হার্টের জন্য উপকারি খাবার – Foods That Are Good For The Heart
হৃদপিন্ড হল আমাদের শরীরের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। আজকের দিনে হার্টকে সুস্থ রাখাটাই চ্যালেঞ্জিং হয়ে গিয়েছে। প্রতিবছর ২৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ব হৃদপিন্ড দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
কথায় আছে স্বাস্থ্যই সম্পদ, আর মানুষের সবচেয়ে বড়ো সম্পদ হলো তার হৃদয়। অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস যেমন খাবারে অত্যধিক মশলা যোগ করা, অত্যধিক লবণ খাওয়া, খাবারের পরে মিষ্টি খাওয়া ইত্যাদি হল ভারতীয় পরিবারে অনুসরণ করা কিছু অভ্যাস যা কার্ডিওভাসকুলার বা হৃদরোগের প্রধান কারণ।
হার্ট ভালো রাখে যেসব খাবার
হৃদরোগ একাধিক কারণে হতে পারে যেমন হৃদপিন্ডের টিস্যুতে দাগ পড়া, রক্ত প্রবাহ কমে যাওয়া, হৃদপিন্ডের পেশী ঘন হয়ে যাওয়া, রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়া ইত্যাদি।
আমাদের কার্ডিয়াক রোগীর ডায়েট প্ল্যানে প্রচুর পরিমাণে ফল এবং শাকসবজি রয়েছে যা পুষ্টিতে উচ্চ এবং কম কোলেস্টেরল সহ পুরো শস্য যেমন বাজরা, জোয়ার, ওটস, রাগি ইত্যাদি। ময়দা থেকে তৈরি খাবার যেমন কুকিজ, কোল্ড ড্রিঙ্কস, লাল মাংস, মাখন, বনস্পতি তেল, গভীর ভাজা খাবার ইত্যাদি পরিহার করতে হবে।
এই বিশেষ দিনটির লক্ষ্য হল হৃদযন্ত্র সম্পর্কিত রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং কীভাবে তাঁদের হৃদয়কে সুস্থ রাখা যায় সে সম্পর্কে মানুষের জ্ঞান বৃদ্ধি করা। হৃদয়কে ফিট রাখার জন্য ডায়েটে যোগ করুন এই কয়েকটি ফল –
তরমুজ: এই উপকারী ফলের জেরে ক্ষতিকারক কোলেস্টেরল তৈরি বন্ধ হয়ে যায়। তরমুজ এলডিএল, কোলেস্টেরলের উৎপাদনকে অর্ধেক করে দেয় যা ধমনী এবং হৃদপিন্ডের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
কমলালেবু: এটি সাইট্রাস ফল, যেখানে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। য়েছে প্রচুর পুষ্টিগুণ।
হার্ট সতেজ রাখতে প্রয়োজন খাদ্যভ্যাস
বাদাম
বাদামের মধ্যে আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট রয়েছে, যা হার্টের জন্যে উপকারী। বাদাম একটি লো-গ্লাইসেমিক ইনডেক্স সমৃদ্ধ খাবার, যা ডায়াবেটিস প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা রাখে। সব ধরনের বাদামই ভালো, তবে চীনাবাদাম সহজলভ্য বলে আপনি এটি প্রতিদিন খেতে পারেন।
শিমে আছে সয়া প্রোটিন, যা রক্তের ট্রাইগ্লিসারাইড মাত্রাকে কমায়। আধাকাপ শিমে আছে নয় গ্রাম কোলেস্টেরল কমাবার উপযোগী আঁশ।
গাজর
গাজর কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। এর মধ্যে যে ধরনের দ্রবণীয় আঁশ পাওয়া যায়, তা কোলেস্টেরল কমিয়ে থাকে।
রসুন
রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল হলো এলডিএল, রসুন এই এলডিএলের মাত্রা কমাতে দারুন উপকারী। পুষ্টিবিজ্ঞানীরা রসুনকে অভিহিত করেছেন প্রাকৃতিক এন্টিবায়োটিক হিসেবে। হৃৎপিণ্ডের সুস্থতা ও সার্বিক সুস্বাস্থ্যের জন্যে প্রতিদিন রসুনের একটি কোষ খান।
টক দই
চিনি ছাড়া দই অর্থাৎ টক দই হৃৎপিণ্ডের পাশাপাশি পুরো শরীরের জন্যেই অত্যন্ত উপকারী। করোনারি হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন যারা, তাদের জন্যে টক দই বিশেষভাবে উপকারী। টক দই আপনার পরিপাকতন্ত্রের সুস্থতা ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
মিষ্টি আলু
আলু বেশি খেলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে, সাধারণভাবে এমনটাই মনে করা হয়। কিন্তু মিষ্টি আলু এর ব্যতিক্রম। কারণ মিষ্টি আলু লো-গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খাবার। আর মিষ্টি আলুতে আছে দ্রবণীয় আঁশ, ভিটামিন এ এবং লাইসোপেন, যা হার্টের জন্যে উপকারী।
বেরিজ: সব ধরনের বেরিই হার্টের জন্য ভালো, সেটা ব্লুবেরি হোক বা ব্ল্যাকবেরি হোক বা স্ট্রবেরি হোক, এই ধরনের ফলের অধিক পরিমাণে গ্রহণ হৃদরোগজনিত রোগ প্রতিরোধ করে।
বাতাবি লেবু: এতে রয়েছে ভিটামিন সি, পটাশিয়াম এবং ফাইবার যা হৃদরোগ প্রতিরোধে জন্য উপকারী বলে মনে করা হয়।
অ্যাপ্রিকট: এটি ভিটামিন (এ, সি, ই এবং কে), প্লাস ফাইবারের মতো প্রচুর পুষ্টিতে ভরা। কমলা রঙ ক্যারোটিনয়েডস থেকে আসে, আর একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের উপাদানও বটে।
সেই সঙ্গে –
ফল: পেয়ারা, পেঁপে, কমলা, ডালিম, আপেল, নাশপাতি, মোসাম্বি, অ্যাভোকাডো, বেরি, আঙ্গুর যা রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
শাকসবজি: সবুজ পাতাযুক্ত সবজি, লাউ, লেডিফিঙ্গার, বাঁধাকপি, ফুলকপি, বীটরুট; এগুলি ভিটামিনের দুর্দান্ত উৎস এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ।
সিরিয়াল: গোটা শস্য এবং তাদের পণ্য যেমন বাজরা, জোয়ার, ওটস, ডালিয়া, সুজি, রাগি, বাদামী চাল, লাল চাল, রাজগিরা এবং কুট্টু ফাইবারের ভাল উৎস যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে এবং হৃদপিণ্ডের স্বাস্থ্য বাড়াতে সাহায্য করে।
দুধ এবং দুগ্ধজাত পণ্য: স্কিমড মিল্ক, কম চর্বিযুক্ত দই, ঘরে তৈরি পনির হল আপনার হার্টের জন্য সবচেয়ে ভালো প্রোটিনের সমৃদ্ধ উৎস।
বাদাম এবং বীজ: আখরোট, বাদাম, চিনাবাদাম, শণের বীজ, কুমড়ার বীজ, তিলের বীজ সবই হার্ট-স্বাস্থ্যকর পুষ্টির ভালো উৎস।
মাংস এবং মাছ: চর্বিহীন মাংস, মাছ, ডিম স্বাস্থ্যকর চর্বি যা আপনার কোলেস্টেরল এবং রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
Tags – Foods That Are Good For The Heart health Tips health care