Janmashtami 2023:জন্মাষ্টমী পূজা কিভাবে করতে হয়, কতক্ষণ থাকবে পুণ্যতিথি, পুজোর শুভ মুহূর্ত কখন, জানুন
প্রতি বছর ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমীতে উদযাপিত হয় জন্মাষ্টমী । কৃষ্ণভক্তরা ওই দিন আরাধ্যের জন্মদিন ধুমধাম করে উদযাপন করেন রোহিণী নক্ষত্রে অষ্টমীতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ এ বার জন্মাষ্টমীতে বৃদ্ধি যোগ তৈরি হচ্ছে । তা অত্যন্ত শুভ ও ফলদায়ক বলে মত জ্য়োতিষ বিশেষজ্ঞদের । জন্মাষ্টমীর দিন শ্রীকৃষ্ণের শিশুরূপের পুজো করেন ভক্তরা ।
জন্মাষ্টমীর পুজো তো করছেন, কেন করছেন জানেন তো
শুধু মথুরা, বৃন্দাবন বা দ্বারকায় নয় জন্মাষ্টমীর উৎসব সারাদেশে ধুমধাম করে উদযাপিত হয় । পশ্চিমবঙ্গে বহু বাড়িতে গোপালকে পুজো করেন গৃহকর্ত্রীরা । ঘরে ঘরে দোলনায় দোল খান গোপাল ।
শ্রীকৃষ্ণকে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। তারা বিশ্বাস করেন, পৃথিবী থেকে দুরাচারী দুষ্টদের দমন আর সজ্জনদের রক্ষার জন্যই এ মহাবতার স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে আবির্ভূত হন। সেই দেবতার জন্মদিন পালনের তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছে।
জন্মাষ্টমী (JANMASHTAMI) বা কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী হল হিন্দু বা সনাতন ধর্মের একটি বিশেষ উৎসব , হিন্দু ধর্মের ক্যালেন্ডার আনুসারে প্রতি বছর মধ্য সেপ্টেম্বর থেকে মধ্য আগস্ট এর মধ্যবর্তি কোন সময়ে এই শুভ মুহূর্ত পালন করা হয়।
জন্মাষ্টমীতে কৃষ্ণকে কেন ৫৬ ভোগ দেওয়া হয়, জেনে নিন ইতিহাস ও কেনো পালোন করা হয়
জন্মাষ্টমীর অপরনাম
সনাতন হিন্দু ধর্ম মতে জন্মাষ্টমী বা কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী কে আরও কিছু নামে বলা হয়ে থাকে, জন্মাষ্টমীর অপর নাম গুলি হল কৃষ্ণাষ্টমী, গোকুলাষ্টমী, অষ্টমী – রোহিণী, শ্রীকৃষ্ণজয়ন্তী।
জন্মাষ্টমী পুজো বিধি
জন্মাষ্টমীর দিন রাত ১২টায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ । এই দিনে শ্রীকৃষ্ণকে দুধ ও গঙ্গাজল দিয়ে স্নান করানো হয়। তার পর পরানো হয় নতুন পোশাক । এরপর ময়ূরের পালক, বাঁশি, মুকুট, চন্দন, মালা, তুলসি ইত্যাদি দিয়ে সাজানো হয় গোপালকে । ফল, ফুল, মাখন, মাখন, চিনি, মিষ্টি, শুকনো ফল ইত্যাদি নিবেদন করুন ।
জন্মাষ্টমী পূজার উপকরন
আগের দিন নিরামিষ খেতে হয় ও রাত্রে উপাষ করতে হয় । পরের দিন উপাষ করে রাত্রির প্রথম প্রহরে কৃষ্ণের আরাধনা পূর্বক পূজো করতে হয় । নাড়ু ,ক্ষীর, তালবোড়া, লুচি, মিছরি, মাখন, আতপচাল, তুলসীপাতা, ফুল, সাদাফুল, ফল, দূর্বা, ধূপ দীপ, পাট, বালি, মধুপর্কের বাটী, আসন, অঙ্গুরী সহযোগে কৃষ্ণের পূজো করতে হয় । গীতা পাঠ করতে হয় ।
জন্মাষ্টমীতে ঠিক রাত ১২টায় কৃষ্ণের জন্মক্ষণে শশা কাটতে হয়। এটি সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর মায়ের থেকে নাড়ি গ্রন্থি কাটার রূপক বলে মনে করা হয়।ভগবদ গীতায় কৃষ্ণ বলেছেন, ‘যখনই অসত্য ও পাপে এই পৃথিবী ভরে যাবে, তখনই ধর্ম রক্ষা করতে ও সত্য প্রতিষ্ঠা করতে আমি এই পৃথিবীতে অবতীর্ণ হব।’
কিন্তু কেন এত গুরুত্বপূর্ণ জন্মাষ্টমী?
