Spread the love

কোন লক্ষণ দেখে বুঝতে পারবেন আপনি ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যায় ভুগছেন কি না – What Symptoms Can You Understand If You Are Suffering From Uric Acid Problem

আমাদের মধ্যে অনেকেই জানেন না যে, ইউরিক অ্যাসিডের লক্ষণ কী – কেন এ সমস্যায় ভুগছেন। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক, কী লক্ষণেই বুঝবেন আপনার রক্তে বেড়েছে ইউরিক অ্যাসিড।

ইউরিক অ্যাসিড (Uric Acid) হল রক্তের মধ্যে পাওয়া যাওয়া একটি রাসায়নিক। এটি পিউরিনযুক্ত খাবারের হজম প্রক্রিয়ার সময় উৎপাদিত হয়। পিউরিন (Purine) মটর, ডাল, পালং শাক, মাশরুম, শুকনো মটরশুটি, শুয়োরের মাংস, মুরগির মাংস, মাছ, মাটন, ফুলকপি, রাজমা এবং বিয়ারে পাওয়া যায়। শরীরে উৎপন্ন ইউরিক অ্যাসিডের বেশিরভাগই রক্তে দ্রবীভূত হয় এবং বাকিগুলি কিডনির (Kidney) মাধ্যমে নির্গত হয়।


IMG_20220728_215021-1659025233117 কোন লক্ষণ দেখে বুঝতে পারবেন আপনি ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যায় ভুগছেন কি না - What Symptoms Can You Understand If You Are Suffering From Uric Acid Problem

ঠিক কোন কোন লক্ষণ দেখে নিমেষের মধ্যেই বুঝতে পারবেন আপনি ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যায় ভুগছেন কি না?


ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধির কারণ


ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধির অনেক কারণ থাকতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে, এই সমস্যাটি জেনেটিকও হতে পারে। এ ছাড়া আপনার ভুল খাবার খাওয়ার কারণেও ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যেতে পারে। আপনি যদি বাইরের খাবার বা বিয়ার বেশি খান, মুরগি, মাছ, মাটন ইত্যাদি বেশি খান, দীর্ঘ সময় ধরে খালি পেটে থাকেন, ডায়াবেটিক হন বা থাইরয়েড, ক্যান্সার, কেমোথেরাপি, সোরিয়াসিস, স্থূলতা বা স্ট্রেস ইত্যাদি থাকলে আপনার শরীরে ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধির সমস্যা হতে পারে।

ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যায় ভুগছেন? এই খাবারগুলো খেলে সেরে উঠবেন দ্রূত!


ইউরিক অ্যাসিড কেন বাড়ে

আমাদের শরীরে যে ইউরিক অ্যাসিড আছে, তার এক-তৃতীয়াংশ উৎপাদিত হয় আমিষজাতীয় খাবার থেকে আর দুই–তৃতীয়াংশই কিন্তু কোষের নানা বিপাক ক্রিয়ায় উৎপন্ন হয়। কোনো কারণে যদি কিডনি ইউরিক অ্যাসিড নিষ্কাশন না করতে পারে বা ইউরিক অ্যাসিড বিপাকের এনজাইমে ঘাটতি থাকে, কিংবা অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড তৈরি হতে থাকে, তবে তা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি হতে পারে।

ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে ঘনঘন প্রস্রাব হয়। কারণ কিডনি চায় শরীরে থাকা অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিডকে বের করতে। সেক্ষেত্রে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা অত্যধিক বাড়লে প্রস্রাববের সঙ্গে রক্তও বের হতে পারে। এ ছাড়াও হতে পারে ইউটিআই বা প্রস্রাবে ইনফেকশন।

ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা বাড়লে প্রস্রাবের সময় জ্বালা হতে পারে। এক্ষেত্রে প্রচণ্ড জ্বালাভাবের কারণে অনেকেই প্রস্রাব করতে চান না।

ইউরিক অ্যাসিড বেশি থাকলে কফি, কোমল পানীয়, মদ ও ধূমপান পরিহার করুন। এ ছাড়াও পালংশাক, পুঁইশাক, ফুলকপি, মিষ্টি কুমড়া, ঢ্যাঁড়স, টমেটো ইত্যাদি সবজি না খাওয়াই ভালো।


শরীরে ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে তা অস্থিসন্ধিতে ক্রিস্টাল হিসাবে জমে। এই ক্রিস্টাল জমার কারণে অস্থিসন্ধি ফুলে উঠে লাল হয়ে যায়। এক্ষেত্রে প্রচণ্ড ব্যথা হয়।


তবে আর্থ্রাইটিস ছাড়াও ইউরিক অ্যাসিডের আধিক্য কিডনির মারাত্মক ক্ষতি করে দেয়। এক্ষেত্রে ইউরিক অ্যাসিড কিডনিতে জমে স্টোন হতে পারে। এছাড়াও কিডনিতে হতে পারে ইনফেকশন।

কী করবেন?

ইউরিক অ্যাসিডের দারুণ চিকিৎসা রয়েছে। চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ খেলেই সমস্যা মেটে। তবে ওষুধের পাশাপাশি জীবনযাত্রাও ঠিক করতে হবে। দিনে ৭ ঘণ্টা ঘুমান। দিনে অন্তত ৩০ মিনিট করুন এক্সারসাইজ। খাবারের মধ্যে প্রোটিন বেশি খাওয়া যাবে না।


যা করবেন

যাঁদের ইউরিক অ্যাসিড বেশি, তবে কোনো সন্ধি প্রদাহ বা কিডনি সমস্যা নেই, তাঁরা এ নিয়ে বেশি আতঙ্কিত হবেন না। বারবার রক্ত পরীক্ষা করা বা অকারণ ওষুধ সেবনেরও দরকার নেই। স্থূল বা মোটা মানুষদের ইউরিক অ্যাসিড বেশি থাকে, তাই ওজন কমালে উপকার পাওয়া যায়।


খাবারদাবার নিয়ে বাড়াবাড়ি নিয়ন্ত্রণেরও দরকার নেই। তবে অতিরিক্ত পিউরিন জাতের খাবার, যেমন লাল মাংস, কলিজা, কিছু সামুদ্রিক মাছ, বিয়ার বা অ্যালকোহল সেবন এড়িয়ে চলুন।


ভিটামিন সি–যুক্ত খাবার আর ওমেগা ৩ চর্বি কিছু উপকারে আসে বলে প্রমাণিত হয়েছে।


ইউরিক অ্যাসিড কমানোর জন্য ওষুধ সব সময় প্রয়োজন হয় না। বিশেষ করে অ্যাকিউট অ্যাটাক বা হঠাৎ সন্ধি প্রদাহের সময় ওষুধ দেওয়া হয় না।


পিউরিন সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ কমান

পিউরিন সমৃদ্ধ খাদ্য ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান কারণ। পিউরিন সমৃদ্ধ খাবার, যেমন – বিভিন্ন ধরণের মাংস, সামুদ্রিক খাবার এবং সবজি, যা হজম হওয়ার সাথে সাথে ইউরিক অ্যাসিড তৈরি করে।


পিউরিন সমৃদ্ধ খাদ্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল – সার্ডিন, ড্রাই বিনস, গরু এবং শুয়োরের মাংস, টার্কি, মাছ, সেলফিশ, স্ক্যালপস, মটন, মাশরুম, ফুলকপি, অ্যালকোহল প্রভৃতি।


চিনিযুক্ত খাবার এবং পানীয় এড়িয়ে চলুন

শরীরে অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধির অন্যতম সম্ভাব্য কারণ হল চিনি। ফ্রুক্টোজ হল এক ধরনের সাধারণ চিনি, যা মধু, মিষ্টি, ফল এবং কিছু সবজিতে বর্তমান।


স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখুন

মাসেল সেলের তুলনায়, ফ্যাট সেল বেশি মাত্রায় ইউরিক অ্যাসিড প্রস্তুত করে। অতিরিক্ত ওজন, শরীর থেকে ইউরিক অ্যাসিড বের করতে কিডনিকে বাধা দিতে পারে। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন। দ্রুত ওজন কমানো, ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রাকে প্রভাবিত করতে পারে।

খাদ্যতালিকায় ফাইবার সমৃদ্ধ খাদ্য অন্তর্ভুক্ত করুন

ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার হজম সংক্রান্ত সমস্ত সমস্যা থেকে মুক্তি দেওয়ার সাথে সাথে, ব্লাড সুগার এবং ইনসুলিনের মাত্রার ভারসাম্যতা বজায় রাখতেও সহায়তা করে। যার ফলে শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রাও নিয়ন্ত্রিত থাকে।




Tags – Health Tips Health Care Suffering From Uric Acid Problem


By Bristy

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *