সেনসিটিভ ত্বকের যত্ন – Sensitive Skin Care
এমন অনেকেই আছেন, যাঁদের ত্বক খুব স্পর্শকাতর। অন্যদের কথা কিবা বলবো আমার নিজেরই খুব সেনসিটিভ ত্বক,, তাই আমি জানি এই ত্বকের হাজার রকমের সমস্যা যা মন চায় তা কিছু ত্বকে ব্যবহার করতে পারি না,, খুব বেছে বেছে ত্বকে প্রোডাক্ট ইউজ করতে হয়। তাপমাত্রা বা সূর্যালোকের সামান্য এদিক-ওদিক হলেই ত্বকে র্যাশ বেরোতে আরম্ভ করে, লাল হয়ে যায়। আর অবশ্যই ঘরোয়া প্যাক ব্যবহার করার আগেও গালের কাছে অল্প একটু লাগিয়ে দেখে নিন কোনও রিঅ্যাকশন হচ্ছে কিনা। খুব গরম বা ঠান্ডা জল দেবেন না মুখে, জোরে ঘষাঘষি করে তোয়ালে দিয়ে মোছা বা প্যাক তোলার চেষ্টাও না করাই ভালো। অনেকেই আছেন যারা বাইরে থেকে এসে মুখ না ধুয়েই শুয়ে পড়েন। সারাদিনের ধুলো, মেকআপ এগুলো যে ভালোভাবে পরিস্কার করা উচিত সেটা ভুলে যান। মেকআপ ঠিকভাবে না তুললে কিন্তু স্কিনের প্রচণ্ড ক্ষতি হয় আর স্কিন যদি সংবেদনশীল হয় তাহলে তো আর কথাই নেই। সেনসিটিভ স্কিনে মেকআপ তোলার জন্য অলিভ অয়েল কিম্বা খুব মাইল্ড কোন মেকআপ রিমুভার ব্যবহার করুন।।।।
সেনসিটিভ স্কিন আসলে কি?
সংবেদনশীল (Sensitive) ত্বকের যত্ন নেবার আগে যে সংবেদনশীল ত্বক ব্যাপারটা কি সেটি জেনে নিন। যখন স্কিন একেবারে রুক্ষ হয়ে যায় কিম্বা স্কিনে দানা, ব্রণ, লালচে ছোপ, র্যাশ, অ্যালার্জি অথবা অন্য স্কিনের সমস্যা দেখা দেয় তখন সেটা সেনসিটিভ স্কিনের লক্ষণ। এমতাবস্থায় ত্বকে টান ধরে এবং শুষ্ক হয়ে যায়। এই ধরনের ত্বকের যত্ন নেওয়াটা সারা বছরই কিন্তু ভীষণ জরুরি।।
সেনসিটিভ স্কিনের যত্ন –
চন্দন আর শসার রস: চন্দন বেটে নিন, তার সঙ্গে মেশান শসার রস। শসা কুরে চেপে রসটা বের করে নিলেই হবে। শীতকালে এর মধ্যে সামান্য পরিমাণে দুধের সর মেশানো যায়। এই প্যাক মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে তুলে ঠান্ডা জলে মুখ ধুয়ে নিন। তার পর অ্যালো ভেরা জেল লাগিয়ে নেবেন।
সেনসিটিভ ত্বকের প্যাক
অ্যালো ভেরা জেল, দই: বাড়িতে পাতা টক দই আর অ্যালো ভেরা জেল ভালো করে মিশিয়ে নিন। চোখের চারপাশ বাদে পুরো মুখে এক পরত প্যাক লাগান। তার পর ঠান্ডা জলে ধুয়ে ফেলে আলতো হাতে মুখের জল শুকিয়ে নিন।।
গাজর আর দুধ: গাজর কুরে তার রস বের করে নিন। কাঁচা এবং মাঠাযুক্ত দুধের সঙ্গে সেটা মেশান এবং মুখ লাগান। প্যাক লাগানোর আগে অতি অবশ্যই মুখটা খুব ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। এই প্যাক ত্বকের জেল্লা বাড়িয়ে দেবে।।
কাঁচা হলুদ আর দুধের সর: কাঁচা হলুদ কুরে রস বের করে নিন, সেটা সরের সঙ্গে মিশিয়ে আধ ঘণ্টা ফ্রিজে রাখুন। বের করে মুখে লাগান। ২০ মিনিট পর ভালো করে মুখ ধুয়ে নিলেই চলবে!
