পুজোর আগে মুখ থেকে বয়সের ছাপ রাখুন দূরে – Keep Age Marks Away From Face Before pooja
তারুণ্যময় ত্বকের জন্য দরকার সঠিক খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত ঘুম, শরীরচর্চা ও ত্বক পরিচর্যা।
আয়নার দিকে তাকালেই কি মনটা খারাপ হয়ে যাচ্ছে? চোখের কোণে ভাঁজ, কপালে সূক্ষ্ম রেখার আনাগোনা বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছে বয়স হল? দেখুন, বয়সের কাঁটাটাকে তো থামানো সম্ভব নয়, কিন্তু যদি বয়সের ছাপগুলোকেই থামিয়ে দেওয়া যায়।।।
বয়সের ছাপ পড়ছে ত্বকে? জেনে নিন কীভাবে আটকাবেন বলিরেখা আর দাগছোপ
মুখে বয়সের ছাপ পড়ে কেন?
আমাদের ত্বকে কোলাজেন নামে একটি যৌগ তৈরি হয়। এই কোলাজেন ত্বককে টানটান, কোমল রাখে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ত্বকে কোলাজেন তৈরির স্বাভাবিক ক্ষমতা কমে আসে, ফলে ত্বক বুড়িয়ে যেতে শুরু করে। আবার খুব বেশি রোদে থাকলে, জল কম খেলে, ধূমপানের অভ্যেস থাকলে, মানসিক চাপ বা পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবেও ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷
মুখে বয়সের ছাপ পড়লে কী হয়?
বাহ্যিক কারণে ত্বকে ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা সঙ্গে সঙ্গে দেখা দেয় না৷ ক্রমশ বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বয়সের দাগ মুখের ত্বকে প্রকট হয়ে ওঠে৷ ত্বক ক্রমশ রুক্ষ হয়ে পড়ে, কোলাজেন কমে যাওয়ার ফলে ত্বক তার স্বাভাবিক টানটান ভাব হারিয়ে ফেলে,
অতিরিক্ত ধূমপান, মদ্যপান ও সোডাজাতীয় পানীয়
অ্যালকোহল, সিগারেট ও সোডা ত্বকের আর্দ্রতা শুষে নেয়৷
মুখে বয়সের ছাপ পড়া আটকাতে চান? রইল কয়েকটি অব্যর্থ সমাধান
মানসিক চাপ
অতিরিক্ত স্ট্রেস ও টেনশনের একাধিক কুপ্রভাব রয়েছে। এর ফলে রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া, মুড সুইং, ডিপ্রেশন বা ঘুমের অভাবের মতো নানা উপসর্গ দেখা দেয় যা একসঙ্গে ত্বকের উপর প্রভাব ফেলে ও ত্বক বয়স্ক দেখায়।
রোজ এক বড়ো চামচ চ্যবনপ্রাশ খাওয়া অভ্যেস করুন আর দেখুন দিনে দিনে কেমন দাগহীন মসৃণ হয়ে উঠছে আপনার ত্বক!
প্রচুর জল খান
শরীর পর্যাপ্ত জল না পেলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। ত্বকের যৌবন ধরে রাখতে দিনে অন্তত দু’ লিটার জল খেতেই হবে।
মধু
ভরপুর আর্দ্রতায় সমৃদ্ধ মধু ত্বকে বলিরেখা পড়তে দেয় না। ত্বকে বলিরেখা পড়ার অন্যতম প্রধান কারণ ফ্রি রাডিকালস। মধুর পর্যাপ্ত অ্যান্টি-অক্সিডান্ট এই ফ্রি রাডিকালস নষ্ট করে দেয়। রোজ এক চামচ করে মধু খেলেই আপনি তফাতটা বুঝতে পারবেন।
মুখে মাখুন আভোকাডো তেল
বয়সের দাগছোপ, সূক্ষ্ম বলিরেখা দূর করতে অসম্ভব ভালো কাজ করে আভোকাডো তেল৷ একাধিক ভিটামিনে ভরপুর অাভোকাডো তেল ত্বকের কোলাজেন তৈরির স্বাভাবিক ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে এবং ত্বক রাখে সতেজ ও উজ্জ্বল৷
দৈনন্দিন ত্বক পরিচর্যার সামগ্রী দিয়েই প্রতিহত করুন বয়স
নানা ধরনের ত্বক পরিচর্যার সামগ্রী ব্যবহার করেও ত্বক বুড়িয়ে যাওয়া প্রতিহত করতে পারেন৷ রইল এমনই কিছু প্রডাক্টের হদিশ৷ নিয়মিত ব্যবহারে আপনার ত্বক থাকবে তরুণ, সতেজ ও জেল্লাদার৷
আমন্ড, চন্দন ও রোজ়উড এসেনশিয়াল অয়েল
স্নানের জলে কয়েকফোঁটা এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে নিয়ে মুখে মাখুন,,পনেরো মিনিট পর মুখ ধুয়ে ফেলুন। প্রতিদিন করতে পারলে কিছুদিনের মধ্যেই সূক্ষ্ম রেখার প্রকোপ অনেকটাই কমে যাবে।
বয়স এর ছাপ দুর করার উপায়
দুধ ও আমন্ড
চার-পাঁচটা পাতলা খোসাসহ আমন্ড বাদাম সারারাত জলে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে উঠে বাদামের খোসা ছাড়িয়ে একটুখানি দুধ দিয়ে বেটে নিন। বাটাটা খুব তরলও হবে না, আবার খুব ঘনও হবে না। মোটামুটি মাঝারি ঘনত্বের হলে সবচেয়ে ভালো। মুখে লাগিয়ে আধঘণ্টা রেখে ধুয়ে ফেলুন।
সানস্ক্রিন: বয়সের ছাপ কমাতে নিয়মিত সানস্ক্রিন ব্যবহার সবচেয়ে ভালো উপায়। সূর্যালোক ত্বকের বয়সের ছাপ বাড়ায়, বলিরেখা ও অন্যান্য দাগকে স্পষ্ট করে তোলে। সূর্যের ক্ষয় থেকে বাঁচতে, বয়সের ছাপ ধীর করতে এবং ত্বক সুস্থ রাখতে নিয়মিত এসপিএফ ৩০ যুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়।
ঘুম: শরীর পুনর্গঠনের জন্য পর্যাপ্ত ঘুম আবশ্যক। ঘুম বয়সের ছাপ, দাগছোপ ও ত্বকের ভাঁজ কমায়।
স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বাড়ায় এবং অকালে বয়সের ছাপ পড়া রোধ করে।
প্রচুর শাক সবজি ও ফল যেমন- লঙ্কা, ব্রকলি, গাজর, ডালিম, বেরি, ইত্যাদি খাওয়া উপকারী। এছাড়াও গ্রিন টি এবং জলপাইয়ের তেল খাওয়া এক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে।
ময়েশ্চারাইজার: ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে ময়েশ্চারাইজারের বিকল্প নেই। এটা ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে ফলে বয়সের ছাপ বা বলিরেখা দৃশ্যমান হয় না।
ভিটামিন সি এবং এ সমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার এক্ষেত্রে উপকারী। এগুলো গভীর থেকেই বরসের ছাপ কমাতে ও বলিরেখা ধীর পড়তে সহায়তা করে।
খাঁটি অ্যালো ভেরার সঙ্গে ল্যাভেন্ডার তেল ব্যবহার ত্বকের ক্ষয় কমায়, অক্সিজেনের সরবারহ বাড়ায় এবং বয়সের ছাপ দূর করে।