অকারণেই বুক ধড়ফড় করে জানুন এর আসল কারণ – Know The Real Reason For Chest Palpitations For No Reason
বর্তমানে আমাদের চারপাশে যেসব অসুখের প্রকোপ সবচেয়ে বেড়েছে, তার মধ্যে ক্যান্সার অন্যতম। ক্যান্সার বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে, তার মধ্যে ফুসফুসের ক্যান্সার বেশি। আধুনিক জীবনযাত্রা, খাদ্যাভ্যাসে অনিয়ম, অতিরিক্ত দূষণের কারণে ক্যান্সারের প্রবণতা বেড়েছে। ধূমপায়ীদেরই ফুসফুসে ক্যান্সার হয় বেশি। কারো ফুসফুসে ক্যান্সার হলেই আমরা ধরে নেই, তিনি ধূমপায়ী ছিলেন। কিন্তু ধূমপান না করলেও ফুসফুসে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি থেকেই যায়।
বুক ধড়ফড় করা মানেই কি হৃদ্রোগ জানুন
অধিকাংশ সময়ই অস্বাভাবিক হৃৎস্পন্দন, বুক ধড়ফড় করা শব্দগুলো শুনলেই প্রথম যে কারণটির কথা মাথায় আসে তা হচ্ছে হৃদ্রোগ। সময়ে–অসময়ে হৃৎকম্পনের মাত্রা স্বাভাবিকের থেকে বেড়ে যাওয়াকেই বলা হয় প্যালপিটেশন। সোজা বাংলায় কেউ একে বলে থাকেন বুক ধড়ফড়, কেউবা বলেন বুক ধুকপুক।
হার্ট বিট দ্রুত হয়ে গেলে কী ঘটে
একটা প্রাপ্ত-বয়স্ক মানুষের মিনিটে ৬০ থেকে ১০০ বিটস। অবশ্য অ্যাথলেটদের ক্ষেত্রে প্রতি মিনিটে হার্ট রেট বা পালস রেট ৪০-এর কম হতে পারে। যেহেতু হার্টের ছন্দকে কাউন্ট করে, তাই কোনও ভাবেই হার্ট রেটকে হেলাফেলা করা উচিত নয়। এর থেকে কিছু কিছু রোগের আশঙ্কা বাড়তে পারে যেমন-হৃদরোগ,ফুসফুসের রোগ, জন্ম থেকেই অস্বাভাবিক হার্ট স্ট্রাকচার সমস্যা।
নানা কারণেই এই বুক ধড়ফড় হতে পারে। তবে এটা ঠিক যে বুক ধড়ফড় করা অর্থাৎ হৃৎস্পন্দন বেড়ে যাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হৃদ্রোগ। চিকিৎসাবিজ্ঞানের মতে, এছাড়াও থায়রয়েডের সমস্যা, ডায়াবেটিক রোগীর রক্তে শর্করা কমে যাওয়া, রক্তশূন্যতা, শারীরিক দুর্বলতা, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, যেকোনো ধরনের ভয়, মদ্যপানের অভ্যাস।
হঠাৎ হৃৎস্পন্দন বেড়ে গেলে করণীয়
কারও যদি হঠাৎ হৃৎস্পন্দন বেড়ে যায়, তবে প্রথমেই চেষ্টা করতে হবে তা নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য। এর জন্য নিচের কাজগুলো অনুসরণ করতে পারেন। যেমন:
• নাক–মুখ বন্ধ করে দীর্ঘ শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে থাকুন।
• শিথিলায়নের ধ্যান করতে পারেন।
• চোখেমুখে ঠান্ডা জলের ঝাপটা দিতে পারেন।
জল খাবেন।
• আগে থেকে যদি লো প্রেশার বা রক্তস্বল্পতার সমস্যা থেকে থাকে, তবে স্যালাইন, শরবত, সেদ্ধ ডিম খেতে পারেন।
হঠাৎ হৃৎস্পন্দন বেড়ে যাওয়া খুব সাধারণ একটি ঘটনা। অতিরিক্ত মানসিক চাপ, পরিশ্রমসহ বিভিন্ন কারণে এটি হতে পারে। সাধারণত কিছুক্ষণের মধ্যেই কোনো ধরনের চিকিৎসা ছাড়াই ঠিক হয়ে যায়। এতে দুশ্চিন্তার কিছু নেই।
ওষুধ বা অন্যান্য চিকিৎসার পাশাপাশি যাপিত জীবনে কিছু বিষয় মেনে চলাও আবশ্যক। যেমন:
• অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা ও ডিপ্রেশন পরিহার করা।
বুক ধড়ফড় কেন করে, প্রতিকার
• বিভিন্ন রকমের ইয়োগা, বায়োফিডব্যাক, অ্যারোমা থেরাপি, মিউজিক থেরাপি নেওয়া যেতে পারে।
• মেডিটেশনের অভ্যাস করতে পারেন।
• ধূমপান, মদ্যপান, যেকোনো নেশাজাতীয় দ্রব্য পরিহার করতে হবে।
• অতিরিক্ত কফি, চা বা পান বর্জন করতে হবে।
অনেক সময় হঠাৎ হৃৎস্পন্দন বেড়ে যাওয়ার ফলে রোগী অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন। মাথা ঘুরে পড়ে যেতে পারেন। এ রকম হলে সময় নষ্ট না করে রোগীকে যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নিতে হবে।
অনেক সময় মানসিক চাপ, শরীরচর্চা, ওষুধের প্রভাবেও এমনটা হতে পারে। এছাড়া আর কোন কোন সঙ্কেত পেলে বেশি সাবধান হতে হবে?
ঘন ঘন সর্দি-কাশি লেগেই আছে? এমন কিন্তু স্বাভাবিক নয়। সাধারণ কাশি সপ্তাহ খানেকের বেশি স্থায়ী হয় না। তাই দীর্ঘদিন যদি কাশি না কমে, তাহলে সাবধান হওয়া জরুরি।
ফুসফুসে টিউমার তৈরি হলে বায়ু প্রবাহের পথ রুদ্ধ হতে পারে। আবার কখনো কখনো টিউমারের প্রভাবে ফুসফুসে জল জমে যেতে পারে।
এছাড়াও কফের সঙ্গে রক্ত বেরোনো, হঠাৎ করে ওজন কমে যাওয়া, খাওয়ার ইচ্ছে কমে যাওয়া, সর্বক্ষণ ক্লান্তিভাব, শ্বাস নেয়ার সময় বুকে ব্যথাও ফুসফুসের ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।
হাইপোগ্লাইসেমিয়া হলে অর্থাৎ রক্তের সুগার কমে গেলে, রক্তশূন্যতা থাকলে, রক্তচাপ কমে গেলে, জ্বর হলে— এমনকি পানিশূন্যতা হলেও বুক ধড়ফড় করতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, নখ দেখেও বোঝা যায় আপনার শরীরে এই রোগ বাসা বেঁধেছে কি না! নখ নরম হয়ে যাওয়া, স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বেঁকে যাওয়া, আঙুলে জল জমে ফুলে যাওয়া—এই উপসর্গগুলোও ফুসফুসে ক্যান্সারের উপসর্গ হতে পারে।।
Tags – Health Tips Health Care