Spread the love

হার্টের রোগীদের জন্য মাছ – Fish For Heart Patients


সমীক্ষা থেকে জানা যাচ্ছে, প্রতি সপ্তাহে অন্তত দু’বার তৈলাক্ত মাছ (oily fish) খেলে যাঁদের হার্টের অসুখ হওয়ার ঝুঁকি আছে, তাঁরা উপকার পাবেন। কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ প্রতিরোধে তৈলাক্ত মাছের কোনও বিকল্প নেই। যাঁদের ইতিমধ্যেই হৃদরোগ দেখা দিয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে এটা আরও বেশি প্রযোজ্য।

সম্প্রতি একটি নতুন গবেষণায় এই ইঙ্গিত মিলেছে যে, মাছে থাকা ওমেগা-৩ (omega-3) ফ্যাটি অ্যাসিডই প্রকৃতপক্ষে হার্ট অ্যাটাক (heart attack) এবং স্ট্রোকের মতো বড় সমস্যাগুলি সামাল দিতে পারে। যাঁরা সপ্তাহপিছু এই ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ তৈলাক্ত মাছ খান, তাঁদের হার্টের সমস্যা অনেকটাই কম হয় ।


IMG_20220802_150524-1659432935870 হার্টের রোগীদের জন্য মাছ - Fish For Heart Patients

হার্টের রোগীরা কি মাছ খাবেন

হৃদযন্ত্রের সমস্যায় আক্রান্ত রোগীরা যত বেশি মাছ খাবেন, তত কম হবে তাঁদের কারডিও সমস্যা। আসলে, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড শরীরে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কম করে। হার্টে রক্ত জমাট বেঁধে গেলে সমস্যা দেখা দিতে পারে। শরীরে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমলে রক্তের এই জমাট বাঁধার প্রবণতাও কমবে।


মাছকে বেক, গ্রিল বা ব্রয়েল (আগুনে ঝলসে) করে তো খেতেই পারেন! সপ্তাহে বার পাঁচেক এ ভাবে খেলে বিপদের আশঙ্কা ৩০ শতাংশ কমে যাবে ,একান্ত ভাজা খেতে হলে বাড়িতে অল্প তেলে সাঁতলে বা সতে করে খান। ডুবো তেলে কড়কড়ে করে মাছ ভাজলে বিপদ আসন্ন।

মাছের ম্যাজিক


মাছের তেলে আছে পলিআনস্যাচুরেটেড এসেনশিয়াল ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। প্রচলিত কথায় ওমেগা থ্রি’জ৷ তিন ধরনের ওমেগা থ্রি হয়, এএলএ (আলফা লিনোলেনিক অ্যাসিড), ডিএইচএ (ডোকোসাহেক্সেনোয়িক অ্যাসিড) ও ইপিএ (ইকোস্যাপেনটেনিনোইক অ্যাসিড)৷ সামুদ্রিক মাছে, পুকুর ও নদীর কিছু তৈলাক্ত মাছে ডিএইচএ এব‌ং ইপিএ পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে৷ ফলে নিয়মিত খেলে হার্টও ভাল থাকে৷ মাছে ভাল জাতের প্রোটিন প্রচুর থাকে বলে খেলে পেট বহু ক্ষণ ভরা থাকে৷ ওজন কমার সুরাহা হয়৷ রক্তে চর্বির মাত্রা কমিয়ে ইসকিমিক হার্ট অ্যাটাক ঠেকাতেও সে সিদ্ধহস্ত৷ ওমেগা থ্রি’–র প্রভাবে মন ভাল থাকে৷


ছোট থেকে তৈলাক্ত মাছ খেলে মস্তিষ্ক উন্নত মানের হয়৷ তবে বাচ্চাদের সামুদ্রিক মাছ খাওয়ানোর আগে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত৷ সব চেয়ে ভাল হয়, নিয়মিত পুকুর বা নদীর মাছ খাওয়ানোর পাশাপাশি সপ্তাহে এক–আধ দিন সামুদ্রিক মাছ খাওয়ালে৷ ত্বক–চুলের উজ্জ্বলতা বাড়াতে ওমেগা থ্রি–র ভূমিকা আছে৷ সোরিয়াসিস নামে ত্বকের অসুখের প্রকোপ কমাতে ওষুধপত্রের সঙ্গে অনেক সময় তৈলাক্ত মাছ খেতে বলা হয়৷


হার্টের সুরক্ষার খাতিরে সপ্তাহে অন্তত দু’-তিন বার ৩.৫ আউন্সের মতো তৈলাক্ত মাছ খান৷ ক্যালোরি নিয়ে চিন্তা করবেন না৷ ব্যায়াম করলে ও অস্বাস্থ্যকর খাবার না খেলে এটুকু থেকে কোনও সমস্যা হয় না৷ মাঝেমধ্যে চুনো মাছ খান৷ পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম পাবেন৷


হৃদরোগ ঠেকাতে খান কালচে রঙের মাছ খান। যেমন, স্যামন, ম্যাকারেল, ব্লু ফিশ৷ রুই-কাতলা, মৃগেলেও উপকার আছে।


মাছ কী ভাবে রান্না করছেন সেটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷ ইসকিমিয়া, হার্ট অ্যাটাক বা হৃদযন্ত্র বিকল হওয়া থেকে বাঁচতে ভাজা মাছ খাবেন না৷ খাবেন বেক, ব্রয়েল বা গ্রিল করে৷ মাছসেদ্ধ বা ফিশ স্টুও খেতে পারেন৷ অসুখবিসুখ না থাকলে মাঝেমধ্যে মাছ ভাজা খেলে তত ক্ষতি নেই৷ তবে ভাজতে হবে নিয়ম মেনে৷


মাছ ভাজার নিয়ম


ছাঁকা তেলে না ভেজে প্যান ফ্রাই করুন৷ অর্থাৎ কড়াইতে অল্প তেল দিয়ে, তা হালকা গরম হলে ম্যারিনেট করা মাছ দিন৷ কম আঁচে আস্তে আস্তে এ–পিঠ ও–পিঠ করে ভাজুন৷ ইন্ডাকশন কুকারের সতে করে রান্না করলে সবচেয়ে ভাল৷ কারণ, তাতে তাপমাত্রা একটা নির্দিষ্ট সীমায় বাঁধা থাকে৷ অলিভ অয়েল দিয়ে প্যান ফ্রাই বা সতে করতে পারেন৷ ওই তাপমাত্রায় এই তেলই সবচেয়ে নিরাপদ৷ পাউরুটির গুঁড়ো দিয়ে বানানো ব্যাটারে ডুবিয়ে মাছ ভাজলে প্রচুর তেল লাগে৷


IMG_20220802_150450-1659432936084 হার্টের রোগীদের জন্য মাছ - Fish For Heart Patients

হার্টের রোগীরা কি মাছ খাওয়া উচিত


হৃদরোগ প্রতিরোধ করতে হলে স্যাচুরেটেড নয় এমন চর্বি (যেসব খাবারের উপর চর্বি জমাট বাঁধে না) সে ধরনের খাবার খেতে হবে। এসব খাবারের মধ্যে রয়েছে, তেল সমৃদ্ধ মাছ, বাদাম ও বীজ। অলিভ, রেপসিড, সানফ্লাওয়ার, কর্ন এবং ওয়ালনাট তেল দিয়ে রান্নার বিষয়ে তারা জোর দিয়েছেন।



Tags – Health Tips Health Care Fish

By Bristy

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *