স্বামী পরকীয়া করছেন সব জেনেও কেন ছাড়তে পারেন না মহিলারা – Why Can’t Women Leave After Knowing That The Husband Is Committing Extramarital Affairs
একটা সম্পর্কের ভিতই তৈরি হয় ভালোবাসা ও বিশ্বাস দিয়ে। কিন্তু একজন সঙ্গী যখন জানতে পারেন তাঁর ভালোবাসার মানুষ তাঁকে ঠকিয়েছেন, তখন তার ওপর কি যায় বলুন তো, স্বামীর পরকীয়ার কথা জেনেও অনেকে ছেড়ে যেতে পারেন না। কেন জানেন? মহিলাদের মুখেই শুনে নিন সেই কারণ।
স্বামী পরকীয়া করছেন জেনেও কেন ছেড়ে যেতে পারেন না মহিলারা জানুন
অনেকেই বলেন, “সঙ্গী আপনাকে ঠকিয়েছে জেনেও তাঁর সঙ্গে থাকছেন মানে নিজেকেই অসম্মান করছেন আপনি।” এই কথা আসলে বলা খুবই সহজ, কিন্তু মেনে চলা কি ঠিক অতটাই সহজ? সঙ্গী ঠকিয়েছেন, এই কথা জানার পর অনেকেই সেই সম্পর্ক ভেঙে দেয়। কিন্তু অনেকেই আবার সম্পর্ক ভাঙতে বা সঙ্গীকে ছেড়ে যেতে পারেন না।
তার মানে এই নয় যে, তাঁরা নিজেদের সম্মান করেন না। আসলে তার পিছনে অনেক কারণ আছে। সবাই অতটাও শক্ত হন না আবার মানুষের মধ্যে সবার একই প্রভাব পড়ে না। আবার অনেকেই “লোকে কী বলবেন” ভেবে ছেড়ে যেতে পারেননি।
১/ আপনি একজন মহিলা এবং আপনি জানেন যে, আপনার স্বামীর আপনাকে ঠকিয়েছেন। কিন্তু সমাজ আপনার দিকেই আঙুল তুলবে। তাই যখন আমার স্বামী অন্য সম্পর্কে মত্ত ছিলেন, তখন আমার চারপাশের লোকজন আমার দিকে আঙুল তুলেছিলেন। মহিলারা ভাবে আমায় নিয়ে নানা কথা বলবে। যেন আমার দোষেই এমন হয়েছে, আমার স্বামীকে সুখী করতে পারিনি। আমি এই ধরনের অসম্মান সহ্য করতে পারতাম না। তাই আমি সম্পর্কে থেকে যাই। কিন্তু ওঁকে আর ভালোবাসতাম না।
স্বামী পরকীয়া করছেন জেনেও তাকে ছাড়তে পারছেন না কেন
২/ একজন সহকর্মীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন । তার সঙ্গী কে জানিয়েছিলেন, তাঁর সহকর্মীর প্রতি ভালো লাগার কথা। সেই কথা শুনে আমার মন ভেঙে যায়। তিনি আমায় ঠকিয়েছিলেন কারণ, তাঁর মনে হত আমি তাঁকে ভালোবাসি না। কিন্তু আমি সেই সম্পর্কে থেকে যাই। তাঁর ভালোবাসা পাওয়ার জন্য় আমি সম্পর্কে থেকে যাই। আবার তাঁর ভালোবাসা ফিরে পাব ভেবেছিলাম। হয়তো অতীত ভুলে এগিয়ে যেতে পারব।
৩/ আমার পার্টনার আমায় ঠকিয়েছে জানার পর চেনা জানা অনেকেই আমায় নিয়ে হাসিঠাট্টা করতেন। যেন আমি আমার স্বামীকে অন্য মহিলাদের থেকে আড়াল করে রাখতে পারিনি। তাঁকে সুখী করতে পারিনি। তাই আমায় ছেড়ে অন্য পুরুষের কাছে গিয়েছেন। অনেকে অনেক মন্তব্য করেছিলেন। আমার সঙ্গী আমায় বাজেভাবে ঠকানোর পরেও আমি ছেড়ে যেতে পারিনি। কারণ আমাদের সম্পর্ক অনেকদিনের।
অনেক বিবাহিত জীবন নষ্ট হয় তার কারণ –
সম্পর্ককে যথেষ্ট সময় না দেওয়া
দাম্পত্য খুব সহজেই পালন করা সম্ভব নয়। প্রথমে দুজন মানুষ দুজনের প্রতি আকর্ষিত হয়। সেই সময় আমাদের অনুভূতিগুলো অ্যাড্রিনালিন হরমোন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। কিন্তু এই স্টেজ খুব বেশিদিন থাকে না। তাই এই দাম্পত্য মজবুত করার জন্য আমাদের এফর্ট দেওয়া প্রয়োজন। কিন্তু আমাদের জগৎ এখন খুব বেশি আমিত্বে ভরপুর। তাই বৈবাহিক সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী একে অপরের থেকে যা দাবি করেন, তা পরিপূরণ হয় না।
আমরা তার দিকে মন দেওয়ার কথা ভাবিও না। সেই সময়ে মনের মধ্য়ে অন্য ভাবনা আসতে শুরু করে। যে সম্পর্ক তৈরি হয়ে আছে তাকে মজবুত করার চেয়ে আমরা তাৎক্ষণিক পরিতৃপ্তি পাওয়ার চেষ্টা করি।
বৈবাহিক বা রোম্যান্টিক সম্পর্ক তিনটি ধাপের মধ্য়ে দিয়ে যায়। প্রথমদিকে একে অপেরর প্রতি দুই সঙ্গীর একটি আকর্ষণ কাজ করে। শারীরিক ও মানসিক পরিতৃপ্তি পান বিপরীতের মানুষের থেকে। এই ধাপে অ্যাড্রিনালিন হরমোন কার্যকরী হয় বেশি। এরপর ধীরে ধীরে সঙ্গীর প্রতি আমাদের চাহিদা তৈরি হয়। তা শারীরিক ও মানসিক হতে পারে।
তবে সারাজীবন সম্পর্ক ধরে রাখার জন্য সম্পর্কে এফর্ট দেওয়ার প্রয়োজন অনেক বেশি। এই ধাপে অক্সিটোসিন হরমোন প্রধান ভূমিকা পালন করে থাকে। একে অপরের সঙ্গে বাঁধন মজবুত করার জন্য এই হরমোন খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। কিন্তু ঠিক এই সময়েই আমরা বাঁধন মজবুত করার চেষ্টা করি না। সম্পর্কে শ্রম কম দিই ও তাৎক্ষণিক পরিতৃপ্তির দিকে ছুটি। আমাদের কাছে এখন অপশন অনেক বেশি।
Tags – Life Style