হার্ট দুর্বল হলে কি করণীয় – What To Do If The Heart Is Weak
দৈনন্দিন জীবনে যে কয়টি অভ্যাস আপনার হৃৎপিণ্ডকে সুস্থ সবল রাখতে পাব়ে , সেগুলো হলোঃ স খাবার, নিয়মিত ব্যায়াম, মানসিক চাপ না নেওয়া, ওজন নিয়ন্ত্রণ আর ধূমপান না করা l
হার্ট ভালো রাখার উপায়
১. নিয়মিত ব্যায়ামঃ
শারীরিক কসরতের মাধ্যমে ঘাম ঝরানো ভীষণ ক্লান্তিকর ব্যাপার l অথচ হৃৎপিণ্ড ভালো রাখতে সপ্তাহে ন্যূনতম পাঁচ দিন করে রোজ ৩০ মিনিট ব্যায়ামের প্রয়োজন বড়দের। কিন্তু ব্যায়ামের অভ্যাস না থাকলে হুট করে ব্যায়াম করা যায় না । ২০মিনিট হাঁটা কিংবা সাংসারিক কাজের মধ্য দিয়ে ব্যায়ামের রুটিন সেরে নিতে পারেন। অথবা অফিস থেকে ফেরার পর বিকেলে কিংবা রাতে এ রকম আরও কিছু কাজ দিয়ে ব্যায়াম সেরে নিতে পারেন।
হার্ট দুর্বল হলে কি করবেন
পরিমিত বিশ্রামঃ
দৈনন্দিন কাজের ফাঁকে পরিমিত বিশ্রাম নিন। মানে, স্রেফ কিছুই করবেন না, কোনো চাপ নেওয়ার দরকার নেই। বিশ্রাম হৃৎপিণ্ডের জন্য উপকারী। আর তাই মাঝেমধ্যে কাজ ফেলে উঠে দাঁড়ান। বড় করে একটা শ্বাস নিয়ে মোবাইল ফোন বন্ধ করুন। সাংসারিক কিংবা অফিসের কাজ ভুলে যান।
ওজন কমানঃ
স্থূলকায় মানুষের ওজন নিয়ে দুর্ভাবনার শেষ নেই। ওজন কমাতে ক্যালরির হিসাব করছেন, ব্যায়াম করছেন কিন্তু তারপরও কমছে না কিছুতেই। স্বাস্থ্যকর খাবার আর ক্যালরিযুক্ত খাবার কিন্তু এক নয়। পুষ্টিকর খাবার খান এবং ক্যালরি খরচ ও গ্রহণে ভারসাম্য আনুন। তরল খাবার খেতে পারেন। শাকসবজি থাকুক প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায়। এ ছাড়া শারীরিক পরিশ্রম করুন।
ধূমপান ছেড়ে দিনঃ
ধূমপানের অপকারী দিকগুলো নিয়ে ভাবুন। এটা ছাড়ার উপকারী দিকগুলোতে মনোযোগী হতে পারেন। ধূমপায়ী বন্ধুদের সঙ্গ ত্যাগ করাই শ্রেয়। মদ্যপান এড়িয়ে চলুন। এটা ধূমপানে আপনাকে আরও আকৃষ্ট করবে। শরীরচর্চার মধ্যে থাকলে ধূমপানের ইচ্ছা কমে যেতে পারে। কর্মচাঞ্চল্যের মধ্যে থাকলেও সুফল পেতে পারেন।
হার্ট সতেজ রাখতে যা করবেন
মানসিক চাপ কমানঃ
হৃৎপিণ্ড ভালো রাখতে মানসিক প্রশান্তির বিকল্প নেই। কিন্তু কর্মক্ষেত্র, সমাজ কিংবা পরিবার থেকে মানুষ নানাভাবে চাপে থাকে। এসব চাপ যেমন মোকাবিলা করতে হবে, তেমনি বুদ্ধি করে কমাতেও হবে। প্রতিদিনের কাজের চাপ শেষে নিজের জন্য আলাদা করে একটু সময় বের করুন। পছন্দের গান শুনতে পারেন কিংবা বই পড়তে পারেন।
ধীরে ধীরে উপরে বর্ণিত অভ্যাসগুলো গড়ে তুলুন এবং বদঅভ্যাসগুলো ত্যাগ করুন, দেখবেন আপনার হার্ট দিব্যি সুস্থ আছে l
প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসে সামান্য কিছু পরিবর্তন এনেই এসব অর্জন করা সম্ভব।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে খাবার-দাবারের বেলায় কী ধরনের পরিবর্তন আনতে হবে?
১. বেশি করে আঁশযুক্ত খাবার খান
যেসব খাবারে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ আছে সেসব খাবার খাবেন। এসব খাবারের কারণে শরীরে স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া তৈরি হয়।
কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে সাহায্য করে এই ব্যাকটেরিয়া।
বেশি আঁশ আছে এরকম সবজির মধ্যে রয়েছে শিম ও মটরশুঁটি জাতীয় সবজি, কলাই ও ডাল জাতীয় শস্য এবং ফলমূল।
স্যাচুরেটেড ফ্যাট বা জমাট-বাঁধা চর্বি জাতীয় খাবার কমিয়ে ফেলুন
যেসব খাবারে বেশি স্যাচুরেটেড ফ্যাট বা জমাট-বাঁধা চর্বি থাকে সেসব খাবার খেলে শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়। এর ফলে বেড়ে যায় হৃদরোগের ঝুঁকিও।
চিজ, দই, লাল মাংস, মাখন, কেক, বিস্কিট ও নারকেল তেলে প্রচুর পরিমাণে স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে।
লবণ খাবেন না
লবণ বেশি খেলে শরীরে রক্তচাপ বেড়ে যায়। এর ফলে বৃদ্ধি পায় হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকিও।
ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ খাবার খাবেন
যেসব খাবারে ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ বেশি থাকে সেগুলো আমাদেরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
শুধু তাই নয়, এসব খাবার হৃদরোগের ঝুঁকিও কমিয়ে দেয়।
ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়ামের মতো খনিজ উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধ করে। হৃদরোগের যেসব কারণ আছে সেগুলো ঠেকাতেও এসব খনিজ ইতিবাচক প্রভাব রাখতে পারে।
অনেক খাদ্য বিশেষজ্ঞ মনে করেন, স্বাস্থ্যকর ও ভারসাম্যপূর্ণ ডায়েটের মাধ্যমেই এসব ভিটামিন ও খনিজ পাওয়া সম্ভব।
কারো শরীরে ভিটামিন ও মিনারেলের অভাব থাকলে যেসব খাবার খাওয়া প্রয়োজন:
প্রতিদিন পাঁচটি ফল বা সবজি খাওয়া। ছোট্ট এক গ্লাস জুস। শিম ও ডাল জাতীয় শস্যও খেতে পারেন। বাদাম ও বীজ জাতীয় খাবারে থাকে ভিটামিন ই।
মাছ, দুগ্ধজাত খাবার ও হোলগ্রেইনে পাওয়া যায় ভিটামিন বি। কলা, আলু এবং মাছে পটাশিয়াম।
দুর্বল হার্টের লক্ষণ
দ্রুত হার্টবিট-
স্বাভাবিক জীবনে আমরা হৃদস্পন্দন অনুভব করি না, তবে আপনার হৃদস্পন্দন যদি হঠাৎ করে খুব দ্রুত হয়ে যায় এবং আপনি সহজেই স্পন্দন অনুভব করতে সক্ষম হন।
ক্লান্তি এবং দুর্বলতা-
আপনি যদি খুব দুর্বল এবং ক্লান্ত বোধ করেন তবে আপনার হৃদয় দুর্বল হতে পারে। আসলে আমাদের হৃৎপিণ্ড সারা শরীরে রক্ত বহন করে। কিন্তু দুর্বল হয়ে পড়লে রক্ত সঞ্চালন হতে বেশি সময় লাগে।
বুকে ব্যথা-
বুকে কোনও ধরনের ব্যথা থাকলে তা গুরুত্ব সহকারে নেওয়া উচিত। হার্টের দুর্বলতার কারণেও বুকে ব্যথা হতে পারে। করোনা ভাইরাস আমাদের ফুসফুস এবং শরীরের অন্যান্য অংশকে প্রভাবিত করছে, যার কারণে বুকে ব্যথার সমস্যাও হতে পারে।
হার্টের স্বাস্থ্যের অবস্থা কীভাবে জানবেন-
আসলে, আপনি হার্টের পরীক্ষা করাতে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন। ইসিজি ও অন্যান্য পরীক্ষা থেকে অনেক কিছু জানা যায়।
হার্টের জন্য মেডিকেল পরীক্ষার পদ্ধতি
১) দৈর্ঘ্য পরীক্ষা করুন- একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে আপনার উচ্চতা আপনার হার্টের স্বাস্থ্য সম্পর্কে অনেক কিছু বলে। যদি আপনার উচ্চতা গড় থেকে ২.৫ ইঞ্চি কম হয়, তাহলে আপনার হৃদরোগের ঝুঁকি ১৩.৫ শতাংশ বেশি।
২) স্থূলতার সঙ্গে হার্ট টেস্ট করুন- আপনার কোমর যদি নিতম্বের চেয়ে মোটা হয়, অর্থাৎ কোমরে চর্বি বেশি থাকে, তাহলে আপনি হৃদরোগের ঝুঁকিতে বেশি।
৩) সিঁড়ি দিয়ে ওঠার পরীক্ষা- হার্টের ফিটনেস পরীক্ষা করতে সিঁড়ি ব্যবহার করুন। এটি একটি খুব সহজ উপায়. আপনাকে ১ মিনিটে ৫০-৬০ টি ধাপে উঠতে হবে।
TAGS
Fitness
Health Tips
Healthy Heart
Heart Condition
Home Test