শীতে চুলের রুক্ষতা দূর করতে কোন তেল ব্যবহার করবেন জেনে নিন – Know Which Oil To Use To Remove Roughness Of Hair In Winter
চুলের যত্নে তেল সবচেয়ে উপকারী সেকথা তো আমরা সবাই জানি। কিন্তু কোন তেলগুলো সবচেয়ে বেশি উপকারী, তা অনেকেই জানেন না,,
চুলের এত যত্ন নেওয়ার পরেও কি চুলের হাল খুব বাজে??তাহলে কী করবেন এখন, কিছু কি ভেবেছেন? আমি বলছি বাড়িতেই যত্ন নিন আপনার চুলের। চুলের যত্ন নিলেই চুলের হাল ফিরবে। চুলের যত্নে হেয়ার অয়েল ব্যবহার করুন। নারকেল তেল, আমন্ড অয়েলের মতো তেল ব্যবহার করতে পারেন। আপনার চুল ভালো রাখবে। জেনে নিন বিস্তারিত…
জানেন কি আপনার বাড়িতেই এমন কিছু উপাদান আছে যা দিয়ে আপনি নিজের হেয়ার অয়েল বা চুলের তেল বানিয়ে নিতে পারেন। আর সেই তেল দিয়েই আপনার চুলের যত্ন নিতে পারেন।
আপনার হয়তো অনেকটা তেল মাথায় লাগানো উচিত। অনেকের মধ্যেই এই ভুল ধারণা কাজ করে যে, বেশি করে তেল লাগালে হয়তো চুল ভালো থাকবে। কিন্তু এর মতো ভুল আর করবেন না। কারণ, এর জন্যই আপনার চুলের বারোটা বাজছে! তেল অবশ্যই লাগান, কিন্তু পরিমাণ মতো লাগান। তবে তার পরিমাণও ঠিক করা আছে। অনেকটা পরিমাণে তেল লাগালে আপনার শ্যাম্পুও অনেকটা লাগাতে হয়। যা আসলে চুলের জন্য খারাপ।
অনেকেই মনে করেন, তেল মেখে যতক্ষণ রেখে দেওয়া যায় হয়তো ততই ভালো! কিন্তু এর থেকে ভুল ধারণা হয়তো আর কিছু হয় না। ঠিক একই কারণে অনেকে ওভার নাইট তেল মেখে রাখার পরামর্শ দেন। কিন্তু না! এটা করবেন না। তেল মাখা থাকলে স্ক্যাল্পে ও চুলের গোড়ায় ময়লা আটকানোর সম্ভাবনা থেকে যায় আরও বেশি।
রুক্ষ চুলের যত্ন নিতে যা করবেন
তখন চুলের গোড়ায় ময়লা জমে চুল পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে যায়। তাই কখনও তেল মেখে সারা রাত রেখে দেবেন না। বরং, শ্যাম্পু করার অন্তত ১ ঘণ্টা আগে ভালো করে তেল লাগিয়ে নিন মাথায়। স্ক্যাল্পে, চুলের গোড়ায় এবং চুলের ডগাতেও ভালো করে তেল লাগান। এরপর রেখে শ্যাম্পু করে ফেলুন।
শীতে রুক্ষতা দূর করে চুল পড়া কমাবে এই টিপস্ গুলো
তেল প্রয়োগের সঠিক নিয়ম:
১। তেল মাথায় লাগানোর আগে তা কুসুম গরম করে নিন।
২। এবার এই তেলটি আঙ্গুল দিয়ে মাথার তালুতে ম্যাসাজ করুন। সবচেয়ে ভালো হয় চুলগুলো সিঁথি করে ভাগ করে ফেলুন। তারপর ম্যাসাজ করে চুলে তেলে লাগান।
৩। একসাথে অনেক তেল মাথায় ঢেলে দিবেন না। অল্প অল্প করে মাথার তালুতে ম্যাসাজ করে তেল লাগান।
৪। শ্যাম্পু করার আগে হট টাওয়েল ট্রিটমেন্ট দেওয়ার চেষ্টা করুন।
৫। সপ্তাহে কমপক্ষে দু বার তেল ব্যবহার করুন।।
৬। চুলের যত্ন নেওয়ার জন্য নারকেল তেল ব্যবহার করবেন।।
নারকেল তেল
চুলের হাজার সমস্যা সমাধান করার জন্য এই নারকেল তেল ভীষণ কাজে দেয়। যাই হোক, আপনি বাড়িতেই নারকেল তেল পাবেন। একটি পাত্রে পরিমাণ মতো নারকেল তেল নিন। মনে রাখবেন অতিরিক্ত পরিমাণে তেল নেবেন না। এবার সেই নারকেল তেল সামান্য পরিমাণে গরম করে নিন। এর মধ্যে ক্যাস্টর অয়েল যোগ করতে পারলে আরও ভালো। চুল ওঠার সমস্যা থাকলে এই তেলই সবচেয়ে ভালো। নারিকেল তেল ময়শ্চারাইজার হিসেবও খুব ভালো এবং চুলের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে সাহায্য করে৷
শীতে চুলের যত্নে জেনে রাখুন ঘরোয়া টিপস!
আমন্ড অয়েল: এই তেলটি হালকা ও একেবারেই চটচটে নয়। ভিটামিন ই-র গুণে ভরপুর এই তেলটি চুলে পুষ্টি জোগায়, চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং চুল মজবুত ও ঝলমলে করে তোলে। আমন্ড অয়েল স্ক্যাল্পেও পুষ্টি জোগায় এবং খুসকি কমাতে সাহায্য করে।
অলিভ অয়েল: এই তেলটিতে পর্যাপ্ত এসেনশিয়াল ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে যা স্ক্যাল্পকে পুনরুজ্জীবিত করে, চুলের গোড়ায় পুষ্টি জোগায়, এবং চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এই হেয়ার অয়েলটিতে পর্যাপ্ত ময়শ্চারাইজার রয়েছে এবং এটি ভিটামিন ই-তে ভরপুর যা চুলের বৃদ্ধির জন্য খুবই প্রয়োজনীয়।
ক্যাস্টর অয়েল: যারা অত্যধিক চুল ওঠার শিকার, তাদের শরীরে সাধারণত প্রস্টাগ্ল্যান্ডিন বা পিজিডি২ হরমোনের আধিক্য থাকে। গবেষণা বলছে, ক্যাস্টর অয়েলে উপস্থিত একটি উপাদান দিয়ে এই হরমোনটিকে দমন করা যায়, ফলে চুল পড়া বন্ধ হয়ে চুলের বৃদ্ধি ভালো হতে শুরু সেইসঙ্গে প্রতিরোধ করা যায় চুলের শুষ্কতাও। এই তেলে রিসিনোলেইক এসিড থাকে। যে কারণে এটি ব্যবহারে চুলের গোড়ায় দিলে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে।
খুশকি দূর করতে
মাথার তালুতে ফাঙ্গাল ইনফেকশন থেকে খুশকির উৎপত্তি। নিম অয়েল অথবা টি ট্রি অয়েল এই ফাঙ্গাস দূর করে খুশকি দূর করতে সাহায্য করে। এই দুটি তেলে রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান যা মাথার তালুর ইনফেকশন রোধ করে।
আগা ফাটা রোধ
ক্ষতিগ্রস্ত চুলের অন্যতম সমস্যা হলো আগা ফাটা রোধ। ক্যাস্টর অয়েলে ওমেগা ফ্যাটি অ্যাসিড এবং মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে যা চুলের আগা ফাটা রোধ করতে বেশ কার্যকর।।