শরীর ভাল রাখতে পাতে রাখুন এই ৫ অ্যালকালাইন খাবার – Keep These 5 Alkaline Foods To Keep Your Body Healthy
আপনি হয়তো জানেন না ক্ষারীয় খাবার অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তি দেয় এবং শরীরে অ্যাসিডের মাত্রার ভারসাম্য রাখতে সহায়তা করে। একইসঙ্গে এই খাবারগুলো পেট ঠান্ডা রাখে।
ইদানীং ব্যাপক জনপ্রিয় হয়েছে অ্যালকালাইন ডায়েট। এই ডায়েটে মাছ, মাংস থাকে নামমাত্র। বদলে জোর দেওয়া হয় শাক, সবজি এবং ফলের উপর। অনেক সেলিব্রিটিও আজকাল অ্যালকালাইন ডায়েটে মজেছেন। তাদের শরীর কে ফিট রাখার জন্যে।
শরীর সুস্থ রাখতে পাতে রাখুন এই অ্যালকালাইন খাবার,
ক্ষারীয় খাবার অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তি দেয় এবং শরীরে অ্যাসিডের মাত্রার ভারসাম্য রাখতে সহায়তা করে। একইসঙ্গে এই খাবারগুলো পেট ঠান্ডা রাখে। হজমের সময় পাকস্থলী থেকে প্রচুর গ্যাস্ট্রিক অ্যাসিড নিঃসৃত হয়। তাই ক্ষারযুক্ত খাবার পরিপাকতন্ত্রকে শিথিল করে।
এখানে কয়েকটি ক্ষারীয় খাবারের তালিকা দেওয়া হল, যেগুলো প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখতেই হবে –
মিষ্টি আলু বা রাঙালু: মিষ্টি আলু ক্ষারের সমৃদ্ধ উৎস। এগুলো প্রকৃতিতে হালকা অ্যাসিডিক এবং অত্যন্ত ক্ষারীয়। তাই প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে। শুধু তাই নয়, এটা এটি দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ নিরাময়েও সাহায্য করে।যে কোনও আলুই পুষ্টিতে সমৃদ্ধ। তবে মিষ্টি আলু খুবই স্বাস্থ্যকর। তবে মিষ্টি আলুতে ক্যালোরি ও কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ অনেকটাই কম। এছাড়াও মিষ্টি আলুতে উচ্চ মাত্রায় ‘ভিটামিন এ’ থাকে। ‘ভিটামিন এ’ আদতে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, যা ইমিউনিটি বৃদ্ধি করে এবং সুস্থ ত্বক ও দৃষ্টি বজায় রাখতে সাহায্য করে।
মিষ্টি আলুতে প্রচুর ভিটামিন সি ও ভিটামিন বি৬ থাকে, যা মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এটি পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামেরও ভালো উৎস, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রেখে হার্টের কাজ বজায় রাখতে সাহায্য করে।
নিজেকে চাঙ্গা রাখতে খাদ্য তালিকায় রাখুন এই খাবার
মিষ্টি আলু কীভাবে খাবেন?
