মেডিটেশন কি সত্যিই আপনার শরীর-মন ভালো রাখতে পারে? জানুন – Can Meditation Really Keep Your Mind And Body Healthy?
অনেকেরই প্রশ্ন থাকে মেডিটেশন কি সত্যিই আপনার শরীর-মন ভালো রাখতে পারে-তাদের জন্য আজকের এই পোস্ট-আগামী দিনে যে কী হবে, সে সম্পর্কে কারও কোনও আন্দাজ নেই। যত দিন যাবে, এই চরম অনিশ্চয়তা তত বেশি বাড়বে। বাড়ির সবার মানসিক স্বাস্থ্যের উপর তার প্রভাব পড়বে। এই পরিস্থিতিতে ভালো থাকার রাস্তা একটাই – মেডিটেশন – প্রাচীন ভারতীয় যোগচর্চার তা অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।
মেডিটেশন কিভাবে করে
ভারতের ঐতিহ্য সুবিশাল। ভারতীয় পরম্পরার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে রয়েছে যোগ (Yoga)। প্রাচীন কাল থেকে ভারতীয় ঋষিমুণিরা যোগ করে এসেছেন। এই যোগের একদম গোড়ার কথা হল ধ্যান (Meditation)। তাই প্রতিটা ভারতীয়ই মোটামুটি ধ্যানের কথা জানেন। তবে ধ্যান নিয়ে এত কথা হলেও বহু মানুষ এই বিষয়টাকে তেমন আমল দিতেন না।
মেডিটেশন এর উপকারিতা
রোজের কাজের হাজারো চাপ, সংসারের ঝামেলা ইত্যাদি সামলাতে গিয়ে নাজেহাল অবস্থা হলেই বন্ধুবান্ধবরা নিশ্চয়ই আপনাকে মেডিটেশন করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন? মেডিটেশন বা ধ্যান আসলে গভীর শ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার পদ্ধতি, যোগচর্চায় সামগ্রিক স্বাস্থ্যোন্নতির জন্য এই পদ্ধতিটির উপরেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়৷ প্রতিদিন যদি মাত্র 10 মিনিটও মেডিটেশনের জন্য বরাদ্দ করে রাখতে পারেন, তাহলে দেখবেন যে কোনও কাজেই মনঃসংযোগ করতে আপনার কোনও অসুবিধে হচ্ছে না, ছোট ছোট যে সব তথ্য মাথা থেকে বেরিয়ে যেত, সেগুলিও দিব্যি মনে থাকছে, আগের চেয়ে অনেক বেশি কাজ স্বচ্ছন্দে করেও ফেলতে পারছেন৷
মেডিটেশন করার সঠিক সময়
কাল থেকেই শুরু করুন, দেরি করবেন না
ঘুম থেকে উঠতে এত দেরি হয়ে যায় যে তড়িঘড়ি করে অফিসের পথে রওনা হয়ে যান? আপনার স্ট্রেসের শুরুটা হচ্ছে এই রুটিনের কারণে৷ ঘুম থেকে ওঠার পরেই হুটোপাটি শুরু করবেন না৷ 10 মিনিট আগে উঠুন, বিছানাতেই পদ্মাসনে বসুন, হাত রাখুন হাঁটুর উপর৷ চোখ বন্ধ করে নিজের চিন্তাভাবনাগুলিকে একটু সংহত করে নিন৷
প্রতিটি শ্বাস নিন সচেতনভাবে
সচেতনভাবে শ্বাস নেওয়াটা আপনার স্ট্রেস কমাতে খুব সাহায্য করবে৷ প্রতিটি নিশ্বাস নেওয়ার সময় যদি আপনি সতর্ক থাকেন, তা হলে বাড়ে অক্সিজেন আত্তীকরণের পরিমাণ, ফলে উত্তেজনা কমবে স্বাভাবিক নিয়মেই৷ সুবিধের ব্যাপারটা হচ্ছে যে, এটা করার জন্য আপনার কোথাও যাওয়ার দরকার নেই, অফিসের সিটে বসে বা বাড়িতে রান্না করতে করতেও তা করা সম্ভব৷ যদি পারেন, তা হলে চোখ বন্ধ করে একটা লম্বা শ্বাস নিন পাঁচ গুনতে গুনতে, তার পর 10 গোনার অবসরে তা ছাড়ুন৷
ধ্যান করার সঠিক নিয়ম
ধ্যান করার লাভ
, যাঁরা নিয়মিত মেডিটেশন করেন, তাঁদের অহঙ্কার কমতে থাকে ক্রমশ, আত্মার সঙ্গে গড়ে ওঠে নিবিড় বন্ধন। মনের মধ্যে যে সব রাগ আর ক্ষোভ আমরা পুষে রাখি, তার অনেকটা থেকেই মুক্তি দেয় নিয়মিত ধ্যানের অভ্যেস। স্ট্রেস বা অ্যাংজাইটি বাড়লে বেড়ে যায় হৃদস্পন্দনের হারও। মেডিটেশনের অভ্যেস সেই গতিও কমাতে পারে। তা ছাড়া মন শান্ত হয়,।
.দুশ্চিন্তা দূর করে- বর্তমান সময়ে মানুষ সারাদিন ব্যস্ত। এই ব্যস্ত জীবনে কখন যে ঢুকে পড়েছে দুশ্চিন্তা তা বোঝা দায়। তবে ধ্যান করলে মেলে মানসিক প্রশান্তি। সেক্ষেত্রে ধ্যান কমাতে দুশ্চিন্তা।
নিজের সম্পর্কে ধারণা- প্রত্যেকটি মানুষের নিজের সম্পর্ক ধারণা থাকা উচিত। সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে করা উচিত ধ্যান। কারণ ধ্যান করলে হতে পারে নিজের সঙ্গে বন্ধুত্ব। অনেক কথা নিজেদের সঙ্গে বলতে পারেন। তখন আপনি স্পষ্টভাবে বুঝতে পারবেন আপনার ক্ষমতা কতটা।
একাগ্রতা বাড়ায়- ধ্যান করার সময় মন হয়ে যায় একেবারে শান্ত। বহুদূরে থাকে সমস্ত চিন্তা। তখন মন কেবল নিজের সঙ্গী হয়ে ওঠে। এই উপায়েই বেড়ে যায় একাগ্রতা।
সৃজনশীলতা বাড়ায়- আজকের দিনে কাজের থেকে বেশি দামি হল আইডিয়া। বিশেষত যাঁরা সৃজনশীল কাজের সঙ্গে যুক্ত তাঁদের চিন্তাভাবনাতেই ফুটে উঠতে হয় বুদ্ধিমত্তার ছাপ।
মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে- আজকের দিনে ভালো থাকার অনুভূতি খুঁজে পাওয়াটাই সবথেকে কঠিন কাজ। এক্ষেত্রে নিয়মিত ধ্যান করতে পারলে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকতে পারে। দূর হয় অবসাদ, উৎকণ্ঠা, ভয়।
Tags – Life Style, Yoga, Meditation