শ্রীকৃষ্ণকে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। তারা বিশ্বাস করেন, পৃথিবী থেকে দুরাচারী দুষ্টদের দমন আর সজ্জনদের রক্ষার জন্যই এ মহাবতার স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে আবির্ভূত হন। ধর্মগ্রন্থ গীতাও সেই সাক্ষ্য দেয়। হিন্দু পুরাণমতে, ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টম তিথিতে শ্রী কৃষ্ণ জন্ম নেন। সনাতন ধর্মালম্বীদের বিশ্বাস, পাশবিক শক্তি যখন ন্যায়নীতি, সত্য ও সুন্দরকে গ্রাস করতে উদ্যত হয়েছিল, তখন সেই শক্তিকে দমন করে মানবজাতির কল্যাণ এবং ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠার জন্য মহাবতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব ঘটে।
শাস্ত্রে আছে, কেউ যদি এক বার শ্রীকৃষ্ণের এই জন্মাষ্টমী উপবাস পালন করেন, তা হলে তাঁকে আর এই জড় জগতে জন্ম, মৃত্যু, ব্যাধি, কষ্ট ভোগ করতে হয় না ও পুনর্জন্ম গ্রহণ করতে হয় না। বিষ্ণুর অবতার কৃষ্ণের জন্মদিন হিসেবে পালিত হয় ।
এর অপর নাম কৃষ্ণাষ্টমী, গোকুলাষ্টমী, অষ্টমী রোহিণী, শ্রীকৃষ্ণজয়ন্তী ইত্যাদি। হিন্দু পঞ্জিকা মতে, সৌর ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে যখন রোহিণী নক্ষত্রের প্রাধান্য হয়, তখন জন্মাষ্টমী পালিত হয়।
পুজোর সময় কি করবেন –
* শ্রীকৃষ্ণ তুলসি পাতা পছন্দ করেন। তাই জন্মাষ্টমীর প্রসাদ কাউকে দেওয়ার আগে অবশ্যই তুলসি পাতা তার মধ্যে দেবেন।
* স্টিল বা লোহার প্রদীপ জন্মাষ্টমীতে ব্যবহার করবেন না। শ্রীকৃষ্ণের পুজোয় তামা, পেতল বা মাটির প্রদীপ ব্যবহার করুন।
* কৃষ্ণের পুজোয় যে ফুল ব্যবহার করবেন, তা যেন অবশ্যই টাটকা হয়। পুরনো বাসি ফুল পুজো শুরুর আগেই ঠাকুর ঘর থেকে সরিয়ে ফেলুন।
* জন্মাষ্টমীতে কিন্তু পুজো শেষ হওয়ার আগে কিছু খাওয়া যাবে না। এমনকি এক কাপ চা খেলেও আপনি পুজোয় বসতে পারবেন না।
* জন্মাষ্টমীতে অবশ্যই পরিষ্কার জামা-কাপড় পরে পুজোয় বসবেন। তবে এদিন পাটবস্ত্র পরিধান করা যাবে না।
Tags – Janmashtami Puja , Janmashtami