সেনসিটিভ ত্বকের জন্য দারুণ উপকারী উপাদান
প্রাকৃতিকভাবে উজ্জ্বল ত্বক পাবার জন্য অনেকেই মধু ব্যবহার করেন। একটা কাঁচের বা চিনামাটির বাটিতে দুই টেবিল চামচ মধু আর দুই চা চামচ দারচিনি পাউডার ভালো করে মিশিয়ে মুখে আর গলায় লাগিয়ে নিয়ে ১৫ মিনিট রেখে দিন।
আর মনে রাখবেন –
ত্বকের আর্দ্রতা যেন না কমে (Keep Yourself Hydrated)
অনেকের একটা ধারনা আছে যে অয়েলি স্কিনে ময়েশ্চারাইজার লাগানোর দরকার হয়না, এ’ধারনা খুব ভুল। সব রকমের স্কিন টাইপেই তার আর্দ্রতা বজায় রাখাটা ভীষণ প্রয়োজন; আর ত্বক যদি সেনসিটিভ হয় তাহলে তো বেশি করে ময়েশ্চারাইজ করা দরকার। এছাড়া ময়েশ্চারাইজার ত্বকের রুক্ষতা দূর করে ত্বককে নরম করতে সাহায্য করে যার ফলে ইনফেকশন এবং র্যাশের আশঙ্কা কমে যায়।।।
সেনসিটিভ ত্বকের ময়েশ্চারাইজার
সেনসিটিভ স্কিনে কোন কোন প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে পারেন (Products for Sensitive Skin)
কেমিক্যালযুক্ত যে কোন প্রোডাক্ট থেকে দূরে থাকাটাই শ্রেয়, বিউটি প্রোডাক্ট কেনার আগে ভালো করে একবার উপকরণের তালিকা দেখে নেবেন। একটা কথা মনে রাখবেন, যত কম উপকরণ সেই প্রোডাক্ট ততো বেশি ভালো, অর্থাৎ স্কিনের পক্ষে ভালো। কোনো জিনিসে রাসায়নিক পদার্থ বেশি পরিমানে থাকে যা আপনার ত্বককে আরও বেশি সংবেদনশীল করে তুলতে পারে এবং এতে র্যাশ, চুলকানি কিম্বা ব্রনর মতো নানা ধরনের ত্বকের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
সেনসিটিভ ত্বকের যত্ন নিবেন যেভাবে
নিজের জন্য সঠিক প্রোডাক্ট কীভাবে বাছবেন (Choose Right Products for Your Skin)
যতটা সম্ভব কেমিক্যাল-ফ্রি এবং অরগানিক প্রোডাক্ট ব্যাবহার করুন। যেসব সাবান, ক্রিম, ফেস ওয়াশ কিম্বা শ্যাম্প্যুতে অতিরিক্ত কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় সেগুলো না লাগানোই ভালো, কারণ সেনসিটিভ স্কিনে খুব বেশি রিঅ্যাকশন দেখা যেতে পারে এইসব রাসায়নিক থেকে। চেষ্টা করবেন প্রাকৃতিক উপাদান যেমন নিম, হলুদ, অ্যালোভেরা, চন্দন ইত্যদি যুক্ত প্রোডাক্ট নিয়মিতভাবে ব্যবহার করুন। হাইপো অ্যালার্জিক স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট বাছুন, যার পি এইচ ব্যালান্স সেরকম প্রোডাক্ট সেনসিটিভ স্কিনের জন্য ভালো, এতে জ্বালা, লালচে ভাব, চুলকানি কিম্বা অন্য ইনফেকশন হবার আশঙ্কা অনেকটাই কমে যায়।।।
Tags – Skin Care Skin Tips Beauty Tips