পুজোর মেকআপের পরও মুখের সব রোমকূপ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে জেনে নিন এর সমাধান – All The Pores Of The Face Are Clearly Visible Even after Puja Makeup, know The Solution
অনেকের সৌন্দর্যের ক্ষেত্রেই মুখের লোম ছিদ্র বা গর্ত বাধা হয়ে দাঁড়ায়। আর এর কারণেই ব্রণ ও ব্ল্যাকহেডস এর সমস্যা দেখা দেয়। ব্ল্যাকহেডস লোমকূপগুলোকে অনেক বড় ও দৃশ্যমান করে। দীর্ঘক্ষণ সূর্যের আলোতে থাকলে মুখের লোমকূপগুলো খুলে যায় কারণ এতে কোলাজেন ড্যামেজড হয় ও লোমকূপের দেয়ালগুলোর স্থিতিস্থাপকতা কমে যায়।
অনেক সময়েই কপাল, নাক ও গালের রোমকূপ বড় হয়ে গর্তের মতো দেখতে লাগে। ত্বক শিথিল ও বয়স্ক দেখায়। কী ভাবে কমবে সমস্যা?
রোমকূপ দুর করার উপায়
এক-একজনের এক-একরকমের ত্বকের ধরন, অতরিক্ত মেকআপ প্রোডাক্ট ব্যবহার, সঠিক স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার না করা, ঠিকভাবে ত্বকের যত্ন না নেওয়া, দূষণ, ধুলো, ধোঁয়া, সঠিক ডায়েট ও লাইফস্টাইল মেনে না চলা, জল কম খাওয়া – এমন অনেক কারণে আমাদের ত্বকের লোমকূপ খুলে যায় এবং বড় হতে থাকে, এই সময়ে ত্বকের সমস্যা নিয়ে নাজেহাল হতে হয় অনেককেই। ত্বকের উপর ভাগে বেশ কিছু ছোট ছোট ছিদ্র থাকে। এই ছিদ্রগুলি ত্বককে শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে সাহায্য করে। আর্দ্রভাব ধরে রাখে।
রোমকূপ বড় হয়ে যাওয়ার সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করতেই হবে। কী ভাবে হবে সমাধান?
স্টিম দিয়ে পোর পরিষ্কার করুন
প্রথমে ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ পরিষ্কার করুন যেন কোন ধুলো বা ময়লা না থাকে। মুখে, চোখে যদি মেকআপ থাকে সেটাও মেকআপ রিমুভার দিয়ে তুলে ফেলুন। এবার মুখে কয়েকবার উষ্ণ জলের ছিটা দিন এতে করে মেকআপ রিমুভার-এর অংশ বিশেষ থাকলে সেটাও চলে যাবে। এরপর চাইলে হালকা কোন ক্লিনজার-ও ব্যবহার করতে পারেন। এখন স্টিম নেয়ার পালা। একটি বড় গামলাতে ধোঁয়া ওঠা গরম জল নিন, টি ট্রি অয়েল পেলে জলে মিশাতে পারেন, কারণ এটা ব্রণ সারানোর জন্য উপকারী। এখন গামলা থেকে ১ হাত উঁচুতে আপনার মুখটা রাখুন তারপর তোয়ালে দিয়ে গামলাসহ মুখটা ঢেকে ১০ মিনিট এভাবে থাকুন।
মুখের সব রোমকূপ দুর করার টিপস্
এক্সফলিয়েট করুন আপনার ত্বক
লোমকূপ বন্ধ হয়ে যাওয়া থেকে বাঁচতে মধু ও চিনির স্ক্রাব
মুখে শুকনো ব্রাশ ব্যবহার করে এক্সফলিয়েট করাটা বেশ পুরোনো পদ্ধতি কিন্তু বর্তমান যুগে এটা অনেক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এমন একটা ফেসিয়াল ব্রাশ কিনুন যেটার ব্রিসেল (bristle) নরম এবং ন্যাচারাল ফাইবার দিয়ে তৈরি। এই পদ্ধতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো মুখ এবং ব্রাশ ২টাই যেন শুকনো থাকে। তা না হলে এই পদ্ধতি কাজ করবে না। হালকা হাতে মুখে ব্রাশ দিয়ে সার্কেল করে ব্রাশ করুন।
