গরমে সুস্থ থাকতে কেমন খাবার খাবেন – How To Eat To Stay Healthy In Summer
গরমে সুস্থ থাকতে আমরা অল্প অল্প করে খাই ভয়ে।। চারিদিকে গরমের দাবদাহে জীবন প্রায় অতিষ্ঠ। কিন্তু জীবন-জীবীকার খোঁজে আমাদের ঘর থেকে বের হতেই হবে। আর এই প্রচন্ড গরমে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
আমাদের পরিষ্কার ধারণা থাকতে হবে, কোন খাবার গরমে খাদ্য তালিকা থেকে কমিয়ে দিতে হবে অথবা কোন খাবার একেবারেই খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। মানুষের অসচেতনতার কারণে খাদ্য সম্পর্কিত দীর্ঘমেয়াদি রোগ হয়। যেমন- ১. শরীরের অতিরিক্ত ওজন, ২. ডায়াবেটিস, ৩. ইনসুলিন রেসিসটেন্স, ৪. উচ্চ রক্তচাপ,
সুস্থ-স্বাভাবিক জীবন পরিচালনায় আমাদের দৈনন্দিন খাবারের উপর খেয়াল রাখা চাই। এই গরমে আমাদের কী কী অসুবিধা হচ্ছে ও এই দাবদাহ থেকে বাঁচতে কেমন হওয়া চাই আমাদের প্রতিদিনের খাবার, তা নিয়েই চলুন কথা বলা যাক!
তীব্র গরমে আমাদের কী কী অসুবিধা হয়?
গরম অনেক তীব্র হওয়ায়, আমাদের দেহ থেকে ঘামের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সকল উপাদান বের হয়ে যায়। যার ফলে জলের অভাব ও শারীরিক দূর্বলতার সাথেও আমাদের বেশ কিছু সমস্যা দেখা দেয়।
গরমে সুস্থ থাকতে যেসব খাবার খাবেন
ঘামের মাধ্যমে দেহ থেকে সোডিয়াম ও পটাশিয়াম কমে যাওয়া
বমি হওয়া
জ্বর
হজম ও পেট ফাঁপা জনিত সমস্যা
ডায়রিয়া ও আমাশয়
গরমে সুস্থ থাকতে খাবার যেমন হওয়া চাই
জল শুন্যতারোধে যেমন খাবারঃ
গরমে যেহেতু অতিরিক্ত ঘাম হয়, সেহেতু পানিশুন্যতার সমস্যায় সবাই ভোগে। আর এই জল শুন্যতা থেকে সৃষ্টি হয় ক্লান্তি, দুর্বলতা, মাথা ব্যথা, নিঃশ্বাসের দুর্বলতা, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন, বুকে ব্যথা, ফ্যাকাসে ত্বক ও নখ আর হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়ার সমস্যা।
* গরমে ডাব, তরমুজ, বাঙ্গি, বেলের শরবত এগুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্নভাবে হাত ধুয়ে খাবারের উপযোগী করা।
গরমে সুস্থ থাকতে যা খাবেন
* গরমে মাছ, মাংস, ভুনা, ভাজি, খিচুড়ি, পোলাও, ফাস্টফুড কমিয়ে পাতলা আম ডাল, পাতলা দুধ, টকদই, করলার ঝোল তরকারি, লেবু চিনির শরবত, সালাদ, রসালো ফল খাওয়া যেতে পারে।
* যারা নিয়মিত হাঁটেন, তারা শুধু সময় পরিবর্তন করলেই চলবে। যেমন সকালে না হেঁটে বিকাল/সন্ধ্যার পর হাঁটা বেশি আরামদায়ক।
* গরমে খুব বেশি হাঁটা, ব্যায়াম, অত্যাধিক পরিশ্রম, অত্যাধিক খাদ্য গ্রহণ পরিহার করুন।
* পোশাক পরুন আরামদায়ক। হালকা রং বেছে নিন পোশাকে।
গরমে পুষ্টি :
যারা অতিরিক্ত ওজনে ভুগছেন তারা এই গরমে সজাগ হোন পথ্য ও পুষ্টির ব্যাপারে। ওজন কমানোর জন্য গরমকাল সহায়ক। কেননা আপনি যদি উচ্চ ক্যালরি পরিহার করে নিন্ম ক্যালরির খাদ্য গ্রহণ করেন তবে ওজন কমবে। নিন্ম ক্যালরি খাবারের মধ্যে রয়েছে ফল (যেমন- তরমুজ, বাঙ্গি, জাম, জামরুল, ডাব ইত্যাদি) ও সবজি (যেমন- লাউ, পেঁপে, ঝিংগা, কুমড়া ইত্যাদি)।
* কম তেলে খাবার খেয়ে আপনি স্বস্তি বোধ করবেন, হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমবে।
*শুকনো ফলের পরিবর্তে তাজা ফল খাওয়ার অভ্যাস করুন।
* তীব্র রোদে ঘুরে আসার পর অতিরিক্ত ঠান্ডা জল অথবা খাবার খাওয়া উচিত নয়। এতে আরাম হলেও শরীরের তাপমাত্রা তারতম্যের জন্য ঠাণ্ডা লেগে যেতে পারে।
* হিটস্ট্রোক থেকে বাঁচার জন্য লবণ দিয়ে কাঁচা আম খেলে উপকার পাওয়া যাবে।
* ডাবের জল এ সময় খুবই উপকারী। এতে আছে সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, সালফার ও ক্লোরিন।
হজমে চাই সহজপাচ্য খাবার
এই গরমে মাছ, মাংস, বেশি তেল দিয়ে ভাজি খাওয়া কমিয়ে আমাদের সহজপাচ্য খাবার খাওয়া উচিত। তাই আপনার দৈনন্দিন খাবার তালিকায় যুক্ত করুন লাউ, মিষ্টি কুমড়া ও চাল-কুমড়া, পেঁপের তরকারি। এই সকল সবজি আমাদের দেহে জলের চাহিদাও পূরণ করে থাকে।
প্রতিদিন সালাদ ও টক দই
খাবার টেবিলে প্রতিদিন সালাদ রাখুন। শসার সালাদ, মিক্সড ফলের সালাদ কিংবা আলাদা করে টক দই না খেয়ে শসার সাথেই টক দই মিশিয়ে সালাদ বানিয়ে নিতে পারেন। খেতে তো দারুণ লাগবেই, সেই সাথে পূরণ হবে দেহের পুষ্টি চাহিদা! সালাদের পাশাপাশি প্রচুর শাক-সবজি রাখুন যা দেহের ফাইবারের চাহিদা পূরণ করবে।
ঋতু পরিবর্তনের কারণে বা গরমে অতিরিক্ত ঘেমে অনেকেই এ সময় ঠান্ডা, সর্দি, কাশি, গলাব্যথায় আক্রান্ত হয়। এ সময় ভিটামিন সি–সমৃদ্ধ টক ফল ও সবজি, যেমন কমলা, মাল্টা, আনারস, পেয়ারা, ক্যাপসিকাম বেশ ভালো কাজ দেয়। এ ছাড়া গরম স্যুপ, গ্রিন টি, তুলসী চা, আদা চা বা যেকোনো হারবাল চা সর্দি, কাশি, গলাব্যথা নিরাময়ে বেশ কার্যকর।
Tags – Healthy In Summer Food Health Tips Health Care