স্বামীকে কীভাবে সঞ্চয়ী করে তুলবেন – How To Make Husband Saver
আপনার স্বামী হাত খুলে খরচ করে? তাহলে কিন্তু সামনে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ অথচ খরচে বিন্দুমাত্র রাশ টানতে না পারার ফলে এক বিপুল আশঙ্কা যেন গ্রাস করতে আসে। স্বাভাবিকভাবেই স্বামীর সঙ্গে মতের অমিল, কথা কাটাকাটি, তিক্ততা চলতেই থাকে, আর এ সবেরই প্রভাব পড়ে সম্পর্কের উপর।
সমস্যাটা গুরুতর সন্দেহ নেই! কিন্তু একটা কথা আপনাকে বুঝতে হবে, স্বামীর সঙ্গে ঝগড়াঝাঁটি করে এ সমস্যার সমাধান হবে না। ফলে স্বামীকে পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন করে তোলাটাই আপনার একমাত্র কাজ। কীভাবে সেটা সম্ভব? কিছু পরামর্শ রইল আমাদের পক্ষ থেকে।
স্বামীর খরচের হাত খুব বেশি? কীভাবে আর একটু সঞ্চয়ী করে তুলবেন ওঁকে
স্বামীর সঙ্গে ভালোভাবে কথা বলুন
রাগারাগি বা দোষারোপ করে লাভ নেই, বরং ভালোবেসে বোঝান। কেন টাকা হাতে রাখা দরকার, কেন এই মুহূর্তে অপ্রয়োজনীয় খরচ কমানো দরকার, সে কথা বুঝিয়ে বলুন।
বাজেট তৈরি করুন
মাসের খরচপত্র বেঁধে দিন। স্বামীর সঙ্গে আলোচনা করেই সাংসারিক নানা খরচের লিস্ট করে প্রতিটির দাম লিখে মোট খরচের হিসেব করে নিন আর সেট মেনে চলুন।
লক্ষ্য স্থির করুন বুঝেশুনে
অবাস্তব, টার্গেট সেট করবেন না। রাতারাতি সমস্ত বাড়তি খরচ পুরোপুরি ছেঁটে ফেলা সম্ভব নয়। ছোট লক্ষ্য স্থির করুন, সেই ছোট লক্ষ্যে প্রথমে পৌঁছোতে চেষ্টা করুন।
টাকা বাঁচানোর উপায়
নিয়মিত স্বামীর সঙ্গে আলোচনা করুন
টাকাপয়সা, খরচপত্র নিয়ে নিয়মিত স্বামীর সঙ্গে বসুন। কতটা খরচ বাঁচানো গেল, আরও কতটা বাঁচানো সম্ভব, কেন সে টাকাটা বাঁচানো দরকার, এ সব নিয়ে কথা বলুন ওঁর সঙ্গে। ওঁর বেশি খরচের অভ্যেস থাকলে তা থেকে সহজে উনি বেরোতে পারবেন না।
সংসার খরচ অনেকাংশেই বেড়ে যায় ঘরে থাকা ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্রপাতির কারণে। তাই যেসব বৈদ্যুতিক যন্ত্রগুলো সরচরাচর ব্যবহার করেন না; সেগুলোর বিদ্যুৎসংযোগ বন্ধ রাখুন।
অনেক সময় ঘরের বিভিন্ন আসবাব থেকে শুরু করে অনেক কিছুই পুরনো হয়ে যায়। বর্তমানে বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন গ্রুপে পুরনো জিনিসপত্র ক্রয়-বিক্রয়ের সুবিধা আছে। চাইলে ঘরের অপ্রয়োজনীয় পুরনো জিনিস বিক্রি করে দিন। এতে কিছুটা টাকা-পয়সাও হাতে আসবে।
কেনাকাটার সময় বিভিন্ন উপলক্ষ্য বা আয়োজনকে কেন্দ্র করে কিনুন। এতে মূল্যছাড় পাবেন।
প্রতি সপ্তাহে ঘুরাঘুরি করে টাকা নষ্ট না করে ঘরেও আয়োজন করতে পারেন স্বল্প খরচের মধ্যে।
মাঝেমধ্যে রেস্টুরেন্টে খাওয়ার মত হতেই পারে। তবে খরচের বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে।
মোবাইলে কোন প্ল্যানটি ব্যবহার করলে কম রেটে বেশি কথা বলা যাবে বা কত টাকায় কত মিনিট ও কত ইন্টারনেট পাওয়া যাবে সেসব বিষয়েও ধারণা রাখুন।
প্রতিদিন কিছু না কিছু জমানঃ
প্রতিদিনই চেষ্টা করুন কিছু না কিছু টাকা জমাতে। হতে পারে সেটা ১০-১০০ টাকা। যাই হোক না কেন জমান।
সন্তানকে সঞ্চয় করতে শেখানঃ
সন্তানকে ছোট্ট একটা ব্যাঙ্ক কিনে দিন। মাটির বা প্লাস্টিকের। খুব রঙ্গিন বা আকর্ষনীয় পুতুল আকারের ব্যাঙ্ক কিনতে পাওয়া যায়।
কিছু কেনার আগে ভাবুনঃ
আমাদের অনেকেরই অভ্যাস হল রাস্তায় যেতে যেতে কোন দোকানে কিছু পছন্দ হলে হুট করে কিনে ফেলা। এটা করার ফলে বেশীরভাগ সময়েই আমরা অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দিয়ে ঘর বোঝাই করে ফেলি।
লক্ষ্য ঠিক করুনঃ
ভবিষ্যতে আপনার বিগ বাজেটের কি কি কিনতে হবে সেটার একটা তালিকা করে সময়সীমাও নির্ধারণ করুন। যেমন, ৫ বছর পর ফ্ল্যাট, ১ বছর পর টিভি আর এক মাস পর ওভেন। এভাবে ঠিক করে কত টাকা করে জমালে এই লক্ষ্য পূরণ করা সম্ভব,
ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার কমানঃ
ক্রেডিট কার্ডটা যতটা সম্ভব বাসায়ই ভুল করে রেখে শপিং এ যান। ক্যাশ ব্যবহার করুন। এতে চাইলেও আপনি যথেচ্ছ টাকা খরচ করতে পারবেন না।
সেভিংস স্কীম খুলুনঃ
ব্যাঙ্কে সেভিংস স্কীম অবশ্যই খুলে ফেলুন। মাসিক হারে যতটুকুই সম্ভব যেটা আপনি কোন রকম চাপ না নিয়ে জমাতে পারবেন।
ইনস্যুরেন্স করুন
একটা ভালো কোম্পানিতে ইনস্যুরেন্স করে রাখুন। এতে কোন অনাকাঙ্কখিত দুর্ঘটনায় আপনার অর্থনৈতিক সমস্যা মোকাবেলা করতে পারবেন সহজেই।
ঘরের জল, গ্যাস ও বিদ্যুৎ অপচয় রোধ করুন
দরকার না হলে ঘরের পানির ট্যাপ, চুলা ও ইলেক্ট্রনিক জিনিসপত্রের লাইন অফ করে রাখুন। বিল কম আসবে।
খরচ কমানো খুব কঠিন কিছু নয়। আপনার একটু সদিচ্ছা আর সতর্কতাই যথেষ্ট!
Tags – Life Style Make Husband Saver