Spread the love

থাইরয়েড রোগীদের খাবারের তালিকা – Food List For Thyroid Patients


গলার পরের অংশে অবস্থিত থাইরয়েড গ্রন্থিকে নীরব ঘাতক বলা হয়। সময় মতো চিকিৎসা না পাওয়ার কারণে পরিস্থিতি বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। কখনো কখনো মৃত্যু সম্ভব।আপনাদের বলে রাখি এই আকারে খুব ছোট এই গ্রন্থি,আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।


থাইরয়েড কয় প্রকার – Types of Thyroid in Bengali

থাইরয়েড সাধারণত দুই প্রকারের হয়- হাইপারথাইডিসম ও হাইপোথাইরয়েডিজম। যখন থাইরয়েড গ্রন্থিগুলি থেকে অতিরিক্ত পরিমাণ হরমোন উৎপন্ন হয়, তখন তাকে বলে হাইপারথাইরোয়েডিজম; আবার যখন অত্যন্ত কম পরিমাণে হরমোন নিঃসরণ হয় তখন তাকে বলা হয় হাইপো থাইরয়ডিজম।


IMG_20220810_152912-1660125565342 থাইরয়েড রোগীদের খাবারের তালিকা - Food List For Thyroid Patients

থাইরয়েড রোগীদের সুস্থ হওয়ার খাবার তালিকা

থাইরয়েড গ্রন্থি সঠিকভাবে কাজ না করলে হরমোনাল গ্রন্থিগুলো এর দ্বারা প্রভাবিত হয়। কিন্তু এটা জানাও গুরুত্বপূর্ণ যে থাইরয়েড গ্রন্থির কাজ কম বেশি হলে তা আমাদের শরীরে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবফেলে।অনিয়ম জীবনযাপন ও খাদ্য-পান থাইরয়েডের সমস্যার কারণ হতে পারে। এর জন্য আমরা থাইরয়েড রোগীদের জন্য ডায়েট চার্ট বলে দিচ্ছি।


থাইরয়েড থেকে ভোগা রোগীদের জন্য ডায়েট চার্ট:


আয়োডিন যুক্ত খাদ্য খাবার-

থাইরয়েড পীড়িত রোগীদের খাদ্য পদার্থের আয়োডিনের মাত্রা যথোপযুক্ত হওয়া উচিত, কারণ আয়োডিনের মাত্রা থাইরয়েড এর ক্রিয়াকলাপ কে প্রভাবিত করে।


খাদ্যের উৎস

থাইরয়েড রোগীদের জন্য আমরা কেবলমাত্র সমুদ্র থেকে প্রাপ্ত খাদ্যের ব্যবহার করতে পারলে ভালো যেমন সমুদ্রের মাছ, শৈবাল এবং সবজি ।কারণ এগুলির মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আয়োডিন থাকে।


তামা এবং লোহা

কাজু বাদাম, সূর্যমুখীর বীজ ও বাদাম খাওয়া উচিত।এছাড়াও এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে কপার থাকে।


একজন হাইপোথাইরয়েডে ভোগা মানুষের জন্যে আয়োডিন খুবই প্রয়োজনীয়। আয়োডিনের অভাবে হাইপোথাইরোয়েড থেকে গলগণ্ড হতে পারে (১) কারণ এই সময় শরীর নিজে থেকে আয়োডিন উৎপন্ন করতে পারেনা। তাই আপনাকে নিজে থেকে এমন খাদ্য খেতে হবে যা আয়োডিন ভরপুর।


শাক সবজি এবং ফলে রয়েছে নানারকমের মিনারেল, ভিটামিন, এন্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইবার। যদিও কিছু কিছু সবজি এই সময় খাওয়া ঠিক নয়, যেমন-*-ফুলকপি, মিষ্টি আলু, পালংশাক, বাঁধাকপি, মুলো, ইত্যাদি।


আয়োডিনের একটি সূত্র হল ডিম যা হাইপোথাইরয়েডিজম নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে (৭)। তবে এক্ষেত্রে ডিমের সাদা অংশটিই খাওয়া উচিৎ এবং কুসুমটি বাদ দেওয়া উচিৎ।


থাইরয়েড রোগে যা খাবেন



শিম শস্য:

শিম জাতীয় শস্য বা ডাল হল আয়োডিন ও জিঙ্কে ভরপুর (৮)। প্রতিদিন নিয়ম করে ডাল, বিনস, ছোলা, মটরশুঁটি, ইত্যাদি খাওয়ার অভ্যেস করা ভালো।

টেংরীর স্যুপ:

খাসির মাংসের হাড় ফুটিয়ে যেই স্যুপ তৈরী হয়, সেটি যেকোনো হাইপোথাইরোয়েডিজমে আক্রান্ত মানুষের জন্যে খুব উপকারী।


মাছে রয়েছে ভরপুর ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড ও সেলেনিয়াম (২)। ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড এল ডি এল কোলেস্টেরলকে কম করতে সাহায্য করে ও সেলেনিয়াম থাইরয়েড হরমোনকে সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করে।


আয়রন এর ভূমিকা

আয়রন এর জন্য সবুজ সবজির বিকল্প আর কিছু হতে পারে না, বিশেষ করে পালং শাক। কারণ পালং শাকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন পাওয়া যায়।


পনির ও কাঁচা লঙ্কা

থাইরয়েড রোগীদের পনির এবং সবুজ লঙ্কার সাথে টমেটো খাওয়া উচিত। কারণ এই ছাড়াও থাইরয়েড গ্রন্থিরজন্য অত্যন্ত লাভজনক হয়।


