদিন না একদিন কেটে যাবে। জীবনে সমস্যা আসবেই, এবং তার সমাধানও পাওয়া যাবে।
মন শান্ত রাখুন
দিনের মধ্যে অন্তত মিনিট দশেক মনটা শান্ত করে বসুন। এই সময়টায় মনে কোনও চিন্তা আসতে দেবেন না। জোরে শ্বাস নিন। এতে শরীরে পজিটিভ হরমোন বাড়বে, মন শান্ত থাকবে।
সারাক্ষণ নেতিবাচক খবর খুঁজবেন না
খবর অবশ্যই রাখুন, কিন্তু সেটাই যেন আপনার একমাত্র কাজ না হয়। সোশাল মিডিয়া বা নিউজ চ্যানেল দেখার সময়টা বেঁধে নিন, তা না হলে অহেতুক উদ্বেগ বাড়বে।
ডায়েরি রাখুন
এই কঠিন সময়ে অনেকেই তাঁদের প্রিয়জনের সঙ্গ পাচ্ছেন না। তাতে বাড়ছে টেনশন। মনের কথা যদি প্রকাশ করতে না পারেন, ডায়েরিতে লিখে রাখুন। তাতে মন অনেকটা শান্ত লাগবে।
এই কঠিন সময়ে অনেকেই তাঁদের প্রিয়জনের সঙ্গ পাচ্ছেন না। তাতে বাড়ছে টেনশন। মনের কথা যদি প্রকাশ করতে না পারেন, ডায়েরিতে লিখে রাখুন। তাতে মন অনেকটা শান্ত লাগবে।
ইতিবাচক চিন্তা করুন
নিরাশা বা নিরাপত্তাহীনতায় একবার ভুগতে শুরু করলে কিন্তু তার কোনও শেষ নেই! তাই কখনওই নিজেকে সেই তলানিতে ডুবে যেতে দেবেন না। জোর করে ইতিবাচক রাখুন নিজেকে।
Tags – Keep Yourself Calm Life Style