গরমে তালের শাঁস খাওয়ার নানান উপকারিতা – There Are Many Benefits Of Eating Palm Oil In Summer
চলছে গরম কাল। এই সময়ে বাজারে নানা রকম রসালো ফলের দেখা মেলে। তাল তার মধ্যে একটি। যদিও এখনো তাল পাকেনি। কিন্তু তালের শাঁস পাওয়া যাচ্ছে খুব সহজেই। নরম তুলতুলে, রসালো ও মিষ্টি তালের শাঁস অনেকেরই বেশ পছন্দের। কেবল খেতেই নয়, তালের শাঁসের রয়েছে অনেক উপকারিতাও।
অনেকেই বলতে পারেন তালের শাঁস আবার এমন কী উপকারী ফল! কিন্তু জানেন কি গরমে শরীর ও পেট ঠান্ডা রাখে তালের শাঁস। এছাড়া বিভিন্ন শারীরিক সমস্যারও সমাধান করে এই ফল।
গরমে তালের শাঁস খাওয়ার যত উপকারিতা
তালের ফল এবং বীজ দুইই বাঙালি খাদ্য। কাঁচা তালের শাঁস খুবই জনপ্রিয় একটি খাবার।
তাল উদ্ভিদ প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা থেকে গাছকে রক্ষা ও ভূমির ক্ষয় রোধ করে। বহুকাল আগে এই দেশে তার আগমন। প্রতিটি তালে দুই থেকে তিনটি শাঁস হয়। গ্রীষ্মের সময় কচি অবস্থায় তালের শাঁস ব্যাপক চাহিদা থাকে গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত।
গরমে তালের শাঁস খেলে বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি মিলবে। সেই সঙ্গে বাড়বে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। শুধু গ্রীষ্মকালেই বাজারে কচি তাল দেখতে পাওয়া যায়। এর নরম কচি শাঁস খেতে ছোট বড় সবাই পছন্দ করে।
গরমে খান পুষ্টিকর তালের শাঁস! রয়েছে নানান উপকারিতা
তালের শাঁসকে নারিকেলের মতই পুষ্টিকর বলে বিবেচনা করা হয়। এটি খেতে খুবই সুস্বাদু। এতে প্রচুর পরিমাণ জল থাকে। যা অনেকটা ডাবের জলের মতো। এতে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন, ফাইবার এবং খনিজ উপাদান থাকে।
পুষ্টিবিদদের মতে, ডাবের জল এবং তালের শাঁসের গুণাগুণ একই রকমের। দুইটিই খোলসের ভিতরে থাকে।
মিষ্টি স্বাদের কচি তালের শাঁস শুধু খেতেই সুস্বাদু নয় বরং পুষ্টিতেও অনেক ভরপুর। প্রতি ১০০ গ্রাম তালের শাঁসে আছে জলীয় অংশ ৮৭ দশমিক ছয় গ্রাম, আমিষ শূন্য দশমিক আট গ্রাম, ফ্যাট শূন্য দশমিক পাঁচ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ১০ দশমিক নয় গ্রাম, খাদ্য আঁশ এক গ্রাম, ক্যালসিয়াম ২৭ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ৩০ মিলিগ্রাম, আয়রন এক মিলিগ্রাম থাকে।
গরমে শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে তালের শাঁস। প্রচণ্ড গরমে তালের কচি শাঁস এবং এর ভেতরের মিষ্টি জল তৃষ্ণা মিটিয়ে শরীরে এনে দেয় আরামদায়ক অনুভূতি। এছাড়া এ সময় তাপমাত্রার কারণে ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া, চুল পড়া ইত্যাদি রোধ করতে সাহায্য করে এটি। অতিরিক্ত ঘামের ফলে শরীর থেকে যে জল বেরিয়ে যায় তা পূরণ করতে সাহায্য করে তালের শাঁস।
পাকস্থলীর বিভিন্ন সমস্যা এবং হজমের সহায়ক হিসেবে প্রাকৃতিক ওষুধের মতো কাজ করে তালের শাঁস। এটা কোষ্টকাঠিন্য কমায় এবং হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। আলসার এবং এসিডিটি দূর করতেও সাহায্য করে এটি। গভর্বতী নারীদের হজমের জন্য এটি বেশ উপকারী।
তালে শাঁসে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকায় এটি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে থাকে। একই সাথে এটি ক্যানসারের মত মরণব্যাধি রোগ থেকে আমাদের বাঁচায়।
তালের শাঁস আমাদের স্মৃতিশক্তি ভালো রাখে এবং শারীরিক স্বাস্থ্য রক্ষা করে থাকে।
বমি ভাব আর মুখের অরুচিও দূর করতে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
তালের শাঁসে ক্যালসিয়াম থাকায় এটি দাঁতের জন্য অনেক ভালো। দাঁতের এনামেল ভালো রাখে এবং দাঁতের ক্ষয় রোধ করে।
তালের শাঁস হাড়কে শক্তিশালী করে তোলে। কচি তালের শাঁস রক্তশূন্যতা দূরীকরণে দারুণ ভূমিকা রাখে।
তালে শাঁসে আছে পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম, আয়রন, সালফার, সেলেনিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, কপার এবং ম্যাগনেসিয়ামের মতো বেশ কিছু উপকারী উপাদান। যা আমাদের চোখের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
তালে শাঁস রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি খেলে শরীরে নাইট্রেটের পরিমাণ বেড়ে যায়, যা প্রাকৃতিক উপায়ে আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
গরমের কারণে ত্বকে কোনো ধরনের র্যাশ বা ব্রণ দেখা দিলে তালের শাঁস মুখে লাগাতে পারেন। এতে ত্বকের সমস্যা কমে যাবে।
আপনার যদি অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতা থেকে থাকে, তাহলে তা দূর করতে খান কচি তালের শাঁস।
এই ফল শরীরে শক্তি জোগায় ও দৈহিক তাপমাত্রা কমিয়ে দেয়। ফলে শরীর ভেতর থেকে ঠান্ডা থাকে।
শরীরকে আর্দ্র রাখতেও তালের শাঁস বিশেষ উপকারী। তবে গরমে এই ফল বেশি খেলে আবার পেট গরম হতে পারে। তাই অল্প পরিমাণে খাওয়াই ভালো।
বর্তমানে অনিয়মিত জীবনযাপনের কারণে অনেকেই ভুগছেন লিভারের সমস্যায়। জানেন কি তালের শাঁস লিভারের সুরক্ষায় কাজ করে। লিভারের উপর এটি পাতলা আস্তরণের মতো কাজ করে।
গরমে হাত পায়ে চুলকানি কিংবা অ্যালার্জির সমস্যায় ভোগেন অনেকেই। শরীরে জলশূন্যতা সৃষ্টি হওয়ার কারণে এমনটি ঘটে। এ সমস্যারও সমাধান করে তালের শাঁস। তাই গরমে দৈনিক খাদ্যতালিকায় রাখুন তালের শাঁস।
Tags – Food Health Tips Health Care Benefits Of Eating Palm Oil In Summer