ডিমের সাদা অংশ, ওটমিলের গুঁড়ো, আর সামান্য লেবুর রস মিশিয়ে মাস্ক তৈরি করে নিন। এটি মুখে লাগিয়ে বেশ কিছু ক্ষণ মালিশ করুন। ত্বকের মৃত কোষ দূর করতে এই প্যাক দারুণ উপকারী। প্যাকটি লাগিয়ে ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে ভেজা কাপড় দিয়ে মুখ পরিষ্কার করুন। ত্বক পরিষ্কার থাকলে মুখের রোপকূপে ময়লা জমবে না।
বরফ
বড় লোমকূপ সংকুচিত করার সহজ ও কার্যকরী উপায় হচ্ছে বরফ লাগানো। কারণ বরফের ত্বক টান টান করার ক্ষমতা আছে। মেকআপ করার আগে বড় লোমকূপকে কমানোর জন্য প্রায়ই বরফ ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও বরফ সংবহনকে উদ্দীপিত করে ও ত্বককে স্বাস্থ্যকর করে।
পরিষ্কার কাপড়ে কয়েকটি বরফের টুকরো নিয়ে ত্বকের উপর ১৫ থেকে ৩০ সেকেন্ড ধরে রাখুন। এইভাবে প্রতিদিন কয়েকবার করুন। যখন ত্বকের উন্নতি লক্ষ্য করবেন তখন বরফ ব্যবহারের মাত্রা কমাতে পারেন।
সম পরিমাণে মধু ও চিনি নিন এবং সঙ্গে এক চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে একটি স্ক্রাব তৈরি করুন। সপ্তাহে দু’বার ভাল করে ওই স্ক্রাব দিয়ে মুখ পরিষ্কার করুন। এতে ত্বকের উপর জমে থাকা ময়লার সঙ্গে মরা কোষও দূর হয়, ফলে ধীরে-ধীরে ত্বকের ইলাস্টিসিটি বাড়ে ও open pores-এর সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
বেসন হলুদ টক দই
এক চা চামচ করে বেসন ও হলুদ গুঁড়ো, এক টেবিল চামচ টক দই ও কয়েকফোঁটা অলিভ অয়েল মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন এবং মুখে, গলায় ও ঘাড়ে এই প্যাকটি লাগিয়ে নিন। আধঘণ্টা পর ঠান্ডা জল দিয়ে পরিষ্কার করে নিন।
গোলাপ জল ও হলুদ
হলুদ যে অ্যান্টিসেপ্টিক, তা আমরা সবাই জানি। Open pores-এ বেশি ময়লা জমে এবং ফলে ত্বকে জীবাণু সংক্রমণও বেশি হয় ও সঙ্গে আরও নানা সমস্যার সৃষ্টি হয়। সেক্ষেত্রে এক টেবিল চামচ অরগানিক হলুদ গুঁড়ো এবং এক টেবিল চামচ দুধ বা গোলাপ জল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগিয়ে রাখুন। মিনিটদশেক পর ঠান্ডা জলে মুখ ধুয়ে নিন। একদিন অন্তর একদিন এই প্যাকটি লাগান।
টমেটো ও মধু
বেশিরভাগ সময়েই দেখা যায় ত্বক যত বেশি শুষ্ক হতে শুরু করে, তত বেশি করে লোমকূপ খুলতে ও বড় হতে শুরু করে। এই সমস্যা সমাধান করতে পারে ছোট্ট একটি পাকা টমেটো। একটি ছোট টমেটোর পাল্পের সঙ্গে এক টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে মুখে, গলায়, ঘাড়ে লাগিয়ে নিন। মিনিট পনেরো পর ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে নিন। কিছুদিনের মধ্যেই লোমকূপ ছোট হতে শুরু করবে।
সকালে ঘুম থেকে উঠে এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে তাজা অ্যালো ভেরা জেল লাগাতে পারেন। বাজারের অ্যালো ভেরা জেল নয়, বাড়ির গাছের রস লাগাতে পারলে ফল দেবে বেশি। এটি ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখার পাশাপাশি ছিদ্রের আকারও ছোট করে দেয়।
Tags: Pores Skin Care Skin Care Tips