কেনার সময় গাঢ় রঙের মিষ্টি আলু কিনুন। কিছু মিষ্টি আলুর রঙ (এটি কমলা, হলুদ অথবা পার্পল যে রঙেরই হোক না কেন) যত বেশি গাঢ় হবে, পুষ্টিগুণ তত বেশি হবে। খোসা ছাড়িয়ে মিষ্টি আলু খাবেন না। ভালো করে ধুয়ে নিয়ে খোসা-সহ সেদ্ধ করে খান। মিষ্টি আলু, সয়ামিল্ক আর দারচিনি গুঁড়ো দিয়ে স্যুপ বানিয়ে খান।
সামুদ্রিক নুন: সামুদ্রিক লবণ আয়রন, পটাসিয়াম, আয়োডিন এবং ম্যাগনেসিয়ামের মতো খনিজ পদার্থে সমৃদ্ধ। এর ক্ষারীয় বৈশিষ্ট্য ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ এবং ভাইরাল রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। এটা স্যালাডের সঙ্গে খাওয়া যায়।
মাশরুম: এই ছত্রাক প্রকৃতিতে অত্যন্ত ক্ষারীয়। ঘন ঘন অ্যাসিড বাউট এবং অ্যাসিডিক রিফ্লাক্সে ভুগছেন এমন লোকদের খাদ্যতালিকায় মাশরুম অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেওয়া হয়।মাশরুম ভিটামিন বি, ডি, পটাশিয়াম, কপার, আয়রন এবং সেলেনিয়াম সমৃদ্ধ। এছাড়া মাশরুমে কোলিন নামক একটি বিশেষ পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায়, যা পেশীর সক্রিয়তা ও স্মৃতিশক্তি বজায় রাখতে খুবই উপকারী।
মাশরুমে উপস্থিত উপাদান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এ কারণে সর্দি-কাশির মতো রোগ দ্রুত হয় না। মাশরুমে উপস্থিত সেলেনিয়াম ইমিউন সিস্টেমের প্রতিক্রিয়া উন্নত করে। করোনার বিপদের পরিপ্রেক্ষিতে আবারও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্ত রাখতে হবে। মাশরুমে পাওয়া অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইটোকেমিক্যালস এটিকে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল করে, যা মৌসুমী সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে এবং অনাক্রম্যতা শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।এছাড়াও মাশরুম ভিটামিন ডি এর একটি খুব ভাল উৎস। এই ভিটামিন হাড়ের মজবুতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত মাশরুম খেলে আমরা ভিটামিন ডি এর চাহিদার ২০ শতাংশ পাই।
বাদামি চাল: বাদামি চালের আঁশযুক্ত উপাদান বুকজ্বালা কমাতে সাহায্য করে। সাদা চালের তুলনায় ব্রাউন রাইস কম অ্যাসিডিক এবং একইভাবে অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তি দেয়। এর ক্ষারীয় প্রকৃতি ছাড়াও, বাদামি চাল নিজেই স্বাস্থ্যকর।
ফুলকপি: ফুলকপি মূলত ক্ষারীয় প্রকৃতির খাবার। এটা শরীরের ক্ষারীয় পিএইচের ভারসাম্য রক্ষা করে। শুধু তাই নয়, ফুলকপির উচ্চ ক্ষারীয় বৈশিষ্ট ক্যানসারের ঝুঁকিও কমায়।কোলস্টেরল কমায়: এতে প্রচুর ফাইবার আছে, যা শরীরে কোলস্টেরলের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
ওজন কমাতে: ফুলকপি মস্তিষ্ক ভালো রাখে, ওজন কমায় এবং সর্দি-কাশিসহ নানা রোগ প্রতিরোধ করে।
হাড় ও দাঁত শক্ত করে: ফুলকপিতে রয়েছে দাঁত ও মাড়ির উপকারী ক্যালসিয়াম ও ফ্লোরাইড। এর ক্যালসিয়াম হাড় শক্ত করে।
ক্যানসার প্রতিরোধ করে: মারাত্মক ক্যানসার প্রতিরোধ করতে পারে ফুলকপি। এতে আছে সালফোরাপেন, যা ক্যানসার কোষকে মেরে টিউমার বাড়তে দেয় না।
হৃদ্যন্ত্রের জন্য উপকারী: ফুলকপি হৃদ্যন্ত্রের জন্য ভালো। এতে যে সালফোরাপেন আছে, তা হৃদ্রোগের বিরুদ্ধে লড়তে পারে।
রোগ প্রতিরোধ করে: ফুলকপিতে আছে ভিটামিন ‘বি’, ‘সি’ ও ‘কে’, যা এ সময়ের সর্দি, ঠান্ডা, কাশি জ্বর ভাব, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, গা-ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে।
শক্তি জোগায়: এই সবজিতে আছে প্রচুর আয়রন। রক্ত তৈরিতে আয়রন রাখে গুরুত্বপূর্ণ অবদান। গর্ভবতী মা ও অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম করা মানুষের জন্য ফুলকপি অত্যন্ত জরুরি।
চুল ও ত্বকের জন্য উপকারী: কম ক্যালরিযুক্ত ও উচ্চমাত্রার আঁশসমৃদ্ধ ফুলকপি চুল ভালো রাখে। ত্বকের সংক্রমণও প্রতিরোধ করে।
পরিপাকতন্ত্র ভালো রাখে: ফুলকপি পরিপাকতন্ত্রকে ভালো রাখতে সাহায্য করে।
Tags – Health Tips Health Care Diet Routine