ভিটামিন আর খনিজ

আপনার ডায়েট চার্টে ভিটামিন ও মিনারেল যুক্ত খাবারের গুরুত্ব দিন।


আইসক্রিম এবং দই

আইস ক্রিম এবং দই সেবন থাইরয়েড রোগীদের জন্য বেশ লাভজনক হয়।


গরুর দুধ

এছাড়াও কিছু ঘরোয়া উপায়ে অনেক উপকার পাওয়া যায়, যেমন- গরুর দুধ পান।


নারকেল তেল

নারকেল তেলের ব্যবহার এর মাধ্যমে আপনি থাইরয়েড গ্রন্থির সক্রিয়তা বাড়াতে পারেন। এর আরো একটি সুবিধা হল নারকেল তেল কে আপনি খাবারের মাধ্যমে ব্যবহার করতে পারেন।


খাবারগুলি এড়িয়ে চলুন


থাইরয়েড রোগীদের ডায়েট চার্টে সোয়া পাতা থেকে তৈরি কোন খাবার থাকা উচিত নয় ৷

থাইরয়েড রোগীদের ফাস্ট ফুড থেকে দূরে থাকা উচিত। কেননা ফাস্ট ফুড থাইরয়েড গ্রন্থিকে প্রভাবিত করে।


যদি আপনি সবজির কথা বলেন,তবে ব্রকোলি বাঁধাকপির মতো খাবার থেকে দূরে থাকা উচিত।

থাইরয়েড রোগীদের উচিত, এই ডায়েট চার্ট অনুসরণ করার পাশাপাশি আরও কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখা। নিয়মিত ব্যায়াম করার অভ্যাস গ্রহণ করা উচিত।তবে যোগব্যায়ামের প্রশিক্ষকের পরামর্শ নিয়ে ব্যায়াম করতে হবে।তবে এসব সত্ত্বেও ডাক্তারের সাথে আলোচনা করতে হবে।

হাইপার থাইরয়েডে কি খাওয়া উচিত – Food for Hypothyroidism in Bengali

হাইপার থাইরয়ডিজমের ক্ষেত্রে যেই যেই লক্ষণগুলি সবথেকে বেশি করে ফুটে ওঠে সেগুলি হল ওজন অত্যাধিক কমে যাওয়া, উত্তেজনা হওয়া, মহিলাদের ক্ষেত্রে মাসিকের অনিয়ম।।এক্ষেত্রে যেসব খাদ্যগুলি সব থেকে বেশি করে খাওয়া উচিত সেগুলি হল:


১. কাঁচা সবজি ও ফল:

কাঁচা ও পাতা সমৃদ্ধ সবুজ শাক ও সবজি খেলে অতিরিক্ত থাইরয়েড হরমোন নিঃসরণ হওয়াকে আটকানো যায়। এর জন্যে যেসব সবজিখাওয়া উচিত সেগুলি হল ব্রকোলি, পালং শাক, বাঁধাকপি, গাজর, ফুলকপি, লেটুস, ইত্যাদি।

২. ব্রাউন রাইস:

ব্রাউন রাইস হল উচ্চ গোইট্রোজেনিক সমৃদ্ধ, যাতে রয়েছে ফাইবার, ভিটামিন ও মিনারেল। প্রতিদিন ১/২ থেকে ১ কাপ ব্রাউন রাইস খাওয়ার অভ্যেস করা ভালো।


৩. প্রোটিন:

প্রোটিন যেমন মুরগির মাংস, মাছ, মাশরুম, সয়াবিন ও ডাল খাওয়া হাইপোথাইরয়েডের ক্ষেত্রে খুবই জরুরি।

৪.হাইপার থাইরয়েড যখন নিয়ন্ত্রণ করার প্রয়োজন হয় তখন গ্রিন টি হল একটি অনবদ্য ঔষধীয় পানীয় যার মধ্যে রয়েছে এন্টি থাইরয়েড উপাদান ও ফ্লুরাইড। প্রতিদিন অন্তত ২ কাপ করে গ্রিন টি পান করার অভ্যেস করুন।


৫.

কিছু কিছু ঔষধীয় গুণ সমৃদ্ধ পাতা যেমন ধনে পাতা, অরিগ্যানো, তুলসী পাতা, পুদিনা, ইত্যাদি হাইপোথাইরয়েডিজম নিয়ন্ত্রণ করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে।


কি কি করা উচিত:

বেশি করে জল পান করুন

জল থাইরয়েডের ক্ষেত্রে খুবই প্রয়োজনীয় একটি ওষধির কাজ করে। জলের সাহায্যে নানারকমের বিষাক্ত পদার্থ শরীর থেকে বেরিয়ে যায়।


ডায়েটের দিকে খেয়াল রাখুন

একজন থাইরয়েডে আক্রান্ত মানুষের ১০০০ ক্যালোরির বেশি খাদ্য খাওয়া একেবারেই উচিত না।


যোগ ব্যয়াম করুন

থাইরয়েডের ফলে নানা রকম সমস্যা সৃষ্টি হয়, যার মধ্যে ওজন বৃদ্ধি খুব সাধারণ। নিয়মিত যোগা অথবা ব্যয়াম করা খুবই জরুরি।


ভালো করে ঘুমান

দিনে কম করে ৮ ঘন্টা ঘুম খুবই জরুরি। না ঘুমোনোর ফলে শরীরে আরো বেশি ক্লান্তি আসে ও সারাদিন অলস লাগে।



Tags – Food List For Thyroid Patients Life Style

By Bristy

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *